নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের প্রতিরোধ করুন
এদেশে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর কোনো কোনো অমানবিক আচরণ মানবতা ও শান্তির ধর্ম ইসলামকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের সামনে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করছে। ফলে বিভ্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এতে ইসলাম ধর্মকে গভীরভাবে না জানা বক্তাদের দায় যেমন রয়েছে, তেমনইভাবে দায় রয়েছে নানা মতাদর্শে বিভক্ত আলেম এবং রাজনৈতিকভাবে সুবিধা লাভ করার মানসিকতায় থাকা জ্ঞানপাপীদের। বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তৈরি হওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যাত্রা শুরুর পর্যায়ে কেন যে ধর্মীয় উগ্রপন্থি কোনো কোনো গোষ্ঠী মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, তা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।
স্বৈরাচারের নানা আবর্জনা সরাতে ব্যস্ত থাকায় এবং সম্ভবত জরুরি অনেক বিষয়ে সরকারের তেমন প্রতিক্রিয়া না থাকায় মনে হচ্ছে, এখন যেন সব পক্ষ ওয়াকওভার পেয়ে গেছে। অনেক বেশি স্বাধীন হয়ে গেছে যেন সবাই। এরই একটি কুৎসিত প্রতিফলন ঘটেছে। কিছুসংখ্যক ধর্ম বিষয়ে মূর্খ মানুষ দেশের নানা অংশে সুফিসাধকদের মাজারে হামলা করে ভাঙচুর করছে। অবস্থা বিচারে মনে হচ্ছে, এরা সব আইনের ঊর্ধ্বে। এসব হিংসা ছড়ানো মানুষ কি জানে, আজ যাদের মাজার ভাঙচুর করা হচ্ছে, এ ধারার সুফিসাধকদের প্রচার করা ইসলামের শান্তি ও মানবপ্রেমের বাণীই আকৃষ্ট করেছিল সাধারণ মানুষকে। এদেশে ইসলাম প্রচারিত হয়েছিল সুফিদের হাত ধরেই।
মানুষের মধ্যে সুফিদের প্রতি ভালোবাসা আছে বলেই উনিশ শতকে ওয়াহাবি ভাবধারার হাজি শরিয়তউল্লাহর অনুসারী ফরায়েজিরা মাজার ভাঙচুর করলেও জনসমর্থনের অভাবে এ আন্দোলন তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। এ কারণেই শরিয়তউল্লাহর মৃত্যুর পর তার ছেলে পির মুহসীন উদ্দিন দুদু মিয়া এ আন্দোলনকে কৃষক আন্দোলনে রূপান্তরিত করেছিলেন।
- ট্যাগ:
- মতামত
- রাজনৈতিক নৈরাজ্য
- নৈরাজ্য
- মানসিকতা