আজ যে শিশু জন্মাচ্ছে, তার মাথায়ও ১ লাখ টাকার ঋণ, এখন উপায়?

প্রথম আলো ড. সেলিম জাহান প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৩৮

২০২৪ সালের জুনের শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া দেশি ও বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ কোটি টাকা। বাংলাদেশের লোকসংখ্যা যদি ১৮ কোটি ধরা হয়, তাহলে আমাদের প্রত্যেকের রাষ্ট্রীয় ঋণভার হচ্ছে ১ লাখ টাকা। না, এ ঋণভারে কোনো ব্যক্তিগত ঋণ নেই, এটা হচ্ছে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের দায়। আমরা এ দায় না মেটাতে পারলে এ ঋণভার বর্তাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর। অন্যভাবে বললে, আজ বাংলাদেশে যে শিশু জন্মাচ্ছে, সে এ ঋণভার নিয়েই জন্মাচ্ছে।


সত্যিকার অর্থে ১৮ লাখ কোটি টাকা সংখ্যাটি সত্যিই বিশাল। তবে এ অবস্থা তো এক দিনে তৈরি হয়নি। চার বছর আগে সংখ্যাটি ছিল ১১ লাখ কোটির মতো।


১৮ লাখ কোটি সংখ্যাটি গত কয়েক বছরের তিনটি বাজেটের সমান। মোট ঋণের মধ্যে দেশজ ঋণের পরিমাণ ১০ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ও বিদেশি ঋণের পরিমাণ ৮ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা। মোট ঋণে দেশজ ঋণের অংশ ছিল ৫৬ শতাংশ ও বিদেশি ঋণের অংশ ৪৪ শতাংশ।


এ প্রসঙ্গে তিনটা কথা বলা দরকার। এক, এই প্রথম দেশজ ঋণ ১০ লাখ কোটির ঘর ছাড়িয়েছে; দুই, গত চার বছরে বিদেশি ঋণ দ্বিগুণ হয়েছে এবং তিন, বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ঋণ ও জাতীয় উৎপাদনের অনুপাত হচ্ছে ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ। ৪ বছর আগে সে অনুপাত ছিল ৩২ দশমিক ৪ শতাংশ।



পুরো অবস্থার প্রকৃতি সম্পর্কে কয়েকটি কথা বলা দরকার। এক, ঋণ-জাতীয় দেশজ উৎপাদন অবস্থাটি নজরদারিতে রাখা দরকার, তাতে কোনো সন্দেহ নেই এবং এটা এখন পর্যন্ত সংকটের পর্যায় পৌঁছায়নি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডারের মানদণ্ডে ঋণ-জাতীয় দেশজ উৎপাদনের অনুপাত যেখানে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত গ্রহণযোগ্য, সেখানে বাংলাদেশে সে অনুপাত ৩৬ শতাংশ।


দুই, বাজেট–ঘাটতি মেটাতে প্রতিবছরই সরকারকে দেশজ ও বিদেশি উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করতে হয়। দেশজ ঋণ সরকার সহজেই নিতে পারে, তাই বিগত সরকার সেই সহজ উৎসটিই বেছে নিয়েছিল। আসলে ঋণ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাবে দেশজ উৎস থেকেই বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছিল।


তিন, বিদেশি উৎসের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ ঋণ নেওয়া হয়েছিল সুষ্ঠু ও বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়ন ব্যতীত বাছবিচারবিহীন ও দর-কষাকষি ভিন্ন। বিভিন্ন মর্যাদামূলক প্রকল্পের জন্য বিশাল পরিমাণ বিদেশি ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে। বলা প্রয়োজন, বিদেশি ঋণদাতারা ঋণ পরিশোধের অতিরিক্ত সময়সীমা কমিয়ে দিয়েছে এবং সুদের হার বাড়িয়েছে। বিভিন্ন মর্যাদামূলক প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের অতিরিক্ত মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিদেশি ঋণের দায়দেনা পরিশোধের চাপ বেড়েছে।


চার, ঋণ গ্রহণের দায়ের একটি দিক হচ্ছে সুদ পরিশোধ। গত ২০২৩-২৪ সালের অর্থবছরে সুদ পরিশোধের জন্য সরকারি ব্যয় হয়েছে ১ দশমিক ১ লাখ কোটি টাকা, যা জাতীয় দেশজ বাজেটের এক-ষষ্ঠাংশের মতো। গত অর্থবছরে ঋণ সুদ-পরিশোধের হার ছিল ১৭ শতাংশ। বিদেশি ঋণের ক্ষেত্রে আর একটি অতিরিক্ত মাত্রিকতা রয়েছে। বিদেশি ঋণের সুদ বিদেশি মুদ্রায় পরিশোধ করতে হয়। ফলে বিদেশি মুদ্রার মজুত কমে যায়। যেমন ইদানীংকালে বিদেশি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও