কোথায় স্বস্তি কাজে
সরকারি অফিসার হওয়ার শখ আমার যতটা না ছিল, তার অধিক ছিল আমার মায়ের। মা চাইতেন, বিসিএস দিয়ে প্রশাসন বা তেমন কোনো সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে আমি চাকরি করি। কারণ, এ জায়গা থেকে দেশ ও দশের কল্যাণে কাজ করা যায় অনায়াসে। সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধাও অনেক।
প্রভাবও থাকে সেই সঙ্গে। আমি এমন মানুষও দেখেছি, যাঁরা শুধু অবসর জীবনে নানান সুবিধা গ্রহণের আশায় সরকারি চাকরি করতে চান, বদ্ধপরিকর থাকেন। যার মধ্যে অন্যতম হলো আজীবন পেনশন পাওয়া। এই সুবিধা একজন চাকরিজীবী ব্যক্তিকে আর্থসামাজিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকে, তাঁরা এমনটাই মনে করেন। আবার আরেকটা দল আছে যারা ‘সরকারি মাল তো দরিয়ায় ঢাল’ এমন মানসিকতায় উপরি লাভে মোহাচ্ছন্ন থাকে। সরকারি পদপদবিতে থেকে বাড়তি কামাইয়ের পথ পাওয়া যায় বলে তারা মনে করে। ভুক্তভোগীদের মতে, সরকারি কাজ বিনা পয়সায় সম্পন্ন করা যায় না। মানে, সরকারি সুবিধা পেতে টাকা খরচ করতে হয়।
এই টাকা যায় সরকারি চাকুরেদের পকেটে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় কমিশন। ফলে প্রাণপণ চেষ্টা চলে সরকারি চাকরি পেতে। চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারলেও ঘুষ দিয়ে হলেও সরকারি চাকরি তাদের চাই। ফলে ক্লিনার থেকে শুরু করে অফিসার পজিশন, সব ধরনের পদেই চাকরি-বাণিজ্য হতে দেখা গেছে। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি চাকরি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে দেখা যায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে। অর্থাৎ ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে কারও কারও কপালে সরকারি চাকরি জুটতে দেখা গেছে। নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে অর্থের বিনিময়ে সরকারি চাকরি পাওয়ার ঘটনা কিন্তু বহুদিন ধরেই এবং কম নয়। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবেও কারও কারও সরকারি চাকরি হয়।
- ট্যাগ:
- মতামত
- বিসিএস
- সরকারি চাকরি
- প্রশাসন