![](https://media.priyo.com/img/500x/https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2025/02/08/image-631285-1672760944-67a6700f18b3c.jpg)
ট্রাম্পের আগমনে আমেরিকানরাই বিপদে
যদি সম্ভব হতো, তাহলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একদিনেই আমেরিকা থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করতেন নাগরিক-অনাগরিক নির্বিশেষে সব অশ্বেতাঙ্গকে। কিন্তু আদালত তার লম্বা হাতে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রের অতি ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্টকেও আটকে ফেলেন। প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেও আদালত তার অনেক নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়ন আটকে দিয়েছিলেন। এবারও শপথ গ্রহণের পরই তার জারি করা অনেক আদেশের মধ্যে ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ খর্ব করার আদেশ বাস্তবায়নের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আদালত প্রেসিডেন্টের এখতিয়ারের দম্ভের জবাব দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতার ভারসাম্যের এটাই সৌন্দর্য, যে কারণে দেশটি অনেক বড় সমস্যা নিয়ে এবং বলতে গেলে সমগ্র বিশ্বকে খেপিয়েও ভালোভাবে টিকে থাকে।
মাত্র উনিশ দিন হলো (৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। উনিশ দিনেই আমেরিকানরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এবং সামনের দিনগুলোতে কী ঘটবে, তা ধারণা করে ভীতির রাজ্যে বাস করছে। নির্বাচনি প্রচারাভিযানে ট্রাম্পের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর বিদ্যমান শুল্কের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্কারোপ করার। এ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত শুধু বাণিজ্যিক কারণে নয়, দেশ তিনটি থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণও ট্রাম্পের একটি লক্ষ্য। তিন দেশের মধ্যে মেক্সিকো ও কানাডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ স্থলসীমান্ত রয়েছে এবং সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিবছর অসংখ্য বিদেশি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে। চীনের ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশের চিত্র একটু ভিন্নতর। ২০২৩ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা ইমিগ্রান্ট সংখ্যা বিপুল। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মোট ৪ কোটি ৭৮ লাখ ইমিগ্রান্ট জনসংখ্যার মধ্যে ২৪ লাখ, অর্থাৎ মোট ইমিগ্রান্ট সংখ্যার ৫ শতাংশ চীনা বংশোদ্ভূত। তারা যে শুধু অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে, তা নয়। ভ্রমণভিসা অথবা অন্যান্য ভিসায় অসংখ্য গর্ভবতী চীনা নারী যুক্তরাষ্ট্রে এসে তাদের সন্তান প্রসবের পর চীনে ফিরে যায়। অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে চীনাদের মধ্যে এ প্রবণতা সর্বাধিক। যুক্তরাষ্ট্রে ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ নিয়ে চীনে ফিরে যাওয়া সেই সন্তানগুলো ১৮ বছর বয়সে উন্নীত হলেই তাদের বাবা-মাসহ অনায়াসে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ লাভ করে। ট্রাম্প তথা তার দল রিপাবলিকান পার্টির এতে প্রচণ্ড আপত্তি; যা তারা নিয়ন্ত্রণ করতে চায় ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার’ বাতিল করার মধ্য দিয়ে।