প্রতিটি ভুল নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে সাহায্য করে
ছোটবেলা থেকেই একটা কথা আমি প্রায়ই শুনতাম। মা আমাকে ডাকতেন ‘কচ্ছপ’। ‘কচ্ছপ ও খরগোশ’-এর গল্পের সেই কচ্ছপ! কিছু হলেই বারবার করে মা মনে করিয়ে দিতেন, ‘সাবরিনা, অস্থির হয়ো না। তুমি কচ্ছপ। কচ্ছপের মতো হও। সব ঠিক হয়ে যাবে।’ তখন খুব বিরক্ত লাগত। কেন আমাকে ধীর আর স্থির হতে বলছে! কিন্তু বয়স যত বাড়তে থাকল, আমিও বুঝতে থাকলাম কচ্ছপ হওয়া আদতে খারাপ কিছু না। অনিশ্চিত সময়, হতাশার সময়, অথবা খারাপ সময়ে আমরা ভেঙে পড়ি, অস্থির হয়ে উঠি। কিন্তু খারাপ সময়গুলোয় স্থির থাকা, সেই সময় ও পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নেওয়া—আমাদের বড় হতে শেখায়। তাই সেই ছেলেবেলা থেকেই আমি কচ্ছপ হতে শিখছি, স্থির থাকতে শিখছি। সামনের দিনগুলোতেও এভাবেই শিখতে চাই, ধীরে ধীরে বড় হতে চাই।
আর এ জন্যই যখন যে কাজটি করি, ধীরস্থিরভাবে নিজের ওপর কোনো জোর না দিয়ে করতে চেষ্টা করি। তাই যখন যে কাজটা আমাকে টানে, তখন শুধু সেটাতেই নিজের পুরোটা ঢেলে দিই, সেটার দিকে ছুটি। অযথা অনেক দিকে মনোযোগ দিয়ে নিজেকে চাপে ফেলার পক্ষে আমি নই।
ভুল থেকে ভালো
প্রতিটি ভুল আমাদের নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করতে সাহায্য করে। ভেবে দেখুন, ১৩ বছর বয়সে আমি যদি বিচ্ছিরি দেখতে পোশাক না পরতাম, তাহলে হয়তো কোন পোশাকে আমাকে সেরা দেখাবে, আত্মবিশ্বাসী দেখাবে, তা বুঝতাম না। অতীতের ভুলের কারণেই আমি আজকের ‘আমি’ হতে পেরেছি। পেছনে তাকিয়ে ভুলগুলোর কথা মনে করে বলতে পারি, ‘হ্যাঁ, আমি বদলে গেছি।’ এই উপলব্ধি আমাকে ভীষণ তৃপ্ত করে।
ছোট থেকে বড় হওয়া
শিশুশিল্পী থেকে বড় হওয়া খুব সহজ কোনো কাজ নয়। মানুষ যাকে শিশুশিল্পী হিসেবে একবার গ্রহণ করে, তাকে হঠাৎ বড় হয়ে যেতে দেখলে ভালোভাবে নিতে পারে না। আমার বেলায়ও ব্যতিক্রম হয়নি। ছোট থেকে বড় হওয়ার যাত্রা আমার জন্যও বেশ কঠিন ছিল। তবে এ-যাত্রায়ও আমি কোনো তাড়াহুড়ো করিনি। যেমনটা শুরুতেই বলেছিলাম, আমি কচ্ছপ। পথটা কঠিন হবে বলে যে অস্থির হয়ে যেনতেনভাবে হুড়োহুড়ি করে পার করে যাওয়ার চেষ্টা করব, তা কিন্তু না। বড় হওয়ার এ-যাত্রায় আমার কাছে যখন যেটা উপযুক্ত হয়েছে, তখন তা-ই করেছি, ধীরেসুস্থে করেছি, সময় নিয়ে করেছি। আর এ সময় নিয়ে বড় হওয়ার কারণেই বেড়ে ওঠার যাত্রাটা আমি উপভোগ করতে পেরেছি।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- সফলতা
- প্রভাবশালী
- ভুল কাজ