চারদিকে এসব কীসের আলামত!
গত কয়েক মাস ধরে সারা দেশে, বিশেষ করে ঢাকা শহরে যা ঘটে চলেছে, তা রীতিমতো উদ্বেগজনক। আমরা সাধারণ মানুষ রাস্তায় বের হলেই অবরোধের মুখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে। অথচ এমনটি হওয়ার কথা ছিল না। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার দেশের মানুষকে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ আস্বাদনের যে সুখবাণীটি শুনিয়েছিল, রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে তার বিপরীত চিত্রই আমরা দেখতে পাচ্ছি। কারণ, রাস্তায় আমাদের চলাচলের স্বাধীনতাটুকুও হরণ করা হচ্ছে। যে কেউ যখন-তখন আমাদের রাজপথে আটকে রাখায় আমরা নিদারুণ দুঃখ-কষ্টে নিপতিত হচ্ছি।
অতিরিক্ত জনঅধ্যুষিত এ দেশে সমস্যারও অন্ত নেই। কিন্তু তাই বলে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিত ছাত্ররাও সেসব সমস্যার ক্ষেত্রে বোঝার ওপর শাকের আঁটি হয়ে দাঁড়াবেন, এমনটি ভাবতে কষ্ট হয়। স্কুলের ছাত্ররা পরীক্ষায় ফেল করে অটোপাশের দাবিতে রাস্তায়-সচিবালয়ে আন্দোলন করবেন; কলেজের ছাত্ররা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হবেন নিজেরাই তা ঠিক করে এ নিয়ে আন্দোলন করতে রাস্তায় নেমে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখবেন; কোন কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় বানাতে হবে, সংশ্লিষ্ট কলেজের ছাত্ররাই তা ঠিক করে রাস্তায় নেমে জনভোগান্তি সৃষ্টি করবেন-এসব কর্মসূচি মেনে নেওয়া যায় না। আবার পোশাক শ্রমিক, ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণেও জনসাধারণকে অশেষ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পোশাক শ্রমিকরা বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিসহ বিভিন্ন অজুহাতে রাস্তা অবরোধ করে চলেছেন। ফলে আন্তঃজেলাসহ রাজধানীতে যানবাহনে চলাচলরত যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন; ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাদের রাস্তায় আটকে রাখা হচ্ছে। অথচ পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতার সঙ্গে রাস্তায় চলাচলরত যাত্রীদের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ তাদের কেউ গার্মেন্ট মালিক নন। কিন্তু কে শোনে কার কথা!