-67be3bd99c9ce.jpg)
দুদকের কর্মপদ্ধতি বদলাতে হবে
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষবর্ষে ‘দুর্নীতি, ক্ষমতা, রাজনীতি’ কোর্সটি বহু বছর ধরে পড়ানোর অভিজ্ঞতায় দুদককে (দুর্নীতি দমন কমিশন) আমরা ‘কাগুজে বাঘ’ বলতেই পছন্দ করেছি। কখনো বলেছি ‘মিথ্যাবাদী রাখালের বাঘ’, যে বাঘ আসছে বলা হলেও আসে না, এলেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ভয় দেখিয়ে কাবু করতে আসে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে নৈর্ব্যক্তিক প্রতিষ্ঠান হওয়ার বদলে দুদক হয়েছিল ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক শক্তির ইচ্ছার তাঁবেদার। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের পরিবর্তমান পরিস্থিতিতে, দুদক দুর্নীতির বিরুদ্ধে লাল কার্ড হাতে সক্রিয়।
ওয়াকিবহাল মহলের তথ্যমতে, অতীতে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করাই ছিল অসম্ভব, তেমন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা ও প্রশাসকের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের ধরে আনা হচ্ছে। এমনকি, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কতিপয় শিক্ষককেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হচ্ছে। এতে দুদক নিয়ে অবশ্যই কিছু আশার সঞ্চার হয়েছে। যেমন: ঘুস, দুর্নীতি, তছরুপ করে রেহাই পাওয়ার দিন শেষ। রাজনৈতিক ধামা ধরে বা ক্ষমতার ভয় দেখিয়ে অপকর্ম আড়াল করার সুযোগও আর নেই। দুদকের বস্তুনিষ্ঠ সক্রিয়তার ফলে, সরকার বদল হলে যারা বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে অতীতকে দোষারোপ করে গোপনে দুর্নীতির সাম্রাজ্য তৈরি করতেন, তারাও সতর্ক হবেন। দুদকের তরফে সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত ও অনুসন্ধান চলমান থাকলে, নতুন দুর্নীতিবাজদের পক্ষে অতি দ্রুত মাথা তুলে দাঁড়ানোও সহজ হবে না।
- ট্যাগ:
- মতামত
- দুদক
- কর্মপদ্ধতি