জেলা প্রশাসকের পদবি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হবে যুগোপযোগী
১৪ জানুয়ারি জাতীয় পত্রিকাগুলোতে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গঠিত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের নেওয়া বেশকিছু সিদ্ধান্তের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে যে বিষয়টি অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, তা হলো, ডেপুটি কমিশনার বা ডিসিদের পদবি বদলে যাওয়াসংক্রান্ত খবরটি। কমিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ‘জেলা প্রশাসকের (ডিসি) পদবি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট করার সুপারিশ করা হতে পারে। যদি তাই হয়, তাহলে বলব, কমিশনের জেলা প্রশাসকের পদবি পরিবর্তন করার সিদ্ধান্তটি হবে যুগোপযোগী। সরল ভাষায় আমরা যা বুঝি, তা হলো, বেতনভুক্ত সরকারি কোনো কর্মকর্তা জনগণের ঘাড়ের ওপর শাসক হয়ে বসতে পারেন না। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, সরকারের সব পর্যায়ের কর্মকর্তাই জনগণের সেবক; শাসক নন।
সরকারের প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনিক ইউনিট। কারণ, জেলা ও উপজেলায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে কাজ করতে হয়। জনগণের কল্যাণমুখী কাজ তাদের মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হয়। মাঠপর্যায়ের এসব কর্মকর্তা যথেষ্ট ক্ষমতার অধিকারী হয়ে থাকেন। এজন্য জেলার ডেপুটি কমিশনার বা ডিসি জেলার প্রশাসন, রাজস্ব, বিনোদন, উন্নয়ন, জেলখানা থেকে শুরু করে ৬২টি বিষয় দেখার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। এছাড়া ‘অন্যান্য’ ক্ষেত্রেও দায়িত্বপ্রাপ্ত বলতে একটি বিষয়ও এর মধ্যে রয়েছে। ফলে ওই জেলায় তাদের দায়িত্বের বাইরে কিছু নেই। ডিসি আইনশৃঙ্খলা কমিটিরও সভাপতি। একইসঙ্গে তিনি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। সুতরাং, তার দায়িত্বের বাইরে তেমন কিছু নেই। এটাই হলো ডিসিদের ক্ষমতার উৎস। অপরদিকে একেবারে মাঠপর্যায়ের আমলা, ইউএনওরা উপজেলায় একই ধরনের দায়িত্বে রয়েছেন, যা তার ক্ষমতার উৎস। উপজেলা চেয়ারম্যানদের আইন করে উপজেলায় ১৭ ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান করা হলেও তাদের সে ক্ষমতা ইউএনওরা না দিয়ে কুক্ষিগত করে রেখেছেন বলে অভিযোগ। ইউএনওদের ৭২ ধরনের দায়িত্বের মধ্যে পাবলিক পরীক্ষাও রয়েছে। তারা উপজেলার প্রধান নির্বাহী। এগুলো তাদের ক্ষমতাবানও করেছে। ডিসি-ইউএনওরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ক্ষমতাও রাখেন। ইউএনও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও।
- ট্যাগ:
- মতামত
- জেলা প্রশাসক
- পদবি পরিবর্তন