আগামী নির্বাচন কত দূর

দেশ রূপান্তর জাকির হোসেন প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫

দেশের মানুষ মুখিয়ে আছে কখন নির্বাচন হবে। ২০০৮ সালের পর তারা ভোট দেয়নি। গত ১৫ বছরে নির্বাচন নিয়ে যা হয়েছে তা ‘ভোট ভোট’ খেলা ছাড়া কিছুই না। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আস্থা রাখে গণতন্ত্রে। রাজনৈতিক দলগুলোও চায় গণতন্ত্র। কিন্তু ক্ষমতার মোহ তাদের স্বৈরাচারী করে তুলে। এর পরিণতিও তারা ভোগ করে। আমাদের সেই ইতিহাস আছে। স্বাধীনতার পর টালমাটাল রাজনীতি ১৯৯০ সালে যখন সোজা পথে হাঁটতে শুরু করে, তারপর অন্তত দুই-তিনটি নির্বাচন হয়েছে, সেখানে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে। কিন্তু ক্ষমতার মোহ রাজনীতিকদের অন্ধ করে তুলে। যে কারণে শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছিলেন। পরিণতি যেমন হওয়ার কথা ছিল তেমনই হয়েছে। বোধ করি শেখ হাসিনার পরিণতি রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটা শিক্ষা। রাজনীতিকদের বুঝতে হবে, ইতিহাসের পাতায় সবই থেকে যায়।


৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে ভারত চলে যাওয়ার পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এর কয়েক দিনের মধ্যে সাংবাদিকদের মধ্য থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এই অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কত দিন হবে? উত্তরে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মেয়াদের বিষয়ে এখন আলোচনা করা বা সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব না। আপনি কী রিফর্ম চান সেটা না বুঝে তো মেয়াদের কথা বলতে পারব না। আর যদি রিফর্ম না চান, তাহলে আলাদা কথা। ‘মেয়াদ’ ‘মেয়াদ’ নিয়ে অস্থির হওয়ার কিছু নাই। আমরা সবাই যেন একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য যাত্রা শুরু করতে পারি সেটার প্রস্তুতির জন্যই তো এই সরকার। সেই প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যেটুকু সময় প্রয়োজন শুধু সেটুকু সময়ই আমরা নেব। শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রের দিকেই আমাদের যাত্রা। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপদেষ্ট তাদের মেয়াদকাল কত দিন হতে পারে তা নিয়ে বলেছেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছিলেন আগামী ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে এই সরকারকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সংস্কারের ধারাবাহিকতায় এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গণতন্ত্রে উত্তরণ ঘটা উচিত বলেও তিনি মনে করেন। অবশ্য তার ওই বক্তব্যের জবাবে বলা হয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কত দিন হবে তা ঠিক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। পরবর্তী সময় প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আভাস দিয়েছিলেন, সংস্কার শেষে নির্বাচন হবে। ওই সময় তিনি এটাও বলেছিলেন, জনগণ যতদিন চাইবে ততদিনই তারা ক্ষমতায় থাকবেন।



সরকারের ১০০ দিন পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার নিয়ে বেশ সোরগোল চলছে। সরকারের মেয়াদ নিয়ে তার বক্তব্য ঘিরে চলছে আলোচনা। সরকারের সময়সীমা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। স্থায়ী সরকার নই। নিয়মিত সরকার পাঁচ বছরের হয়। নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ সম্ভবত চার বছর হতে পারে। কারণ, মানুষ আরও দ্রুত সময়ে সরকারের পরিবর্তন চায়। কাজেই এটা (অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ) নিশ্চিতভাবেই চার বছরের কম হবে। আরও কম হতে পারে। পুরোপুরি সেটি নির্ভর করছে মানুষের চাওয়া ও রাজনৈতিক দলগুলোর চাওয়ার ওপর।’ তিনি বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো চায় এটা (সংস্কার) বাদ দাও, নির্বাচন দাও। আমরা সেটাই করব।’ সে ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি চার বছর থাকছেন কি না, সাংবাদিকের এ প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি সেটা বলিনি যে চার বছর থাকব। আমি বলেছি, আমাদের মেয়াদ সর্বোচ্চ চার বছর হতে পারে। কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য সেটা নয়। আমাদের উদ্দেশ্য, যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা।’


এ নিয়ে নানামুখী আলোচনার প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেছেন, সংবিধান নিয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে, সেখানে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে সংসদের মেয়াদ চার বছর আনা হোক। এ   প্রেক্ষিতে সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যটি এসেছে বলে উল্লেখ করেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, এটা অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষেত্রে নয়। দেখা যাচ্ছে যে, অনেক ক্ষেত্রে ভালোমতো জিনিসটি না শুনে অনেকে শিরোনাম করে দিয়ে দিয়েছে। এদিকে গত মঙ্গলবার ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন : আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে আইন মন্ত্রণালয়ের বিগত ১০০ দিনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, অতি প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেওয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে সর্বত্রই একটি প্রশ্ন শোনা যায়, সেটি হলো তারা কত দিন থাকবে, তাদের মেয়াদ কত দিন হবে, নির্বাচন কবে হবে?’ এ বিষয়ে জবাব দিতে গিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন এটি আইন মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়। তবে আপনাকে একটি বিষয় বলি, আমরা মোস্ট এসেনশিয়াল কিছু সংস্কার করে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দেব। আমরা জাস্ট এই জিনিসটা চাই না যে, আগের মতো কোনো ‘ভুয়া’ নির্বাচন হোক। আর এটা চাই না নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে কেউ আবার ভুয়া নির্বাচন করার সুযোগ পাক। এ ছাড়া আর কোনো স্বার্থ নাই। এ বিষয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন, তাদের অধিকাংশই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজের পেশায় ফিরে যাওয়ার জন্য আগ্রহী।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও