দেশে দেশে গ্রেগরিয়ান নববর্ষ; বিভ্রান্ত বাংলাদেশ

বিডি নিউজ ২৪ গোবিন্দ শীল প্রকাশিত: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯:৪৭

রোমান নববর্ষের উদযাপন এক সময় পাশ্চাত্যের অন্যতম পুরোনো একটি উৎসব ছিল– যা ৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চালু হয়। ওই উৎসব নানা প্রতীকী বিষয় দিয়ে পূর্ণ ছিল এবং একে রোমান সাম্রাজ্যের অধিবাসীদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আয়োজন হিসেবে দেখা হতো। দেবতা জানুসের নামানুসারে জানুয়ারি মাসের নামকরণ করা হয়েছে আর এই উৎসবের মধ্য দিয়ে জানুস পুরোনো এবং নতুনের মধ্যে মেলবন্ধন রচনা করেছিলেন বলে পৌরাণিক আখ্যানে উল্লেখ রয়েছে।


এই বর্ষপঞ্জি চাঁদের বছর ধরে পালন করা হতো এবং এটি প্রায় ১,৬০০ বছর ধরে চলেছিল। তারপর, গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের প্রচলন করেন (১৫৮২ সালে) পোপ গ্রেগরি ত্রয়োদশ। নববর্ষের দিনটি ক্যালেন্ডার বছরের প্রথম দিন বা পহেলা জানুয়ারি। বেশিরভাগ সৌর ক্যালেন্ডার (যেমন গ্রেগরিয়ান ও জুলিয়ান) উত্তরের শীতকালীন অয়নকালে (সাধারণত ২১ ডিসেম্বর) বা তার কাছাকাছি সময়ে নিয়মিতভাবে বছর শুরু করে থাকে।


রোমানরা বিশ্বাস করত যে, নতুন বছরের জন্য নতুন প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষ আগের বছরের ভুল-ত্রুটি পেছনে ফেলে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আত্মনিয়োগ করবে। রোমান নববর্ষ উদযাপনের সময় মোমবাতি জ্বালানো এবং নানা সবুজ বস্তুসামগ্রী দিয়ে ঘর সাজানো হতো। এর মাধ্যমে নতুন আশা এবং পুরাতন আকাঙ্ক্ষার নবায়ন করা হতো।


বেশিরভাগ দেশ এখন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারকে তাদের নাগরিক ক্যালেন্ডার হিসাবে ব্যবহার করছে। এই ক্যালেন্ডার অনুসারে, ১ জানুয়ারি বিশ্বের বেশিরভাগ স্থানেই সরকারি ছুটি পালিত হয় এবং নববর্ষের আগের দিন মধ্যরাতে দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করা হয়।



১৭৫২ সালে ব্রিটেন এবং তার সাম্রাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে পহেলা জানুয়ারিকে নববর্ষের দিন হিসাবে আইন করে চালু করে। একই আইনের আওতায় তারা ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর শেষ জুলিয়ান বর্ষপঞ্জিকে বাতিল করে দেয়। আইনটি ১৭৫১ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিনটির পর কার্যকর হয়। স্বাভবিকভাবে ব্রিটিশ সাম্রাজের অধীন হবার কারণে ভারতবর্ষেও গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী যাবতীয় রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতে থাকে।


যে নববর্ষ শুরু হয়েছিল দেবতাকে তুষ্ট করার জন্য, কৃষিকাজকে সমৃদ্ধ করার জন্য— আজ তা মানুষ নিজেদেরকে আনন্দিত করতে ও নতুন বছরের জন্য কাজের ভালো পরিকল্পনা করতে ব্যবহার করছে।


গ্রেগরিয়ান নববর্ষ পালনের সঙ্গে মদ্যপানের একটা সম্পর্ক থাকায় মুসলিম বিশ্বে এই নববর্ষ উদযাপন জনপ্রিয় ছিল না। কিন্তু, পাশ্চাত্যের ব্যবসা-বাণিজ্য ও ইংরেজিভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থায় জানুয়ারি মাসের গুরুত্ব থাকার কারণে ধীরে ধীরে মুসলিমপ্রধান দেশেও এটি একটি রেওয়াজে পরিণত হয়।


মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশই তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধার জন্য গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে। তবে, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উদ্দেশ্যে তারা ইসলামিক বর্ষপঞ্জির চলনও বজায় রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ, সৌদি আরব ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে সরকারি কর্মীদের বেতন দেওয়ার উদ্দেশ্যে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রহণ করেছে। তবে বেসরকারি খাতের নিয়োগকর্তারা বেতনের উদ্দেশ্যে আগে থেকেই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার শুরু করেন।বাংলাদেশেও ঘটা করে বাংলা নববর্ষ পালিত হয়। বাকি সবক্ষেত্রে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।


মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে, বিশেষ করে যেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অমুসলিম নাগরিক রয়েছেন, সেখানে নববর্ষের আগের সন্ধ্যা বা ‘জিরো আওয়ার’ পশ্চিমা দেশগুলোর মতোই উৎসবের সঙ্গে পালিত হয়। এই উদযাপনের মধ্যে রয়েছে, আতশবাজি প্রদর্শন। বিশেষত দুবাই, ইস্তাম্বুল ও জাকার্তার মতো প্রধান শহরগুলো ব্যাপক আতশবাজির আয়োজন করে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও