You have reached your daily news limit

Please log in to continue


সনদপত্রের ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’ এবং সাত কলেজের আন্দোলন

শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো সব দেশেই এটি পিছিয়ে পড়া মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের এক উপায়। সমাজে এক স্তর থেকে ওপরের স্তরে উঠতে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। আর ওই কারণে বৈষম্য হ্রাস করতে শিক্ষার চেয়ে বেশি সহায়ক কিছু নেই। এটি হলো সামাজিক বৈষম্য নিরসনে শিক্ষার উল্লেখযোগ্য প্রায়োগিক দিক। পিছিয়ে পড়া দেশগুলোয় এই দিকটির প্রতিই মানুষের আকর্ষণ বেশি। সেটা প্রয়োজনও। তাই ব্যাপক সংখ্যক মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দিকে ঝোঁকে ও পরস্পরের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। এই প্রতিযোগিতাটি শেষ পর্যন্ত সনদপত্র সংগ্রহের যুদ্ধে পরিণত হয়, অন্তত আমাদের দেশে তাই হয়েছে। ওই যুদ্ধে শিক্ষার দশা বেহাল হতে থাকে। আর শিক্ষা যতই বেহাল হতে থাকে, সনদপত্র তত বেশি বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে থাকে।

একইসঙ্গে সনদপত্রের মর্যাদা নির্ধারণ হয় শিক্ষার্থী কেবল কী শিখল তা দিয়ে নয়, কোথা থেকে অর্থাৎ কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সনদপত্র সংগ্রহ হলো তাই দিয়ে। সেজন্য তথাকথিত ভালো স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য দেশজুড়ে প্রাণপণ যুদ্ধ চলে। সেখানে পড়ালেখা তুলনামূলকভাবে যে ভালো হয় না, তা বলা যাবে না, তবে তাদের প্রদত্ত সনদপত্রের দাম তারচেয়েও অনেক গুণ বেশি। একই বিষয়ে একই শিক্ষা প্রদত্ত হলেও প্রতিষ্ঠানভেদে সনদপত্রের দামে আকাশ-পাতালের ব্যবধান থাকে। বাণিজ্যিক ভাষায় একে বলে ‘ব্র্যান্ড ভ্যালু’। যা কাজে লাগিয়ে প্রতিবছর ভর্তিযুদ্ধের ফরম বিক্রিসহ নানা উপায়ে মোটা অংকের আয় বাগিয়ে নেয় এই ব্র্যান্ড ভ্যালুওয়ালারা। এই ভ্যালু সার্বিক শিক্ষায় এক বিরাট বৈষম্য সৃষ্টি করে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এরকম অজস্র বৈষম্যের সংকটে জর্জরিত। আর এর প্রধান শিকার হয় নিরীহ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরাই তাই প্রথম ফুঁসে ওঠে এসব অনাকাঙ্ক্ষিত বৈষম্যের বিরুদ্ধে। মানসম্মত শিক্ষার জন্য, পড়ালেখার মানোন্নয়নের জন্য ও অধুনিক জীবনোপযোগী শিক্ষার জন্য তারা যত না গলদঘর্ম হয়, তারচেয়ে বেশি তাদের প্রাণক্ষয় করতে হয় শিক্ষাব্যবস্থায় ও জাতীয় পর্যায়ে বিদ্যমান সব বৈষম্য দূর করার সংগ্রামে। তাদেরকেই জীবন দিয়ে একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটাতে হলো। কিন্তু তারপরও বিশ্রাম নেই, নতুন নতুন বাস্তব ও কৃত্রিম সংকটের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই রাস্তায় নামতে হচ্ছে তাদের। এমনই এক সংকট নিরসনের জন্য প্রাণপণ লড়াই করতে হচ্ছে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের।

সুস্থ ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ জীবনের আশায় এখন দেশজুড়ে ব্যাপকসংখ্যক মানুষ শিক্ষালাভের চেষ্টা করছে। বাহবা কুড়াবার জন্য বিগত বিভিন্ন সরকারও তাদেরকে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকে, সেখান থেকে কলেজে ও তা থেকে উচ্চশিক্ষায় যাবার এলিভেটরে তুলে দেয়। পাশের দ্রুতগতি চলন্তসিঁড়ির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশজুড়ে গড়ে উঠতে থাকে উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজ এবং বেসরকারি ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় নিজের শিক্ষার্থীর সনদপত্র নিজে দিয়ে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্রের ব্র্যান্ড ভ্যালু বেশি, তাই বিত্তশালীরা নিজেদের সন্তানকে সরকারি পর্যায়ের ভালো কোথাও সুযোগ না পেলে অনেক টাকা ব্যয়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে, চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে, প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় ইত্যাদিতে পড়াচ্ছে। যারা আরও বিত্তশালী তারা নিজেরাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বানিয়ে নিচ্ছে বাণিজ্যিক বিনিয়োগ হিসেবে। বাকি যাদের অর্থে কুলায় না বা শত চেষ্টায়ও যাদের জন্য স্থান সংকুলান হয় না তাদেরকে ভালোমন্দ যে কোনো একটা কলেজে পড়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে হচ্ছে। একই বই পড়ে একই শিক্ষা গ্রহণ করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও কলেজের শিক্ষার্থীর মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে তাদের প্রাপ্ত সনদপত্র।

১৯৯২ সালে তৎকালীন সরকার কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি নতুন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন থেকে সব কলেজকে এর অন্তর্ভুক্ত করল। সংকট না কমে আরও বাড়ল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমতুল্য তো হতেই পারল না বরং সেশনজট, শিক্ষার মান, পরীক্ষা সবকিছুতেই অবনতি দেখা দিল। সনদপত্রের বৈষম্য যা ছিল তাই থাকল। ২০১৭ সালে আবার ভালো কিছু কলেজকে আগের মতই স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধিভুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হলো। যার প্রথম ধাপে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হলো ঢাকা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ ও বাঙলা কলেজ। ফল হলো আরও লেজেগোবরে, শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ বাড়তেই থাকল প্রতিবছর। অসন্তোষের উৎস বৈষম্য।

অধিভুক্ত ওই ৭টি কলেজের কয়েকটি শিক্ষামানের দিক থেকে যথেষ্ট উন্নত, কিন্তু সেখানকার শিক্ষার্থীরা স্বীকৃতিটা কমই পায়। তাছাড়া শিক্ষাজীবনে প্রতিটি প্রশাসনিক ব্যাপার মীমাংসার জন্য ঢাকা শহরের দূরদূরান্ত থেকে তাদেরকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধরনা দিতে হয়। সেখানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষার্থীর মতো আপনতা অনুভব করে না। তাদের কলেজের শিক্ষক ও অধ্যক্ষগণও পান না সেই আপনতা। থেকে যায় একটা অনতিক্রম্য দূরত্ব— ‘আমরা’ ও ‘তারা’র বিভাজন। যে বিভাজন সাত কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চোখে প্রকট হয়ে দেখা দেয় ২৭ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণে। যা আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি সংঘর্ষে। অথচ মাত্র ছয় মাস আগেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক পতাকাতলে দাঁড়িয়ে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সৃষ্টি করেছে এক অনন্য সফল অভ্যুত্থানের ইতিহাস। ওই তাদের মাঝে এই রক্তক্ষয়ী বিভাজনের বীজ কেউ কি হঠাৎ রোপণ করল?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন