চট্টগ্রামে খাবার পানিতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া: গবেষণা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) গবেষকরা সাম্প্রতিক এক গবেষণায় চট্টগ্রামের রেস্টুরেন্ট, রাস্তার পাশের চায়ের দোকান, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং রাস্তার খাবারের দোকানসহ পাবলিক খাবার পানির উৎসে মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সেল জার্নাল হেলিয়নের ২২ নম্বর সংখ্যায় 'খাবার পানি থেকে সালমোনেলা টাইফি ধারণকারী একাধিক অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জিনের স্ক্রিনিং এবং শনাক্তকরণ: বাংলাদেশে একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য উদ্বেগ' শীর্ষক এই গবেষণার একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। চবি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির অধ্যাপক ড. এএম মাসুদুল আজাদ চৌধুরী, বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহানা আক্তার মিনা এবং বিভাগের তিন শিক্ষার্থী পবিত্র দেবনাথ, একেএম জাকির হোসেন এবং মো জাহিদ হাসান এই নিবন্ধটিতে অবদান রেখেছেন।
গবেষকরা জানিয়েছেন, চবি জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের গবেষকেরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে মোট ১৫০টি খাবার পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। গবেষণাগারে নমুনাগুলো পরীক্ষা করা হলে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নমুনায় টাইফয়েড জ্বর সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত হয়। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এই ব্যাকটেরিয়াগুলোর বেশিরভাগই মাল্টিড্রাগ প্রতিরোধী ছিল।
গবেষণার নেতৃত্বদানকারী অধ্যাপক ড. এএম মাসুদুল আজাদ চৌধুরী বলেন, 'মোট ১৫০টি নমুনার মধ্যে আটটি নমুনায় (৫.৩৩%) সালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো যে এই ব্যাকটেরিয়াগুলির বেশিরভাগই মাল্টিড্রাগ-প্রতিরোধী ছিল। আটটি নমুনার মধ্যে ৮৭.৫ শতাংশ মাল্টিড্রাগ প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের গবেষণায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন পানির উৎসে মাল্টিড্রাগ-প্রতিরোধী সালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে, যা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্ব জনস্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক হুমকি। যদিও কো-ট্রাইমক্সাজোল এবং সিপ্রোফ্লক্সাসিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিকগুলি এখনো এই ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর, তবে বেশ কয়েকটি ব্যাকটেরিয়া এই ওষুধগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।'