পাল্টালেই কি বদলায়?
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্ক ও বিভ্রান্তি দুটোই চলছে। কী চেয়েছিল দেশের জনগণ আর কী পেয়েছে বা পাচ্ছে সেটা এখন প্রধান আলোচনার বিষয়। এই বিশাল গণআন্দোলনে নিহতদের রক্তের দাগ শুকায়নি। আহতদের ন্যূনতম চিকিৎসা নিয়েও সংকট আছে, স্বজনহারাদের আহাজারি থামেনি এসব যেমন সত্য, তেমনি দ্রব্যমূল্য নাগালের মধ্যে নেই, শ্রমিকের মজুরি আর কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়ার নিশ্চয়তা আসেনি। আর পরিবর্তন হয়নি ক্ষমতাসীনদের মানসিকতার। যদিও এসব কথা বললে অনেকেই বলে, সেই পুরনো কথা বাদ দেন তো? অনেকেই আবার এ সবকে বামপন্থি বুলি বলে উপহাস করতে পছন্দ করেন। ঠিক আছে তারা তা করুন, কিন্তু উপহাস আর ব্যঙ্গ করে তো সমস্যার সমাধান হয় না। মানুষ চেয়েছিল পরিবর্তন, মোটা দাগে দেখতে চেয়েছিল ক্ষমতা পরিবর্তনের আগে এবং পরের অবস্থার পার্থক্য, আর এখন বুঝতে চায় কী হতে যাচ্ছে? শাসক পাল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে যেন ব্যবস্থার বদলটাও ঘটে।
এই রকম একটা পরিস্থিতিতে এখন চলছে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা। অঙ্গীকার এবং ঘোষণা তো সাধারণত আগেই দেওয়া হয়ে থাকে, আকাক্সক্ষার ঘনীভূত রূপ প্রকাশিত হয় ঘোষণায়। ঘোষণার সঙ্গে রূপরেখা মিলে আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারিত হয়। আন্দোলনের সাফল্যের পর শুরু হয় ঘোষণা অনুযায়ী পথ চলা এবং প্রতিনিয়ত জবাবদিহির মধ্যে থাকা। যা ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল তার বাস্তবায়ন কতদূর কিংবা তা যথাযথ হচ্ছে কি না? ফলে আগস্টের পাঁচ মাস পর অভ্যুত্থানের ঘোষণা করতে গিয়ে হয়তো কিছু প্রশ্নের মধ্যে পড়তে হচ্ছে, যারা ঘোষণা প্রণয়ন করতে চাচ্ছেন। এই পাঁচ মাসে দেশের জনগণ ও রাজনৈতিক মহল অনেক কিছু প্রত্যক্ষ করেছে, অনেক সংশয় তৈরি হয়েছে অভ্যুত্থান-পরবর্তী ক্ষমতাসীনদের কথা এবং কাজের মাধ্যমে। মানুষের বিপুল প্রত্যাশা পূরণ করা কঠিন কিন্তু পদক্ষেপ দেখতে চায় তারা।