বই পড়ায় বিভোর স্বশিক্ষিত এক কৃষক
তিনি লিখতে জানেন না, পড়তে পারেন কেবল। বিভোর হয়ে পড়েন সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, বিজ্ঞান ও নৃতত্ত্ব। গান করেন, ছবি আঁকেন। মুখে মুখে গানও বাঁধেন; কিন্তু সেই গান লিখে রাখতে পারেন না। পড়া, গান ছাড়াও আরেকটি কাজ তাঁকে করতে হয়—চাষাবাদ। স্বশিক্ষিত এই মানুষ পেশায় কৃষক। নাম সত্যেন্দ্রনাথ প্রামাণিক (৫৭)। বাড়ি রাজশাহীর তানোরের মাড়িয়া গ্রামে।
শিখেছিলেন মায়ের কাছে
সত্যেন্দ্রনাথের বাবার নাম উপেন্দ্রনাথ প্রামাণিক। যৌথ পরিবার থেকে একসময় পৃথক হয়ে যান উপেন্দ্রনাথ। আর্থিক অনটনে বাধ্য হয়ে বড় ছেলে সত্যেন্দ্রনাথকে কৃষিকাজে লাগিয়ে দেন। এ জন্য স্কুলের পাঠ নেওয়া হয়নি তাঁর। মা গীতা রানী ছিলেন পঞ্চম শ্রেণি পাস। মায়ের কাছেই বর্ণ পরিচয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। সত্যেন্দ্রনাথের মনে আছে, একদিন তাঁকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলেন এরফান কাকা (মাস্টার)। স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ পড়তে দিয়েছিলেন। মায়ের কাছে শেখা বর্ণ সতে৵ন্দ্রনাথ ঝরঝর করে পড়েছিলেন সেদিন। সত্যেনের প্রথম দিনের এই পাঠ দেখে মাস্টার কাকা ভীষণ খুশি হয়েছিলেন; কিন্তু ওই এক দিনই শেষ। আর কোনো দিন স্কুলে যাওয়া হয়নি তাঁর। তবে স্কুলে না গেলেও পড়া ছাড়েননি সত্যেন্দ্রনাথ।