তোয়াজ তোষণ তদবির: কল্যাণ রাষ্ট্রের ভয়ংকর অসুখ

জাগো নিউজ ২৪ ড. মো. ফখরুল ইসলাম প্রকাশিত: ২০ অক্টোবর ২০২৪, ১০:১২

অন্তর্বর্তী সরকারের একজন তরুণ উপদেষ্টা সেদিন দ্বিতীয়বারের মতো বললেন, ‘পঞ্চাশজনের মধ্যে আটচল্লিশ জনই তদবির নিয়ে আসেন’ (ইত্তেফাক ১৬.০৯.২০২৪)। অর্থাৎ, তার কাছে বা দপ্তরে যারা দেখা করতে আসেন তাদের ছিয়ানব্বইভাগই আসেন কোনো না কোনো কাজ উদ্ধারে অবৈধ ‘তদবির’ নিয়ে। এটা সামাজিক ন্যায়বিচারের পরিপন্থি এবং কল্যাণরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটা ভয়ংকর অসুখ।


কথা হলো তদবিরকারীরা আগের মতো সচল হয়ে উঠলে বৈষম্য দূর হবে কীভাবে? তোয়াজ-তোষণ তদবিরের দ্বারা অপরের ‘হক’ কেড়ে নেয়া হয়। তদ্বিরের মাধ্যমে ঘুস, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, জালিয়াতিকে প্রশ্রয় দেয়ার সুযোগ তৈরি করে দেয়া হয়। এতে প্রকৃত মেধাকে চরম অবমূল্যায়ন ও অপমান করা হয়। এর ফলে অফিস-আদালত, সমাজ, রাষ্ট্রের প্রতিটি কর্নারে বৈষম্য মাধা চাড়া দিয়ে ওঠে। এর ফলে অরাজকতা তৈরি হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে ভাঙন ধরে। যেটা কিছুদিন আগে আমাদের দেশে প্রকট সামাজিক অরাজকতা সৃষ্টি করে সামাজিক বিপ্লব সূচিত করেছিল।


বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নায়কদের কাছে যদি শতকরা ছিয়ানব্বই ভাগ মানুষ তদ্বির নাম ভয়ংকর অসুখের বার্তা নিয়ে হাজির হবার সাহস পায় তাহলে দেশের অন্যান্য ক্ষেত্রে কি অরাজকতা চলছে তা নতুন করে বলার অপেক্ষায় নেই। তা হলে পরিবর্তন হলো কোথায়?



পদোন্নতি নিয়ে সচিবালয়ে আমলাদের মধ্যে মারামারি করার চিত্র মাত্র কয়েকদিন আগের। আগে যারা তোয়াজ-তোষণ তদবিরের দ্বারা লাইম লাইটে থাকতো তারা এখন অবস্থা বেগতিক আঁচ করতে পেরে বঞ্চিত, নিরীহ সহকর্মীদের গায়ে হাত তুলতে দ্বিধা করছেন না। আগে সরবে, গোপনে ঘুস, পুকুরের ইলিশ, ভেটকি, খামারের খাসি-গরু উপহার দিয়ে তদবির করে কাজ উদ্ধারে তৎপর ছিলেন তারা এখন সরাসরি মারামারি করতে দ্বিধা করছেন না। জাতি এখন এসব দৃশ্য আর দেখতে চায় না।


তাই পুরনো সব নিয়মকানুন, অন্যায়ের তালিকা ঝেড়ে- মুছে পরিষ্কার করে নতুনভাবে সবকিছু ঢেলে সাজাবার সময় এসেছে। একটি ন্যায়ানুগ নীতিমালা অনুসরণ করতে অপারগ হলে জাতি আবার আপনাদেরকে ধিক্কার দেবে অথবা ধাক্কা দিতেও দ্বিধা করবে না!


বছর খানেক পূর্বে একটি এক্সট্রা-একাডেমিক সভায় উপস্থিত ছিলাম। সেটি একটি নামকরা সভাঘরে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। অতিথিতে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল সভাঘরটি। তবে বক্তার সংখ্যাও ছিল অনেক। মঞ্চের সীমিত আসনে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় আরো কিছু নতুন আসন পেতে বক্তাদের বসার জায়গা করে দেয়া হয়েছিল। বক্তাদের ভিড়ে উপস্থাপকের ডেস্ক পর্দার আড়ালে চাপা পড়ে গিয়েছিল। উপস্থাপকের হাতে থাকা পূর্বনির্ধারিত বক্তাদের চেয়ে আরো অনেক নতুন বক্তা আসায় তিনি বার বার নাম ভুল করে উপস্থাপন করছিলেন এবং নেতাদের ধমক খাচ্ছিলেন।


আমিও সেখানে একজন বক্তা ছিলাম। আমার সেখানে মাত্র একঘন্টা থাকার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ আসনে বসে অপেক্ষা করার পর মূল অনুষ্ঠান শুরু হলো। সময় পেরিয়ে যাবার পর একেকজন রাজনৈতিক নেতা গোছের কেউ এলে তাকে তোয়াজ করে উচ্চস্বরে শ্লোগান দিয়ে মঞ্চে তুলে নতুন চেয়ার পেতে ঠেলেঠুলে বসিয়ে দেয়া হচ্ছিল। একজনের ফুলের তোড়া ছিনিয়ে নিয়ে অনির্ধারিত আরেকজনকে প্রদান, একজনের গলার উত্তরীয় টেনে খুলে নিয়ে আরেকজনকে দেয়া- ইত্যাদি করে সে এক বিশ্রি পরিবেশ ও বিরক্তিকর অবস্থা দেখার অভিজ্ঞতা সেদিন হয়েছিল।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও