সংস্কার বনাম নির্বাচন: এ বছরের মধ্যে দুটোই প্রয়োজন ও সম্ভব

ডেইলি স্টার মাহফুজ আনাম প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৫১

সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের একটি বিতর্ক আমাদের চিন্তাধারাকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। 'সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়' বনাম 'নির্বাচনে দেরি হলে সংস্কার নয়'—এই বিতর্কে রাজনৈতিক মহল এতটাই জড়িয়ে পড়েছে যে, জরুরি বিষয়গুলো থেকে তাদের নজর সরে যাচ্ছে।


উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বিতর্ক এখন আরও তীব্র হয়ে উঠছে। কিন্তু, বাস্তবতা হলো, আমাদের দুটোই প্রয়োজন এবং ২০২৫ সালের ডিসেম্বর বা ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যেই তা অর্জন করা সম্ভব।


জনগণ চায় সংস্কারের এই সুবর্ণ সুযোগ যেন হাতছাড়া না হয়। তবে দেশের মানুষ বর্তমান পরিস্থিতির জটিলতা সম্পর্কেও সচেতন এবং তাদের অগ্রাধিকার হচ্ছে স্থিতিশীল রাজনৈতিক ও আইনি পরিবেশ।


যারা নির্বাচনকে সংস্কারের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন, তারা সংস্কারের অপরিহার্যতাকে খাটো করে দেখছেন। তারা হয়তো ভুলে যাচ্ছেন যে, বাকশাল প্রবর্তন, দুইবারের সামরিক শাসন, ১৯৯১ সালে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর থেকে দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার বিকাশ এবং দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসন কেবল বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন, পুলিশসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের পথই রুদ্ধ করেনি, বরং শাসনব্যবস্থাকে জনসেবামূলক করার পরিবর্তে শাসকদের অস্ত্রে পরিণত করেছে। কাজেই সংস্কারের গুরুত্ব নিয়ে কোনো সংশয়ের অবকাশ নেই।



অপরদিকে, যারা সংস্কারকে নির্বাচনের ওপরে স্থান দিচ্ছেন, তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের গুরুত্ব এবং যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা যথাযথভাবে অনুধাবন করছেন না। কেননা, গত তিনটি নির্বাচনে ভোটারদের ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার ও সংসদ ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি। জাতীয় নির্বাচন জনগণকে সেই অধিকার ফিরিয়ে দেবে, যেখানে তারা নির্ধারণ করতে পারে যে কে শাসনক্ষমতায় থাকবে, কে থাকবে না।


কোন দল বা ব্যক্তি দেশ পরিচালনার ক্ষমতা পাবে, রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হওয়া করদাতাদের অর্থ ব্যয় করবে এবং নতুন নীতিমালা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে সেটা নির্ধারণ করা জনগণের অধিকার। কেবলমাত্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই এটা নিশ্চিত করা সম্ভব।


আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে শেখ হাসিনার শাসনামলে ব্যাপক দুর্নীতি ও অপশাসনের মধ্যেও সবচেয়ে বেশি জনরোষ সৃষ্টি করেছিল তার কারসাজিমূলক নির্বাচনগুলো। বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্রদের জনপ্রিয়তা ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতার কারণে দেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগে কিছুটা অপেক্ষা করতে রাজি আছে। কিন্তু সেই অপেক্ষারও সীমা আছে।


নির্বাচন কেবল সরকারই গঠন করে না, বরং ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করে। আমাদের শাসন ব্যবস্থায় সম্ভবত সবচেয়ে উপেক্ষিত ও অবমূল্যায়িত শব্দ হচ্ছে 'জবাবদিহিতা'। সরকারি কর্মকর্তারা আমাদের করের টাকায় বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেও তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। আমাদের পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলো জনগণকে দমন করার ক্ষমতা রাখে, অথচ এটা জিজ্ঞাসা করার অধিকার জনগণের নেই যে তারা আদৌ সৎভাবে ও আইন মেনে তাদের দায়িত্ব পালন করছে কি না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও