নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কেন এত তাড়া

প্রথম আলো মহিউদ্দিন আহমদ প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:০২

খবরে দেখলাম, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মন্তব্য করেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সংস্কার না চায়, তাহলে তিনি নির্বাচন দিয়ে চলে যাবেন। এটা তাঁর অভিমানের কথাও হতে পারে, ক্ষোভের প্রকাশও হতে পারে।


এখানেই আমার প্রশ্ন, দেশের মালিক অধ্যাপক ইউনূস নন, রাজনৈতিক দলগুলোও নয়; দেশের মালিক জনগণ। রাজনৈতিক দলগুলোর একেকটার একেক ধরনের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও এজেন্ডা থাকে। তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে কথাবার্তা বলে। দাবিদাওয়া জানায়। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল আছে। বিগত নির্বাচন কমিশনে ৩৯টি দল নিবন্ধিত ছিল। ৫ আগস্টের পর আরও কয়েকটি দল নিবন্ধন পেয়েছে।


যাহোক, সব রাজনৈতিক দল এক সুরে কথা না বললেও অনেকগুলো দলের মধ্যে সুরের একটা মিল দেখা যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে বড় দল বিএনপি। রাজনীতির মাঠে একধরনের শূন্যতা বিরাজ করছে। কারণ, যাঁরা আওয়ামী লীগ করেন, তাঁরা কেউ পালিয়েছেন, কেউ গর্তে লুকিয়েছেন। দলগতভাবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রচারণায় নামবে কি না, সেটা এখনই বোঝা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও মতভিন্নতা আছে। কিছু কিছু দল, বিশেষ করে বিএনপি, রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগকে চাইছে। এটার পেছনে কী কারণ থাকতে পারে?


আমার উপলব্ধি হলো, আওয়ামী লীগের যাঁরা অনুগত সমর্থক, আওয়ামী লীগ যদি ভোটে না আসে, সেই ভোটাররা কী করবেন? তাঁরা কি ভোট দিতে যাবেন না? তাঁরা যদি ভোট দিতে না যান, তাহলে বাকি ভোটের বেশির ভাগ বিএনপির বাক্সে পড়বে বলে তারা আশা করে।



আওয়ামী লীগের যাঁরা অন্ধ সমর্থক, তাঁরা যদি ভোট দেন, তাহলে তাঁরা নিশ্চয়ই বিএনপিকে ভোট দেবেন না। বিএনপির প্রতিপক্ষ অন্য কাউকে ভোট দিলে নির্বাচনের মাঠের সমীকরণটা বদলে যেতে পারে। এখানেই বিএনপির আশঙ্কা। স্বাভাবিক কারণেই বিএনপি চাইবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাঠে থাকুক এবং নৌকার ভোট যেন অন্য কোনো দল না পায়। বিএনপি সম্ভবত এই সমীকরণ কষছে।


নির্বাচন যদি তাড়াতাড়ি হয়, তাহলে রাজনীতিতে যে শূন্যতা চলছে, তাতে বিএনপি অনেক সুবিধা পাবে। যত দেরি হবে, ততই বিএনপির মাঠ পিচ্ছিল হবে। ইতিমধ্যেই লক্ষণগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ যে খারাপ কাজগুলো করেছে, এখন আওয়ামী লীগ না থাকলেও সেই খারাপ কাজগুলো বন্ধ হয়নি। সেগুলো অনেকগুলো বিএনপির লোকেরা এখন করছে।


আমরা পত্রিকায় দেখছি, চাঁদাবাজি, দখল—এসব অপকর্মের জন্য বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের অনেকেই গ্রেপ্তার হচ্ছেন। কিছুদিন আগে ঢাকায় খুনের অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিএনপি তাঁকে বহিষ্কারও করেছে। বাংলাদেশে খারাপ কাজগুলো করার লোকের অভাব হয় না। তারা নির্দিষ্ট একটা দলের নয়, বিভিন্ন দলের আশ্রয়ে–প্রশ্রয়ে থাকে। আওয়ামী লীগ একসময় বলত, অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকে এসব করে। এটা বলে তারা নিজেদের একটা দায়মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করত। বিএনপিও সেটা করতে পারে। কিন্তু মানুষ এ কথায় বিশ্বাস করে না।
যাহোক, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও খুনোখুনি আগে যেমন চলত, এখনো তেমন চলছে। যত দিন যাবে, এসব প্রবণতা ততই বাড়বে। ফলে বিএনপির জনপ্রিয়তার পারদটা একটু একটু নামতে থাকবে। বিএনপির আশঙ্কা, যত দেরিতে নির্বাচন হবে, ততই নির্বাচনী মাঠ বিএনপির প্রতিকূলে যাবে।


বিএনপি সরাসরি নির্বাচন দেওয়ার কথা বলছে না, কিন্তু নির্বাচনের রোডম্যাপ চাইছে। রোডম্যাপ মানে হলো নির্বাচন কবে হবে, সেটা আগাম বলে দেওয়া। অন্তর্বর্তী সরকারের এজেন্ডায় নির্বাচনী রোডম্যাপের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। সরকারের মধ্যে ক্ষমতার কয়েকটি ভরকেন্দ্র আছে। এর মধ্যে একটি ভরকেন্দ্র হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা। তাঁরা এই মুহূর্তে নির্বাচন চাইছেন না। তাঁরা চাইছেন সংস্কার। তাঁরা বলছেন, এতগুলো মানুষ প্রাণ দিলেন, এতগুলো মানুষ আহত হলেন, এটা কি শুধুই এক দলকে সরিয়ে আরেক দলকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য? রাষ্ট্রব্যবস্থা আগে পাল্টাতে হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও