ছাত্ররাজনীতি থাকবে, লেজুড়বৃত্তি থাকবে না

প্রথম আলো নিয়াজ আহমেদ খান প্রকাশিত: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:৩৫

আপনি একটি ভিন্ন পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে আপনার কি কোনো যোগাযোগ ছিল? আপনার নামটি কীভাবে এল?


নিয়াজ খান: উপাচার্য পদে শিক্ষার্থীরা তুলনামূলকভাবে নির্দলীয় কাউকে চাইছিল। আমার সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ শিক্ষার্থীরাই করে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়।

আপনি প্রায় দুই মাস হলো নিয়োগ পেয়েছেন। কী কী পরিবর্তন আনলেন? সবার সহযোগিতা কতটা পাচ্ছেন?


নিয়াজ খান: স্বাভাবিক অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রশাসন কিছু বিষয় ‘গ্রান্টেড’ হিসেবে পায়। একাডেমিক কার্যক্রম, অর্থাৎ ক্লাস ও পরীক্ষা চলমান থাকে, হলগুলো খোলা থাকে। কিন্তু আমরা দায়িত্ব নিয়েছি একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে। সাড়ে তিন মাস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ। প্রশাসন ভঙ্গুর। আমাদের সবকিছু শূন্য থেকে শুরু করতে হয়েছে। সেটা বেশ দ্রুত করতে পেরেছি। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার ২৪তম দিনে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হয়েছে, হল চালু হয়েছে। সবার সহযোগিতা আমাদের দরকার। বড় দাগে সেটা পেয়েছি। এটাও সত্যি যে এখনো অনেকের মধ্যে অনিশ্চয়তা আছে। ছাত্র ও শিক্ষক, ছাত্রদের অভ্যন্তরীণ এবং কোনো কোনো শিক্ষকের মধ্যেও দ্বন্দ্বের পরিস্থিতি রয়েছে। মানসিক চাপ ও ট্রমা (আঘাত) আছে। সেগুলো দূর করতে বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। ভালো ফল পাওয়া গেছে।


দ্বন্দ্ব নিরসনেও আমরা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। ফলে সেটা অনেকটাই কমেছে। শুরুতে ১৭টি বিভাগে অচলাবস্থা ছিল, এখন ২টিতে নেমে এসেছে। তা-ও ক্লাস শুরু হয়েছে। অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ এবং ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সহায়তায় এটা সম্ভব হয়েছে।



আরও দু-একটি দিক আমি বলব, তবে সেগুলোকে বড় সফলতা বলে দাবি করছি না। এর মধ্যে একটি হলো ভালো নিয়োগের ব্যবস্থা করা। আমরা উচ্চতর গবেষণা কেন্দ্রগুলোতে সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ শুরু করেছি, যা ছিল পুরোপুরি উপাচার্যের এখতিয়ার। সার্চ কমিটিতে তিনজন করে সদস্য ছিলেন। তাঁরা প্রথিতযশা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। তাঁদের এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থের দ্বন্দ্ব নেই। তাঁরা নিয়োগের জন্য সবচেয়ে যোগ্য মানুষ খুঁজে বের করেছেন। এই পদ্ধতিটি শিক্ষক নিয়োগ ও অন্য ক্ষেত্রে ছড়িয়ে দিতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।


হলের আসনসংকট নিরসনে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আমরা যা করছি, তা সবাইকে জানাচ্ছি। প্রতি সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজ ও অন্যান্য মাধ্যমে তা জানিয়ে দেওয়া হয়। কেউ আমাদের কাজ পছন্দ করবে, কেউ করবে না, কিন্তু সবাই জানুক—এটাই আমরা চাই। যেকোনো কাজ আমরা দলগত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে করি। আগে উপাচার্য এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতেন। সেখানে একটা পরিবর্তন আনার চেষ্টা হিসেবে আমরা দিন শুরু করি আমার সহকর্মীদের কারও না কারও অফিস থেকে। কখনো সহ-উপাচার্য, কখনো কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে বৈঠক করে কাজ শুরু হয়।


আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ছিল ছাত্রলীগের দখলে। এখন কি প্রশাসনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে?


নিয়াজ খান: এ ক্ষেত্রে একটু সন্তুষ্টি নিয়ে বলতে পারি, বিগত ৩০-৩৫ বছরের মধ্যে এখন হলে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ সবচেয়ে বেশি। মাত্রাগত কিছু পার্থক্য থাকতে পারে। কোনো হলে ১০০, কোনো হলে ৭০ শতাংশ। আসন বণ্টন মেধার ভিত্তিতে হচ্ছে। গণরুম বিলুপ্ত হয়েছে, ‘গেস্টরুম সংস্কৃতি’ (অতিথিকক্ষে ডেকে আদবকায়দা শেখানোর নামে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন) নেই। শিক্ষকেরা সক্রিয়।


সব হলে ১০০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ কেন নয়? গণ-অভ্যুত্থানের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক প্রত্যাশা তো এটাই ছিল।


নিয়াজ খান: দু-তিনটি বিষয় এখানে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যখন তিন মাস কার্যত অকার্যকর ছিল, তখন শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতো করে একটা ব্যবস্থা চালু করেছে। তারা এই সব ব্যবস্থার নাম দিয়েছিল মনিটরিং টিম (পর্যবেক্ষণ দল), পরিবেশ টিম ইত্যাদি। সেটা গণরুমের নিপীড়নের মতো ছিল না। আমরা এখন তাদের রেসপেক্ট (সম্মান) করছি। তবে চূড়ান্তভাবে হলের নিয়ন্ত্রণ প্রশাসনের হাতেই যাবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও