এই ভূখণ্ডের নাম কীভাবে ‘বাংলাদেশ’ হলো?

জাগো নিউজ ২৪ আমীন আল রশীদ প্রকাশিত: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪৯

‘বাংলাদেশ’ শব্দটি এসেছে মূলত বঙ্গ বা বঙ্গাল থেকে। প্রাচীনকাল থেকে ‘বঙ্গ’ নামে পরিচিত এই অঞ্চলটি মৌর্য, গুপ্ত ও পাল সাম্রাজ্যের অংশ ছিল। মধ্যযুগে, বিশেষ করে সুলতানি আমলে ‘বাংলা’ শব্দটি পুরো অঞ্চলের জন্য ব্যবহৃত হতে থাকে। মুঘল আমলে ‘সুবা বাংলা’ নামে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক অঞ্চল ছিল। কিন্তু বঙ্গ থেকে পূর্ববঙ্গ, পূর্ব বাংলা এবং তারপর কীভাবে বাংলাদেশ হলো?


‘বঙ্গ’ শব্দটি চীনা তিব্বতীয় শব্দ এবং শব্দটির অংশের মূল অর্থ জলাভূমি। অর্থাৎ যারা জলাভূমিতে বাস করে তারা বঙ্গ, তাদের আবাসভূমি বঙ্গদেশ। বঙ্গের অবস্থান তথা সীমারেখা সম্পর্কে বিভিন্ন মত পাওয়া যায়। কোনো কোনো গ্রন্থে ব্রহ্মপুত্র থেকে সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলকে ‘বঙ্গ’ বলা হয়েছে। সম্ভবত সুন্দরবনের পূর্বপ্রান্ত থেকে ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহিত স্রোতধারার মধ্যবর্তী ভূ-ভাগই ছিল বঙ্গ। এ থেকে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন ঢাকা, ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চল বঙ্গের অন্তর্ভুক্ত ছিল।


১৯৪৭ সালের আগে বাঙালির বসবাসের দেশ বা অঞ্চল ‘বঙ্গদেশ’ নামে পরিচিত ছিল। বঙ্গদেশকে ইংরেজরা বলতো ‘বেঙ্গল’। এ নামটি তারা পেয়েছিল পর্তুগিজদের কাছ থেকে। পর্তুগিজরা বলতো ‘বেঙ্গালা’।



প্রাচীনকালে কখনো বঙ্গ, কখনো গৌড় নামে বাংলা পরিচিতি লাভ করে। বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বঙ্গাল’ নাম ধারণ করে আকবরের রাজত্বকালে ১৫৭৬ খ্রিষ্টাব্দে। বাংলা তখন মোগল সাম্রাজ্যের একটি সুবায় পরিণত হয়। মোগল শাসকগণ আরো ২০০ বছর ‘বাংলা’ শাসন করেন। ১৭৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে চলে যায়। ১৮৫৭ সালে তা সরাসরি ব্রিটিশ শাসনের অধীনে চলে যায়। মোগলদের দেয়া নামের আদলে পর্তুগিজরা (Bangal) নামে অভিহিত করে। ইংরেজরা এর নাম দেয় বেঙ্গল (Bengal)। ১৮৬৭ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ সরকারের অধীনে ভারতে যে ১২টি শাসন বিভাগ ছিল, তার মধ্যে বাংলা ছিল। এ সময় যুক্তপ্রদেশ বিহার ও উড়িষ্যা এবং আসাম বাংলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর বাংলা দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। পূর্ববঙ্গ পড়ে পাকিস্তানের মধ্যে, আর পশ্চিমবঙ্গ পড়ে ভারতের মধ্যে।


তবে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি প্রথম কে ব্যবহার করেছিলেন তা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া যায়। একটি মত হলো এই যে, বাংলাদেশ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময়। তার বিখ্যাত দেশপ্রেমমূলক গান ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি/তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী’ লেখা হয় এই বছর। যদিও এর আগেই রবীন্দ্রনাথ তার গদ্যে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটা অনেকবার ব্যবহার করেছেন। তখন তিনি বাংলাদেশ বলতে অভিন্ন বাংলাকে বুঝিয়েছিলেন, যখনও বাংলাদেশ একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক ভূখণ্ড হয়নি। অর্থাৎ বাংলাদেশ বলতে তখন একটি আলাদা রাষ্ট্র নয়—যার নিজস্ব মানচিত্র ও পতাকা আছে। বরং রবীন্দ্রনাথ যে বাংলাদেশ লিখেছেন সেটি তখন ভারতবর্ষের একটি অংশ। এমনকি তখন ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্রও হয়নি। বাংলাদেশ বলতে তিনি বুঝিয়েছেন ভারতবর্ষের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের বিশাল জনপদকে। যে জনপদ পরবর্তীকালে দুই দেশে ভাগ হয়ে গেছে।


রবীন্দ্রনাথ এই গানটি রচনা করেন বঙ্গভঙ্গের সময়, যখন ব্রিটিশরা বাংলাকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছিল। গানটি তৎকালীন বাঙালিদের মধ্যে দেশপ্রেম ও ঐক্যের বোধ জাগ্রত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একই সময়ে তিনি লেখেন ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’—যা এখন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও