খরচে কুলাতে না পেরে শিশুদের পাত থেকে ডিম–দুধ বাদ
ঢাকার কারওয়ান বাজারে সবজি কুড়িয়ে তা বিক্রি করে সংসার চালান শিল্পী নামের এক নারী। কোনো দিন ২০০ টাকা, কোনো দিন ৩০০ টাকা আয় হয়। তা দিয়ে চলে শিল্পীর সংসার। পরিবারে তাঁর মা ও একটি শিশুসন্তান রয়েছে।
শিশুটিকে কী কী খাওয়ান—জানতে চাইলে শিল্পী বলেন, বেশির ভাগ সময় ডাল-ভাত। নিয়মিত ডিম, দুধ ও মাছ খাওয়ান কি না, এ প্রশ্নের জবাবে শিল্পী বলেন, ওগুলোর দাম বেশি। মাঝেমধ্যে একটি-দুটি ডিম কিনে সবাই মিলে খান।
শিল্পী আরও বললেন, নিত্যপণ্যের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সামান্য আয় দিয়ে বাসাভাড়া দেওয়ার পর চাল, ডাল কিনতেই হিমশিম খেতে হয়। মাছ, মাংস, ডিম ও দুধের মতো আমিষজাতীয় খাবার কেনা সম্ভব হয় না। নিজেরা যেমন খেতে পারেন না, তেমনি নিজের শিশুসন্তানও তা থেকে বঞ্চিত।
দেশে নিত্যপণ্যের চড়া দামের কারণে দরিদ্র মানুষেরা সংকটে রয়েছেন। সেসব পরিবারে থাকা শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে পুষ্টি থেকে। অনেক দিন ধরেই মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ ছুঁই ছুঁই। খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেশি। ডিম, ব্রয়লার মুরগি, তরল দুধ, চাষের মাছ—সবকিছুর দামই চড়া। স্বল্প আয়ের পরিবারগুলোর প্রাণিজ আমিষের উৎস মূলত ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও চাষের মাছ। তারা খরচে কুলাতে না পেরে প্রাণিজ আমিষ বাদ দিয়েছে।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশুদের ওপর কী প্রভাব ফেলেছে, তা জানতে ঢাকার কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মহাখালী, পুরান ঢাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও মোহাম্মদপুরের ১৫ জন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁরা মূলত দিনমজুর, রিকশাচালক, ফুল বিক্রেতা, পানি বিক্রেতা, দোকানকর্মী, হকার ও গৃহকর্মের মতো পেশায় নিয়োজিত। ১৫টি পরিবারে শিশুর সংখ্যা ২১।