দেশের বর্তমান অবস্থায় পূর্ণাঙ্গ একটি মন্ত্রিসভার জাতীয় সরকার দ্বারা শক্তভাবে দেশ পরিচালনা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ দেশের অভ্যন্তরে যেভাবে দাবি-দাওয়া আদায়ের নামে দিনের পর দিন রাজপথ অবরোধ করা হচ্ছে, সেসব ঘটনা নিছক দাবি-দাওয়া আদায়ের ঘটনা না-ও হতে পারে; ক্ষেত্রবিশেষে সেসবের কোনো কোনোটি সরকারকে অস্থিতিশীল করে তোলার ঘটনাও হতে পারে।
আবার দেশের বাইরেও এমন কিছু ঘটনা ঘটে চলেছে, দেশের বিরুদ্ধে স্পষ্টত যা একেকটি ষড়যন্ত্র। এ অবস্থায় অত্যন্ত দক্ষ এবং শক্তিশালী একটি কূটনৈতিক কার্যক্রম গ্রহণ করাও জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ এতদিন ধরে ভারতীয় মিডিয়া দিনরাত গালগল্প প্রচার করার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার তথা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে বিষোদগার অব্যাহত রেখে তেমন কোনো সুবিধা করতে না পারায় বহির্বিশ্বে এখন তারা ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে।
যেমন অতি সম্প্রতি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠককালীন ভারতীয় একজন সাংবাদিক অপ্রাসঙ্গিক এবং উসকানিমূলক একটি প্রশ্ন তুলে ট্রাম্পকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিলেন, যে প্রশ্নটি সারা বিশ্বে ভাইরাল হয়ে এখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। অথচ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের বিষয়ে এমন একটি আপত্তিজনক প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়ার যুক্তিসংগত কোনো কারণ ছিল না।
যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প সেদিন অত্যন্ত কৌশলে প্রশ্নটি এড়িয়ে গিয়ে সাংবাদিকের সেই প্রশ্নের কোনো জবাব না দিয়ে যা বলেছিলেন, সে ঘটনাটিও প্রশ্নকর্তার জন্য লজ্জাজনক বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তিনি পড়াশোনা করে যা বুঝেছেন, তাতে এ প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রীই ভালো বলতে পারবেন বিধায় তার ওপরই বিষয়টি ছেড়ে দিলাম; কারণ শত বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে কাজ করে চলেছেন।’
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের সেই বক্তব্যের পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি আঁচ করতে পেরে জবাবে তিনি কোনো কিছু না বলে প্রসঙ্গ পালটিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেছিলেন। কারণ মোদির মতো বিচক্ষণ ব্যক্তি, যিনি ভারতীয় কংগ্রেসের মতো একটি রাজনৈতিক দলকে পরাজিত করে বারবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথার খোঁচাটি ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন। আর ‘এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শত বছর ধরে কাজ করে চলেছেন’ কথাটি বলার মর্মার্থ সেদিনের প্রশ্নকারী ভারতীয় সাংবাদিক না বুঝলেও সারা বিশ্বের বুদ্ধিমান মানুষ কিন্তু ট্রাম্পের মেসেজটি বুঝতে পেরেছেন। কারণ মাথায় একটু মগজ থাকলেই মেসেজটি সবারই বুঝতে পারার কথা।
তারপরও যদি ওই শ্রেণির সাংবাদিকরা তা বুঝতে না পারেন, তাহলে সহজভাবে তারা বুঝে নিন, ট্রাম্প সেদিন, প্রশ্নটির গুরুত্ব না দিয়ে বরং বিরক্তির সুরে বলেছিলেন, ‘সারাজীবন পড়াশোনা করে তিনি বুঝতে পেরেছেন, শত বছর ধরে ভারত কাশ্মীরসহ পাকিস্তানের সঙ্গে যেমন সমস্যা তৈরি করে রেখেছে, বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গেও তারা সমস্যা সৃষ্টি করে চলেছে।’