যে এক নীতিতেই হবে অনেক সমস্যার সমাধান

প্রথম আলো সাজ্জাদ সিদ্দিকী প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৫৯

তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চার অভাব লক্ষণীয় মাত্রায় উপস্থিত। সেই সঙ্গে আছে সংবিধানকেন্দ্রিক অপরাজনীতি। বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। সংবিধানের মূলনীতিবিষয়ক বিতর্ক ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত চলছে। এ বিতর্কের বয়স প্রায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বয়সের সমানুপাতিক।


সংবিধান সংস্কার কমিটি ধর্মনিরপেক্ষতাসহ রাষ্ট্র পরিচালনার তিন মূলনীতি বাদ দিয়ে গণতন্ত্র বহাল রেখে নতুন ৪ মূলনীতির সুপারিশ করছে। এ সংবাদ এখন আলোচিত। কিছু ক্ষেত্রে তা প্রশংসিত, কিছু ক্ষেত্রে আবার সমালোচিত। এই প্রস্তাবের মাধ্যমে অন্তত একটি বিষয় প্রমাণিত হলো যে গণতন্ত্রে কারও ‘এলার্জি’ নেই।


গণতন্ত্রের ব্যাখ্যা ও এর প্রতি প্রদর্শিত প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলোচনা করলেই বুঝা যাবে যে গণতন্ত্র (লিবারাল ডেমোক্রেসি অর্থে) একক মূলনীতি হিসেবেই যথেষ্ট অন্য সব কুতর্ক কিংবা রাজনৈতিক আত্মীকরণ থেকে দূরে থাকতে। কেননা গণতন্ত্রের ভেতরেই রয়েছে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, ধর্মনিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার (মূল্যবোধ অর্থে), যা যেকোনো রাষ্ট্রের উৎকর্ষতার জন্য অপরিহার্য।


গণতন্ত্র সবাইকে সমান অধিকার দেয় এবং সমাজে বৈষম্য দূর করার সুযোগ সৃষ্টি করে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের ইচ্ছা পূর্ণতা পায়, তাই অন্য কোনো নীতির প্রয়োজন হয় না। সংবিধান সংস্কার কমিটির সুপারিশের আলোকে এবং সংবিধান বারবার কাটাছেঁড়ার বিপরীতে গণতন্ত্রের মতো একটি একক নীতিই যথেষ্ট হতে পারে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। এর জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনৈতিক হয়ে ওঠা। আর দরকার রাজনৈতিকভাবে সচেতন বৃহৎ জনগোষ্ঠী।



গণতন্ত্র একক মূলনীতি হিসেবে সর্বজনীন ও যথেষ্ট। গণতন্ত্র মানে জনগণের শাসন। গণতন্ত্র এমন একটি শাসনব্যবস্থা, যা জনগণের মতামত, ইচ্ছা ও অংশগ্রহণের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। এটি সর্বজনীন। কারণ, এটি জাতি, ধর্ম, সংস্কৃতি বা মতাদর্শনির্বিশেষে সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। গণতন্ত্র ন্যায়ের ভিত্তিতে গঠিত একটি ব্যবস্থা, যা প্রতিটি মানুষের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। জনগণের শাসন হিসেবেই গণতন্ত্রকে পাঠ করা হয়।


গণতন্ত্রের কেন্দ্রবিন্দু হলো জনগণ। জনগণই রাষ্ট্র ও শাসনব্যবস্থার প্রকৃত মালিক এবং তাদের ইচ্ছা, মতামত ও অংশগ্রহণই শাসনব্যবস্থার বৈধতা নির্ধারণ করে। এটি কেবল একটি তত্ত্ব নয়, বরং একক কর্তৃত্ববাদের থেকে সর্বজনীন ব্যবস্থার রূপান্তর। উদাহরণস্বরূপ, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ভোটাধিকার। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের শাসক নির্বাচন করে। যেমন শত সমস্যা সত্ত্বেও প্রতিবেশী ভারত নিয়মিত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ দেয় এবং গণতান্ত্রিক পরিচয়কে জনমনে মূর্তমান রাখে। এটি নিশ্চিত করে যে জনগণের ইচ্ছা শাসনব্যবস্থায় প্রতিফলিত হয়।


নৈতিক নীতির চর্চা ও অংশগ্রহণ জরুরি গণতন্ত্র নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে। জনগণের অংশগ্রহণ কেবল ভোট দেওয়া পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়। গণতন্ত্রে জনগণ আইন প্রণয়ন, নীতিনির্ধারণ ও শাসকদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতে (যেমন নরওয়ে বা সুইডেন) জনগণের অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে নীতিগুলো গঠিত হয়। ফলে সুশাসনের পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়।


অথচ আমরা এই সামাজিক ন্যায়বিচার টার্ম হিসেবে সংবিধানে রাখা না–রাখা নিয়ে প্রতিনিয়ত দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছি, জাতি হিসেবে বিভাজিত হচ্ছি। আমরা জানি, গণতন্ত্র এমন এক সর্বজনীন নীতি, যা ধর্ম, সংস্কৃতি ও যেকোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মতাদর্শের ঊর্ধ্বে। সবার জন্যই গণতন্ত্র কাজ করে। যেমন ধর্মনিরপেক্ষতা নিশ্চিতকরণে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের শাসন ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত হয় না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও