
স্থানীয় সরকার না থাকলে খাদ্যঘাটতি কেন বাড়বে
কোনো এক দেশে নাকি জীবনঘাতী যুদ্ধ হয়েছিল আন্ডা ফাটানো নিয়ে। আন্ডা বা ডিমের চিকন দিক থেকে সেটা ভাঙা হবে, না মোটা দিক থেকে ফাটানো হবে, সেটাই ছিল দ্বন্দ্বের বিষয়। দেশে এখন বিতর্কের বিষয় বড় নির্বাচন, মানে সংসদ নির্বাচন আগে, না ছোট নির্বাচন; অর্থাৎ স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে।
একাত্তরের পর এযাবৎ রাজনৈতিক সরকারগুলো চেয়ে এসেছে, আগে আমাদেরটা হোক, তারপর হবে ‘ছোটদের’টা। দেশের প্রথম স্বাধীন সরকার চুয়াত্তরের আগে নির্বাচিত স্থানীয় সরকার দিতে পারেনি অথবা চায়নি, যদিও ১৯৬৯ সাল থেকে এ দেশে কার্যত কোনো স্থানীয় সরকার ছিল না। ক্ষমতায় এসে জেনারেল জিয়াউর রহমান অবশ্য আগে স্থানীয় নির্বাচন দেন। পরের জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও সাধারণ নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। হতে পারে তাঁরা দুজনেই নতুন পার্টি গোছানোর জন্য সময় নিতেই এই কৌশল নিয়েছিলেন।
কেউ মনে করতে পারেন, রাজনীতিকে ‘ডিফিকাল্ট’ করার দর্শনে বিশ্বাসী জিয়ার এটা একটা সূক্ষ্ম রাজনৈতিক প্রজ্ঞার ‘এক্সপেরিমেন্ট’ ছিল। তিনি জনগণের ইচ্ছাটা বুঝতে পেরেছিলেন। আগ্রহী পাঠকদের মনে থাকবে, স্বাধীন বাংলাদেশে জিয়ার আগে অন্য কেউ তাঁর মতো মাইলের পর মাইল হেঁটে গ্রামগঞ্জে ছুটে বেড়াননি। গাড়িতে অভ্যস্ত আমলারা হাঁপিয়ে উঠতেন। সেই সময় তিনি বলার চেয়ে শুনতেন বেশি।
জেনারেল জিয়াউর রহমানের সঙ্গে থাকা তখনকার বাসসে (বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা) কর্মরত সাংবাদিকদের একজন একবার জিয়ার সঙ্গে লম্বা সফর থেকে ঘুরে এসে মন্তব্য করেছিলেন, ‘উনি দেখি একদম কথা বলেন না, শুধুই শোনেন! “সমস্যা কী? আর আপনারা কী চান?” এর বাইরে তেমন কিছুই বলেন না।’
জিয়ার সঙ্গে হাঁটা সংবাদিকেরা আশ্চর্য হয়ে প্রত্যক্ষ করেছিলেন, গ্রামের মানুষ বলছেন স্থানীয় সরকারের কথা। দেশে তখন কোনো কার্যকর স্থানীয় সরকার ছিল না। সারা দেশে একটা ভজকট অবস্থা।
- ট্যাগ:
- মতামত
- স্থানীয় সরকার
- খাদ্য ঘাটতি