You have reached your daily news limit

Please log in to continue


সুনাগরিক, ভারসাম্যপূর্ণ শিক্ষা ও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়

লিবারেল আর্টস একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা পদ্ধতি। যুক্তরাষ্ট্রের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কলেজগুলোতে স্নাতক স্তরে প্রধানত এই পদ্ধতি অনুসরণ করে। তবে এগুলোতে বিজ্ঞান, প্রকৌশল, চিকিৎসা ইত্যাদির পাঠ্যক্রমও পড়ানো হয়। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী শুরুতে কোনো বিশেষায়িত বিষয় পড়েন না। বরং তিনি সাধারণ শিক্ষার (জিইডি) বিষয়গুলো পড়েন, যা পাঠ্যক্রমের প্রায় এক-তৃতীয়াংশজুড়ে থাকে এবং ভবিষ্যৎ স্নাতককে একটি পরিশীলিত ভিত্তি তৈরি করে দেয়। যেমন তিনি পরিবেশ–সম্পর্কিত গুচ্ছ থেকে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, ইকোলজি ও মানব বসতি, ভূগোল ও প্রাকৃতিক সম্পদ—এর একটি বিষয় বেছে নিতে পারেন। আবার সমাজবিজ্ঞানের গুচ্ছ থেকে আরেকটি বিষয় যেমন আমেরিকান স্টাডিজ বা সমাজ ও সংস্কৃতি বাছতে পারেন। পরবর্তীকালে তিনি মূল বিষয়গুলো অধ্যয়ন করবেন এবং শেষ পর্যায়ে নেবেন কিছু নির্বাচিত নিজ পছন্দের বিষয়।

এ পদ্ধতি একই সঙ্গে বহু উদ্দেশ্য পূর্ণ করে। প্রথমত, যে ব্যক্তি ইতিহাস বা অর্থনীতি পড়তে চান, তিনি গণিত বা আবহাওয়া সম্পর্কেও কিছু জানার সুযোগ পান; যে ব্যক্তি নিউক্লিয়ার ফিজিকস পড়তে চান, তিনি সংস্কৃতি বা পরিবেশ সম্পর্কেও সচেতনতা অর্জন করেন। তাই একজন প্রকৌশল শিক্ষার্থী মানবিকতা সম্পর্কেও কিছু জানতে পারেন প্রকৌশলের যেকোনো বিষয় পড়ার আগে। যে ব্যক্তি হিসাববিদ্যা পড়তে চান, তিনি নৈতিকতা বা নাটক সম্পর্কেও শিখতে পারেন! এর ফলে শিক্ষার্থী বুঝতে পারেন যে জ্ঞান নির্বাচনী হতে পারে না, প্রতিটি ক্ষেত্রই গুরুত্বপূর্ণ এবং পরস্পরের রূপ ও ভূমিকার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সহাবস্থান বাঞ্ছনীয়। জিইডি বিষয়গুলো পড়াকালে শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার লোকালয় সম্পর্কে পরিচিত হন, উচ্চশিক্ষা, চাকরির সুযোগ ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা পান, তার প্রেক্ষাপট, আগ্রহ, প্রেরণা, ক্ষমতা ও ইচ্ছার ভিত্তিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন এবং প্রয়োজনে বিষয় বদলিয়ে আরও উপযুক্ত কিছুতে চলে যেতে পারেন।

এমন একটি পদ্ধতি যেহেতু ‘উন্মুক্ত’ সেহেতু ‘লিবারেল’ এবং যখন একজন শিক্ষার্থী নিয়মকানুনের ভেতর তাঁর শিক্ষার সূচি নিজেই তৈরি করেন, তখন এটি হয়ে যায় ‘আর্টস’। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জিইডি একটি আন্তবিভাগীয় সনদ দিতে পারে, যাতে শিক্ষার্থী তাঁর পারিপার্শ্বিক সমস্যাগুলোর ব্যাপারে একটি বিষদ ধারণা পান। যে সনদই তিনি নিন না কেন, তিনি বহুব্যাপী দক্ষতাসম্পন্ন সুশিক্ষিত মানুষের গুণাবলি অর্জন করেন। জিইডি তাঁকে একটি দায়িত্বশীল ও আত্মনির্ভরশীল নাগরিক করে গড়ে তোলে, যে সমাজ, সরকার, বিজ্ঞান, গণিত ও পরিবেশকে বোঝে। এটি তাঁর বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাভাবনা, সমস্যা সমাধান, যোগাযোগ ও সহযোগিতামূলক দক্ষতাকে উন্নত করে। তিনি একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হয়েও হতে পারেন শিল্প রসিক বা একজন চিকিৎসক হয়েও হতে পারেন সামাজিক দায়িত্বসম্পন্ন।

বাংলাদেশের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু স্নাতক শ্রেণির শিক্ষা দেয়। গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান অনুসন্ধান স্নাতকোত্তর পড়াশোনার অংশ হয়। আমরা ভুলভাবে ধরে নিই যে শিক্ষার কাজ কেবল একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন মানবশক্তি তৈরি করা, তার বদলে একজন ভালো নাগরিক তৈরি করার ওপর মনোযোগ দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের একটি উপজীবিকা শিখায়, যা চরিত্র গঠন ও চাকরির জন্য ‘স্নাতকতার গুণাবলি’-এর দিকগুলো উপেক্ষা করে, যা ‘মানব পুঁজি’ তৈরিতে সাহায্য করতে পারত। আমি অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি, তারা এমন স্নাতকদের পছন্দ করেন, যাঁদের স্বভাবে নৈতিকতা, ইতিবাচক মনোভাব, যোগাযোগ, বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা রয়েছে। একটি ‘লিবারেল আর্টস শিক্ষা পদ্ধতি’ স্নাতকদেরকে এমন কর্মসংস্থানযোগ্য করে তুলতে পারে। তারা বিভিন্ন উপায়ে এসব গুণাবলি আয়ত্ত করবে: জিইডি কোর্সের মাধ্যমে, পাঠ্যক্রম অতিরিক্ত কার্যকলাপে এবং দলবদ্ধ কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে।

মধ্যযুগে মঠ ও গিল্ডগুলো বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছিল, যাতে শল্যচিকিৎসক, পুরোহিত, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইত্যাদি তৈরি করা যায়, যাঁদের অনেকেই কর্মশালায় পেশাদারদের অধীন প্রশিক্ষণও নিতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্নাতক’ তৈরি করার ধারণাটি পরে রেনেসাঁ-উত্তর সময়ে এসেছে, যেখানে শিল্প ও নান্দনিকতার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে আর বিজ্ঞান, যুক্তি ও আধুনিকতার ধারণাও আসছে। ফলে একজন রেনেসাঁ–উত্তর ব্যক্তি শিল্প, সংস্কৃতি ও রাজনীতি সম্পর্কে জানতেন এবং অন্যদের সঙ্গে ভাবের আদান–প্রদান ও সহযোগিতা করতে পারতেন। একইভাবে একজন স্নাতক, যিনি একটি ‘স্তর’ অতিক্রম করা পূর্ণাঙ্গ এবং আধুনিক ব্যক্তি, তিনি যুক্তিবাদিতা, নৈতিকতা, দেশপ্রেম, শৃঙ্খলা, সময়ানুবর্তিতা, পেশাদারত্ব ইত্যাদি গুণাবলিসম্পন্ন ও জ্ঞানার্জনে আগ্রহী। তিনি একটি সমস্যা সমাধানকারী, উদ্যোক্তা, উদ্ভাবক ও নেতা হবেন, শুধু একজন পূর্ব-নির্দিষ্ট পেশা অনুশীলনকারী নন। একজন স্নাতক জীবনব্যাপী দীর্ঘস্থায়ী দক্ষতা হিসেবে তাঁর আচরণগত বৈশিষ্ট্যগুলো যেকোনো পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করবেন। যেমন তিনি তাঁর নৈতিকতা বা যোগাযোগ দক্ষতা যেকোনো পেশা বা চাকরিতে ব্যবহার করতে পারেন। একজন শৃঙ্খলাপূর্ণ এবং সময়ানুবর্তী গ্র্যাজুয়েট সব সময় পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবনে সমন্বিত ও যুক্তিসংগতভাবে আচরণ করবেন। এর মানে হলো, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ভালো নাগরিক ও উদ্যমী যুবক তৈরি করবে এসব গুণাবলি উদ্রেককারী শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে।

বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করেন যে কেবল দুর্বল ছাত্ররা ‘মানবিক’ বিষয় পড়েন এবং তাঁরা আশা করেন যে ভালো ছাত্ররা প্রকৌশল বা চিকিৎসাবিদ্যায় পড়বেন, যা ভর্তি প্রার্থীদের ঈপ্সিত বিষয় বাছাইয়েও দেখা যায়। তাঁরা শুরু থেকেই পাঠ্যবই পড়েন, কিন্তু সমাজ ও দেশের বাস্তবতা, তাদের দায়িত্ব বা সমাজের প্রত্যাশাগুলো সম্পর্কে অবহিত হন না। এতে আন্তবিভাগীয় বিষয়ে জ্ঞান, অন্যান্য বিভাগের ছাত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক ও সমঝোতা, অন্য পেশার প্রতি সম্মান এবং একসঙ্গে কাজ করার মনোভাব তৈরি হয় না। এই স্নাতকেরা কেবল একজন কর্মচারী হিসেবে কাজ করতে পারেন, তাঁরা তাঁদের নিজের প্রতিভা কাজে লাগাতে পারেন না। এমন কেরানিকূল তৈরি করা তো ছিল ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার লক্ষ্য। তবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী, একজন স্নাতককে ন্যূনতম তত্ত্বাবধানে কাজ করতে পারতে হবে। তবুও আমাদের বেশির ভাগ স্নাতক স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না বা নিজস্ব চিন্তার প্রকাশ করতে পারেন না। আমি অনেক স্নাতকদের চাকরির সাক্ষাৎ নেই। দুঃখজনকভাবে আমি এমন কাউকে কদাচিৎ পাই, যাঁরা তত্ত্ব ও বাস্তবতার মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন বা বিন্দুগুলো সংযোগ করতে পারেন!

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন