ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে কিছু কথা
অনেক বছর আগে দেশের প্রথম সারির একটি সরকারি মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাস দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। দূর থেকে হইচইয়ের শব্দ কানে ভেসে এলো। আরেকটু এগিয়ে মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন ক্যান্টিনের সামনে এসে বুঝতে পারলাম, ক্যান্টিনের ভেতরে মেডিকেল স্টুডেন্টদের একটি দল মিছিল নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে বের হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা ক্যান্টিনের ভেতর থেকেই তাদের রাজনৈতিক দলের প্রয়াত নেতার নাম নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে মুহুর্মুহু স্লোগান দিচ্ছেন। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাদের ওই ছোট দলটি স্লোগান দিতে দিতে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে বের হয়ে পড়ল। মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা একটি রাজনৈতিক দলের মিছিল নিয়ে যখন স্লোগানে স্লোগানে ক্যাম্পাস প্রকম্পিত করে তোলেন, তখন আর কারও বুঝতে বাকি থাকে না মেডিকেল শিক্ষার কী দশা!
একাধিক খ্যাতনামা চিকিৎসকের কাছে শুনেছি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার চাপ অনেক বেশি। পড়াশোনার চাপে নাকি তাদের প্রায়ই দিশেহারা হওয়ার মতো অবস্থা হতো। একবার একটি জেলার এক সিভিল সার্জন কথায় কথায় আমাকে বলেছেন, মেডিকেল কলেজে পড়াকালে ডাইনিং রুমে গিয়ে খাবারের অপেক্ষা করার সময় অনেকের মতো তার হাতেও একটা বই থাকত। অর্থাৎ তখনকার সময়ে মেডিকেলের পড়ালেখার চাপ এতটাই বেশি ছিল যে, তাদের অন্য কোনো দিকে মনোযোগ দেওয়ার সময়ই ছিল না, নষ্ট করার মতো সময় থাকত না হাতে; রাজনৈতিক মিছিল-মিটিং তো দূরের কথা! কাজেই ডাইনিং রুমের সামনের কিউতে দাঁড়িয়ে হোক কিংবা ক্যান্টিনের ভেতরে চায়ের টেবিলে হোক, সব সময় শুধু পড়া আর পড়া। আর আজকাল মেডিকেল কলেজের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই রাজনীতির পেছনে তাদের পড়ালেখার একটা বিরাট সময় ব্যয় করেন। তাদের বেশির ভাগই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের অনুসারী হয়ে ওঠেন!