অর্থনৈতিক মুক্তির সোপানতলে
বাঙালির ঐতিহাসিক ‘মুক্তির সংগ্রাম’-এর প্রকৃত অর্জন বা বিজয় বিবেচনার জন্য বিগত পাঁচ দশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের প্রত্যয় ও প্রতীতির স্বরূপ পর্যালোচনার অবশ্যই অবকাশ রয়েছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশ্নে ‘দল মত গোত্র গোষ্ঠী’ নির্বিশেষে গোটা দেশবাসীকে ভাববন্ধনে আবদ্ধকরণে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস যেমন জরুরি, তেমনি জাতীয় উন্নয়ন প্রয়াস প্রচেষ্টাতেও সমন্বিত উদ্যোগের আবশ্যকতাও একইভাবে অনস্বীকার্য। জাতীয় সঞ্চয় ও বিনিয়োগে থাকা চাই প্রতিটি নাগরিকের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অবদান।
অপচয় অপব্যয় রোধ, লাগসই প্রযুক্তি ও কার্যকর ব্যবস্থা অবলম্বনের দ্বারা সীমিত সম্পদের সুষম ব্যবহার নিশ্চিতকরণে সবার মধ্যে অভ্যাস, আগ্রহ ও একাগ্রতার সংস্কৃতি গড়ে ওঠা দরকার। নাগরিক অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা ও উপলব্ধির জাগৃতিতে অনিবার্য হয়ে উঠে যে নিষ্ঠা ও আকাক্সক্ষা, তা অর্জনের জন্য সাধনার প্রয়োজন, প্রয়োজন সব পক্ষের ত্যাগ স্বীকারের। দায়দায়িত্ব পালন ছাড়া স্বাধীনতার সুফল ভোগের দাবিদার হওয়া বাতুলতা মাত্র। পারস্পরিক দোষারোপের দ্বারা নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার প্রবণতায় প্রকৃত অর্জন অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়। বিভ্রান্তির বেড়াজালে দেশগত সমৃদ্ধির স্বপ্ন আত্মপ্রবঞ্চনার পর্যায়ে চলে যেতে পারে। নিজেরাই নিজেদের শত্রু সেজে দূরের ও কাছের শত্রুদের কাছে ভূ-রাজনীতির দাবার ঘুঁটিতে পরিণত হওয়ার অশুভ পরিণতি পরিলক্ষিত হয়েছে সার্কভুক্ত দুটি দেশে অতি সাম্প্রতিককালে।