বাংলাদেশ কেন বিনিয়োগ আকর্ষণে পিছিয়ে

প্রথম আলো মামুন রশীদ প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩:০৮

২০০৪ সালে তখন টান টান উত্তেজনা। ভারত-চীন সীমান্তে অস্থিরতা। উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে উৎসাহ প্রদানের অভিযোগ চীনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যেই চীনের প্রেসিডেন্ট হু জিন তাও আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর মধ্যে আলোচনা চলছে। 


চীনা পক্ষ থেকে প্রধান চাওয়া ছিল চীনের বৃহৎ কোম্পানিগুলোর জন্য ভারতের বর্ধিষ্ণু বাজার খুলে দেওয়া। সেই থেকে বিভিন্ন বিরোধ আর বৈশ্বিক উত্তেজনা নিয়েও ভারতের বাজারে চীনা কোম্পানির ব্যবসা বাড়ছে। ভারতের জনপ্রিয় নায়িকারা চীনা পণ্যের মডেল হয়ে মাঝেমধ্যে জনরোষের মুখেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। 


বেশ কিছুদিন আগে ভারতের নেতৃস্থানীয় পত্রিকা দ্য হিন্দুর হেডলাইন ছিল—যখন গণচীনে মার্কিন কোম্পানি বিনিয়োগ প্রত্যাহার করছিল, তখন কেন কোনো ভারতীয় কোম্পানি তা কিনে নিল না। 

বাংলাদেশ না পারছে বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে, না পারছে বাইরে বিনিয়োগ করতে। এই অভিযোগ বহুদিনের। এখন শোনা যাচ্ছে যে বিশ্বের প্রায় এক হাজার প্রখ্যাত ব্যবসায়ী বা গ্রুপকে নাকি বাংলাদেশে বিনিয়োগে প্রণোদিত করা হবে। এমনটা যেকোনো বিনিয়োগপ্রত্যাশী দরিদ্র দেশের জন্য সুসংবাদ, তাতে সন্দেহ নেই। 


স্থানীয় পুঁজির দারিদ্র্য কমাতে কিংবা প্রযুক্তি হস্তান্তরের নিমিত্তে বিশ্বের সব দেশের সরকারই বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করে থাকে। বিনিয়োগ পাওয়ার খাতিরে নানা সুবিধাও দেয়। আমরা জানি কোভিড অতিমারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বাজার এখন অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। বিনিয়োগ থেকে আসে কর্মসংস্থান, বাড়ে রাজস্ব, কমে দারিদ্র্য।


● স্থানীয় পুঁজির দারিদ্র্য কমাতে কিংবা প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য বিশ্বের সব দেশের সরকারই বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করে থাকে। 


● বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশের নীতিগত ও পরিচালনগত দুর্বলতা রয়েছে। বিদেশি কোম্পানিগুলোর কাছে অনেক বিকল্প থাকায় তারা পছন্দমতো দেশ নির্বাচন করতে পারে।


● বিদ্যমান ব্যবসার পাশাপাশি আমাদের নতুন নতুন বাজার ধরতে হবে। শুধু বস্ত্র খাতে ইউরোপের ওপর ভর করে থাকলে চলবে না।


● নতুন সরকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত নতুন বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যারা ইতিমধ্যে বিনিয়োগ নিয়ে এসেছে, তাদের দেখভাল করা।



প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) হলো এক দেশ থেকে আরেক দেশে সরাসরি বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা। বিদেশি কোম্পানিগুলো মূলধন হিসেবে নগদ বা শিল্পের যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তি নিয়ে আসে। বিদ্যমান ব্যবসা থেকে অর্জিত মুনাফা আবার বিনিয়োগও করে। এক কোম্পানি থেকে অন্য কোম্পানি ঋণ (ইন্ট্রা-কোম্পানি লোন) নিয়ে বা শেয়ার কিনে বিনিয়োগ করে। 


এফডিআইবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে গ্রহণ করতে হয় নানা ধরনের নীতি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে কোনো কার্যকর বিনিয়োগ নীতিমালা নেই। বিনিয়োগ আকর্ষণে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বিনিয়োগের চেয়ে সরকারগুলোকে ঋণের পেছনেই বেশি ছুটতে দেখা গেছে। 


২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে নিট এফডিআই প্রবাহ কমেছে সাড়ে ৫ শতাংশ। এফডিআই বাড়াতে দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ৩৯টি হাইটেক পার্ক তৈরি করা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে ওয়ান স্টপ সার্ভিস ব্যবস্থা। তবু বিনিয়োগ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়নি।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে আগের তুলনায় নিট এফডিআই প্রবাহ কমেছে ৫ দশমিক ৫২ শতাংশ। একই সময়ে নতুন বিদেশি মূলধনি বিনিয়োগ কমেছে ৪০ দশমিক ৯১ শতাংশ। আর ইক্যুইটি ক্যাপিটাল স্টক কমেছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।


আঙ্কটাডের ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০২৩ অনুসারে ২০১৭-২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে বার্ষিক গড় এফডিআই এসেছে ২৯২ কোটি ডলার, যা জিডিপির শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। ‘রূপকল্প ২০৪১’ অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত অর্থনীতির দেশে পরিণত হতে হলে বার্ষিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ দশমিক ৬৬ শতাংশের সমপরিমাণ এফডিআই পেতে হবে।


বিশ্বের ৩৫তম বড় অর্থনীতির এই দেশ কেন আশানুরূপ বিদেশি বিনিয়োগ পাচ্ছে না? কেন দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়া সত্ত্বেও জিডিপির হিসাবে এফডিআইয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ? এ অঞ্চলে মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশও জিডিপির শতাংশ হিসাবে এফডিআইয়ে এগিয়ে। 


২০২২ সালে মালদ্বীপ এফডিআই পেয়েছে ৭২ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা জিডিপির প্রায় ১১ দশমিক ৭০ শতাংশ। ওই বছর ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কা পেয়েছে ৮৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা দেশটির জিডিপির ১ দশমিক ২০ শতাংশ। দেশ দুটি মূলত এফডিআই সুরক্ষায় নীতিমালা প্রণয়ন করে তা কার্যকর করেছে। মালদ্বীপ যেমন পর্যটন খাতে মনোযোগ দিয়েছে, শ্রীলঙ্কাও কৃষি, পর্যটন ও তথ্যপ্রযুক্তিতে গুরুত্ব দিয়েছে। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও