শুধু বাংলাদেশ সীমান্তেই কেন মানুষ মারে বিএসএফ
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফেলানী খাতুনের লাশের সেই দৃশ্যের কথা আমরা ভুলতে পারি না। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কিশোরী ফেলানী খাতুনকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। আজ ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পূর্ণ হলেও এখনো ন্যায়বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার।
১৫ বছর বয়সী কিশোরী ফেলানী কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে তার বাবার সঙ্গে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিলেন। কাঁটাতার পার হওয়ার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। তার লাশ দীর্ঘসময় ঝুলে ছিল কাঁটাতারের বেড়ায়।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘আমি দুবার ভারতে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি। কিন্তু আজও ন্যায়বিচার পাইনি। যত দিন বেঁচে থাকব, তত দিন এই লড়াই চালিয়ে যাব।’ ছোট ভাই জাহান উদ্দিন বলেন, ‘১৪ বছর পার হলো। কিন্তু আমার বোনের হত্যার বিচার এখনো হয়নি। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই, যেন এই হত্যাকাণ্ডের কঠোর বিচার হয়।’
গত বছর ৯ এপ্রিল এক বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদন দেখে চমকে উঠেছিলাম। কোনো কারণ ছাড়াই বাংলাদেশের সীমান্তে প্রবেশ করে দুই রাখালকে গুলি করেছে ভারতের বিএসএফ। এটি তো কখনো মানা যায় না। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তৎকালীন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না।
সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে উঠলেই আত্মরক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে গুলি চালানোর অজুহাত দাঁড় করায় ভারতীয় বিএসএফ। বিএসএফের গুলিতে নিহত সব বাংলাদেশিকে অপরাধী মনে করে তারা। সবাইকে চোরাচালানকারী বা গরু পাচারকারী মনে করে।
অথচ ভারতের মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের তরফেই আমরা জানতে পারি, সীমান্ত হত্যার পেছনে যে গল্প ফাঁদা হয়, তা সঠিক নয়। সীমান্ত দিয়ে যে গরু চোরাচালান হয় এবং চোরাচালানিদের হত্যা করা হয়, সেই গরুর জন্ম তো সীমান্তে হয় না। আরও ভারতের অভ্যন্তরে আরও অনেক দূর থেকে এমনকি অন্যান্য রাজ্য থেকে সেই গরু এনে জড়ো করা হয় সীমান্তে। বিএসএফসহ ভারতের অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পৃক্ততা না থাকলে এ গরু কীভাবে সীমান্তে আসে?
- ট্যাগ:
- মতামত
- সীমান্ত হত্যা