জনগণের হিস্যা ছাড়া সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটবে?

প্রথম আলো নাহিদ হাসান প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২:৫০

জনগণের রাষ্ট্র নির্মাণের কারিগরদের অন্যতম কাজ হলো ব্যয় সাশ্রয় করা। সর্বনিম্ন জোগান দিয়ে সর্বোচ্চ ফল নিয়ে আসা। ১৯১৭ সালে বিপ্লবের পর রাশিয়া ১৯২০ সাল নাগাদ ১২ থেকে ১৪টি দেশের একযোগে হামলা ঠেকিয়ে ১৯৩০ সালের মহামন্দায় পৃথিবীর দ্বিতীয় সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হলো। কেমন করে? কারণ, রুশ নেতৃত্ব জনগণকে সেই উপলব্ধি দিতে পেরেছিলেন, রাশিয়ার উন্নতি মানে তাদের উন্নতি। দেশের সম্পদের ওপর দাঁড়িয়েই তাঁরা এই অসাধ্যসাধন করেছেন।


এমন অসাধ্য সাধনের জন্য চাই জনগণের মালিকানাবোধ। এমন মালিকানাবোধ থাকলেই আমাদের তরুণেরা বলতেন পারেন, ‘বুক পেতেছি গুলি কর’। কিন্তু সেই মালিকাবোধ পোক্ত হবে কখন? যখন দেখবেন রাষ্ট্রের নেতারা চিলমারী থেকে সেন্ট মার্টিন পর্যন্ত জনগণের কাছে যাচ্ছেন।

২.
আর্কিমিডিস যখন কপিকল পদ্ধতি আবিষ্কার করে বলেছিলেন, কপিকলটা বসানোর জায়গা দাও, পৃথিবীটা নাড়িয়ে দেব। আমরাও যা করব, তা এ দেশের বিদ্যমান অবকাঠামোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করেই করতে হবে সাশ্রয়ী সংস্কৃতি গড়ে তুলে। এ দেশের সৃজনশীল মানুষ পানির পাম্পকে নৌকায় জুড়ে দিয়ে নৌযোগাযোগে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। নদী খনন করতে হবে? খননের জন্য বাজেট দেওয়ার দরকার নেই। জনগণকে নদীর সীমানা দেখিয়ে মাটি তুলে নিতে বলেন, দেখবেন ১০ ফুটের জায়গায় ১২ ফুট গভীর করে বিনা টাকায় নদী খনন হয়ে গেছে।


একদিকে সংস্কৃতিকর্মীদের মহড়ার জায়গা নেই, প্রদর্শনের মঞ্চ নেই। পড়াশোনার পাঠাগার নেই, আলোচনার জন্য নেই ফ্রি সেমিনার হল। অন্যদিকে জায়গা, ভবন ও মঞ্চ বেশুমার পতিত হয়ে আছে। অব্যবহৃত জেলা ও উপজেলা সদরের টাউন হলগুলো, পৌর মার্কেট, উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন পরিষদ ভবনগুলো। নদী, পুকুর, পার্ক ও হাট উৎসবহীন।



শিল্পীরা না খেয়ে মরেন, যাপন করেন অসম্মানিত জীবন। বই পড়ার সুযোগ নেই। শিল্পীদের পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। চিত্রশিল্পীদের ছবি প্রদর্শনের গ্যালারি নেই, সিনেমা দেখার সুযোগ নেই। ব্যক্তিমালিকানার হলগুলো বন্ধ হওয়ায় সিনেমা দেখাও প্রায় বন্ধ।


তাহলে? মুক্তিযুদ্ধের আর গণ–অভ্যুত্থানের বাংলাদেশ জনগণের হয়ে গড়ে উঠবে না?


৩.
টাউন হলগুলোর ডিজাইন দেখলেই বোঝা যায়, হাসিনা সরকার টাউন হল চিনত না, কমিউনিটি সেন্টার চেনে। প্রত্যেক স্বৈরাচারের মতো তারাও চায়নি সংস্কৃতিচর্চার বিকাশ। এগুলোর টাইলস উঠিয়ে কিছু ইট ধাপে ধাপে বসালেই সত্যিকারের টাউন হলে পরিণত হবে। টাইলস বসানোর সংস্কৃতি থেকে বের হলে লাখখানেক টাকাতেই এটি সম্ভব। সে টাকাও স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তিরা দেবেন, যদি কোথাও দাতা হিসেবে তাঁর নাম থাকে।


টাউন হল এলাকা সংস্কৃতিকর্মীদের এলাকা বলে চিহ্নিত করতে হবে। চত্বরের জমিতে ঘর তুলে সাংস্কৃতিক সংগঠনের জন্য বরাদ্দ করলেই সংগঠন গড়ে তোলার জোয়ার উঠবে। ঘর তুলে দেবেন স্থানীয় ধনাঢ্যরা। শ্বেতপাথরের ফলকে শত বছর ধরে দাতাদের নাম-পরিচয় জ্বলজ্বল করবে। এখনো কারমাইকেল কলেজে ১৯০৮ সালের দাতাদের নাম আমরা পড়তে পাই। ইউএনওরা ডাক দিলে তাঁরা এগিয়ে আসবেন।


প্রতিটি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স আছে। প্রতিটিই তিনতলা। যাঁদের ভাড়া দেওয়া হয়েছে, তাঁরা ক্ষমতার জোরে নিয়েছেন। দীর্ঘদিন ভাড়া দেন না। লোকজনের আসা-যাওয়া না থাকায় মার্কেটও জমেনি। তৃতীয় তলায় বড় একটা সেমিনার রুম আছে, সেটিও কখনো ব্যবহৃত হয় না। আর নিচের তলা দুটি ১০০ বর্গফুটের অনেকগুলো দোকান।
নিচতলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য বরাদ্দ রেখে দ্বিতীয় তলা পাবলিক লাইব্রেরিতে পরিণত করা যায়। এই লাইব্রেরি পরিচালিত হবে জেলা পাবলিক লাইব্রেরির তত্ত্বাবধানে। আর তৃতীয় তলার সেমিনার রুমটি বিভিন্ন পাঠচক্র গ্রুপসহ সবার জন্য ফ্রিতে ব্যবহারের সুযোগ রাখতে হবে। আর ছাদে চা-শিঙাড়ার দোকান হবে, যেটি পরিচালনা করবে একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও