দেশের সেরা দুই অর্থমন্ত্রীর মৃত্যু হয় অপঘাতে
অলিগার্কদের উত্থান। ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থের লুটপাট। দেশ থেকে প্রতি বছর শত শত কোটি ডলার অর্থ পাচার। দায় মুক্তি দিয়ে অন্যায্য সরকারি চুক্তি। অর্থনীতির এ প্রধান প্রবণতা গড়ে উঠে অর্থমন্ত্রী হিসাবে এম সাইফুর রহমান,শাহ এএমএস কিবরিয়া পরবর্তী যুগে। এ দুজনেরই মৃত্যু হয় অপঘাতে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের মৃত্যু হয় ২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। মৌলভীবাজার থেকে ঢাকায় ফেরার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের খড়িয়ালা নামক স্থানে তিনি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তার গাড়ি রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। ৫-৬ ফুট পানিতে তলিয়ে যাওয়া ওই গাড়িতে চালকসহ ছিলেন মোট ছয়জন। এর মধ্যে কেবল এম সাইফুর রহমানেরই মৃত্যু হয়। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যেরবাজারে ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি এক জনসভায় গ্রেনেড হামলার শিকার হন শাহ এএমএস কিবরিয়া। ওই হামলায় সাবেক এ অর্থমন্ত্রীসহ পাঁচজন নিহত হন।
সিলেট অঞ্চল থেকে উঠে আসা প্রয়াত এ দুই মন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি কাজ করা বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনীতিবিদ, আমলা, গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য হলো অর্থমন্ত্রী হিসেবে এম সাইফুর রহমান ও শাহ এএমএস কিবরিয়া দুজনই ছিলেন বেশ সফল। তাদের দৃঢ়চেতা মনোভাবের কারণে সবাই সমীহ করে চলতেন। অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে তাদের অবস্থান ছিল বেশ কঠোর। ব্যাংক খাত সংস্কার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দুজনেরই ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। কঠোর ছিলেন ব্যাংক খাতে মাফিয়াতন্ত্রের বিরুদ্ধে। তাদের সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অলিগার্করা ঢুকতেও পারেননি। অনেক ক্ষেত্রে সরকারপ্রধানের মতের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি এ দুই অর্থনীতিবিদ। এ কারণে অলিগার্কদের পাশাপাশি নিজ দলের মধ্যেও অনেকে তাদের শত্রু মনে করতেন। দেশের সেরা দুই অর্থমন্ত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র থাকার কথাও জানান কেউ কেউ।