পুরুষতান্ত্রিক মস্তিষ্কে মুক্তি পাক কন্যাশিশু
লোকে বলে, মেয়ে হয়ে জন্মালে নাকি অনেক কিছু সহ্য করতে হয়। মানিয়ে নিতে হয় পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার সঙ্গে। জন্মলগ্ন থেকে একটি কন্যাশিশুকে আবদ্ধ করা হয় বৈষম্যের বাক্সে। সেটি শুরু হয় পোশাক কিংবা খাবারের থালা থেকে। সমাজের আধুনিকায়ন নিয়ে উঠেপড়ে লাগলেও আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ মস্তিষ্ক ও মননে কন্যাশিশুদের বিষয়ে কতটা আধুনিক, সেটিই এক বিরাট প্রশ্ন।
একুশ শতকে কন্যাশিশুরা বিশ্বে বাধাহীন গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ঠিক এ সময়েও আমাদের সমাজে কন্যাদের মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠার গতি যেন খানিক ধীরই রয়ে গেছে। পুত্রসন্তানকাঙ্ক্ষী সংসারে জন্ম নেওয়া অধিকাংশ কন্যাশিশু এখনো অবহেলার শিকার। অসচ্ছল পরিবারগুলোতে তারা হয়ে ওঠে বোঝা। কন্যাসন্তান পরিবারের জন্য অভিশাপ—সমাজের এ ধারণা এখনো বদলায়নি। এর দায় প্রথমত পরিবারের। সমাজের বিভিন্ন ট্যাবুর কারণে বাবা-মা থেকে শুরু হয় পুত্র-কন্যার মধ্যে পার্থক্য। ভালো স্কুলে পড়ানো কিংবা উৎসবে ভালো পোশাক—এসবে গুরুত্ব পায় পুত্ররা। একুশ শতকে এসেও কন্যাকে যে পর্যন্ত না পাত্রস্থ করা হচ্ছে, সে পর্যন্ত যেন মা-বাবার স্বস্তি নেই।
শুধু কি তাই! এ সমাজে আজও ‘বাবার বাড়ির’ সম্পদে শতভাগ অধিকার পুত্রের। সেখানে কন্যারা করুণারই পাত্র হয়ে থাকে এখনো।
আইনকানুন সবই এখানে হেরে যায় শুধু পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার কারণে। শুধু পুরুষ মস্তিষ্ক যে এমন চিন্তার উৎস, এমনটা নয়। নারীরাও এ ক্ষেত্রে একই নৌকার মাঝি। যে মায়ের তার মেয়ের অধিকার নিয়ে কথা বলার কথা, তিনি সমাজের শেখানো বুলিতে নিজের কন্যার বিপক্ষে অবস্থান নেন। এ ক্ষেত্রেও কারণ কিন্তু ওই—পুরুষতন্ত্র। পুত্রই পরিবারের কর্তা হয়ে উঠবে, আর মেয়ে যাবে অন্য পুরুষের বাড়ি।
- ট্যাগ:
- লাইফ
- জাতীয় কন্যা শিশু দিবস