![](https://media.priyo.com/img/500x/https://media.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2025-02-12%2F741ithlr%2F12022025-cm-5.jpg?rect=135%2C0%2C900%2C600&w=622&auto=format%2Ccompress&fmt=avif)
বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ভারতনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসা কেন জরুরি
ভারতের নয়াদিল্লিতে ১১-১৪ ফেব্রুয়ারি এনার্জি উইক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বেশ কয়েক দিন আগেই সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল, বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এই সম্মেলনে অংশ নেবেন। এ সময়ে সম্মেলনে তাঁর অংশগ্রহণ অনেক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে এখন নানাভাবে টানাপোড়েন চলছে।
গত এক দশকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বাংলাদেশের ভারতনির্ভরতা অনেক বেড়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতার ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ ভারতনির্ভর। ভারত থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে বিদ্যুৎ ও ডিজেল।
এ ছাড়া রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ও রিলায়েন্স এলএনজিভিত্তিক মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্রে রয়েছে ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসি ও রিলায়েন্সের বিনিয়োগ। ভারতীয় কোম্পানি ওএনজিসি অগভীর সমুদ্র ব্লকে ১০ বছর ধরে কাজ করছে। নিউক্লিয়ার প্রকল্পেও ভারত যুক্ত রয়েছে।
শেখ হাসিনার দীর্ঘ স্বৈরাচারী সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যে ভারতনির্ভরতা তৈরি হয়েছে, সেটা বাংলাদেশের জন্য কতটা জনস্বার্থবিরোধী, তা নিয়ে অনেক পর্যালোচনা হয়েছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা নিয়ে নীতিগত পর্যায়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। ভারতনির্ভর এই প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা করে সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া এখন জরুরি।
আদানির সঙ্গে জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি
আদানির ঝাড়খন্ড বিদ্যুৎকেন্দ্র (১৬০০ মেগাওয়াট) থেকে বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে বিতর্ক ছিল শুরু থেকেই। ক্রমবর্ধমান ক্যাপাসিটি চার্জ দেশের জন্য আর্থিক বোঝায় পরিণত হওয়ায় হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই নতুন করে আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের দাবি উঠেছে।
ঝাড়খন্ডের গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সক্ষমতার ৬২ শতাংশ ব্যবহার করা হয়েছে গত অর্থবছর। ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হয়েছে ৫ হাজার ৮২৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা, যা মোট ক্যাপাসিটি চার্জের ২০ দশমিক ৩০ শতাংশ।
২০২২-২৩ অর্থবছরে আদানি প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ধরেছিল ১৪ টাকা শূন্য ২ পয়সা, যেখানে দেশে বিদ্যুতের গড় দাম ৮ টাকা ৭৭ পয়সা। নানা প্রশ্ন-বিতর্কের পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আদানি পাওয়ার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ধরেছে ১২ টাকা।
আদানি গ্রুপের কাছ থেকে ক্রয়কৃত বিদ্যুৎ আবার বাংলাদেশে ৮ দশমিক ৯৫ টাকায় বিক্রি করে পিডিবি। প্রতিবছর ভর্তুকি বাবদ বাংলাদেশের সরকারকে ব্যয় করতে হয় ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
আদানির সঙ্গে চুক্তির শর্তগুলো বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থবিরোধী। দাম বাংলাদেশের অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের চেয়ে বেশি। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতার ৩৪ শতাংশের চেয়ে কম বিদ্যুৎ কিনলে পিডিবিকে নির্দিষ্ট অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে। বার্ষিক ঘোষিত চাহিদার যত কম বিদ্যুৎ কিনবে, ততটুকু বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কয়লার দাম, জাহাজভাড়া, বন্দরের খরচও দিতে হবে পিডিবিকে।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বিদ্যুৎ-জ্বালানী
- নির্ভরতা
- আদানি গ্রুপ