ফিজিওথেরাপি কলেজ নির্মাণের বাধা অপসারিত হোক

সমকাল আলমগীর হোসেন প্রকাশিত: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০২

বলার অপেক্ষা রাখে না, আমাদের জাতীয় জীবনের জনগুরুত্বপূর্ণ সব খাতেই বিশৃঙ্খলায় ভরপুর। স্বাস্থ্য খাতে এই বিশৃঙ্খলা এতটাই দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে যে, সামর্থ্যবান মানুষ এখন দেশের চিকিৎসকদের ওপর ভরসাই রাখতে পারছেন না। অগত্যা পাড়ি জমাচ্ছেন উন্নত দেশগুলোতে। সেখানে গিয়ে চিকিৎসা নিতে অক্ষম যারা, তারাও নিদেনপক্ষে প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলে যাচ্ছেন। যদিও ‘সামর্থ্যবান’ এসব মানুষের বাইরেও সিংহভাগ দেশের মাটিতেই চিকিৎসার সুযোগ খুঁজে নিতে বাধ্য হন। 


স্বাস্থ্য খাত নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনগুলোর দিকে যদি দৃষ্টি দিই, এ খাতের ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ আমাদের বিস্মিত না করে পারে না! স্বাস্থ্যসেবা বলতে শুধু অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া এবং ওষুধ খাওয়াকেই বুঝে থাকে অধিকাংশ মানুষ। প্রকৃত অর্থে এটি স্বাস্থ্যসেবার একটি অংশ মাত্র। 


স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বা প্রতিরোধমূলক সেবা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কিন্তু চিকিৎসায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার বিকাশ আমাদের দেশে সেভাবে হয়নি বা হতে দেওয়া হচ্ছে না। তুলনামূলক তথ্য পর্যালোচনা করলে এটি বুঝতে অসুবিধা হয় না, এর পেছনে এ খাতটির স্বার্থান্ধ অংশীজনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ হস্তক্ষেপই বহুলাংশে দায়ী। 


চিকিৎসা-সংশ্লিষ্টদের তথ্য বলছে, দেশে প্রায় দুই কোটি মানুষ শারীরিক নানা ধরনের ব্যথা, ব্যথাজনিত উপসর্গ ও প্রতিবন্ধিতার শিকার। আক্রান্তদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে অন্যতম চিকিৎসাসেবা ‘ফিজিওথেরাপি’। বিশ্বের অগ্রসর দেশগুলোতে চিকিৎসাসেবায় ফিজিওথেরাপি অপরিহার্য অনুষঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও বাংলাদেশে তা সেভাবে বিকশিত হয়নি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাম্প্রতিকতম গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর ২৬ শতাংশ পূর্ণবয়স্ক মানুষই শারীরিক পরিশ্রম করেন না। অন্তত এক ডজন রোগের জন্য দায়ী শারীরিক পরিশ্রম না করার এই প্রবণতা। এই ভয়াবহতা থেকে মানবস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় ফিজিওথেরাপির ব্যাপক প্রসার খুব জরুরি।



ব্যথা ও ব্যথাজনিত নানা উপসর্গ, বার্ধক্যজনিত সমস্যা, স্ট্রোক, প্যারালাইসিস, সেরিব্রাল পালসি, অটিজম, অবেসিটি, হৃদরোগ, মেরুদণ্ডে আঘাত, সড়ক দুর্ঘটনা, ক্যান্সার, ডায়াবেটিসসহ নানাবিধ অসংক্রামক ব্যাধিতে বাংলাদেশে মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে একটি বড় অংশ আংশিক বা পুরোপুরি প্রতিবন্ধিতায় ভুগছে। বিশেষজ্ঞরা এসব সমস্যায় প্রধান চিকিৎসা ব্যবস্থা হিসেবে ফিজিওথেরাপির কথা উল্লেখ করেছেন। তাদের মতে–পক্ষাঘাত, বিকলাঙ্গতা, সড়ক দুর্ঘটনা, শারীরিক প্রতিবন্ধিতা এবং বড় কোনো অস্ত্রোপচারের পর রোগীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদি রোগ, বাত ব্যথা ও পক্ষাঘাতের রোগীরা ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপি গ্রহণ করে সুস্থ জীবনে ফিরে এসেছেন।  


আজ ৮ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘কোমর ব্যথায় ফিজিওথেরাপি একটি কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি’। প্রতিবছর দিবসটিকে ঘিরে সংশ্লিষ্টরা এর গুরুত্ব ও বিকাশের পথে বাধাগুলো তুলে ধরে প্রতিকার দাবি করেন। ব্যক্তিগতভাবে সত্তরোর্ধ্ব বয়সসীমায় পৌঁছে যেসব শারীরিক সমস্যা অনুভব করছি, বিশেষ করে ব্যথাজনিত উপসর্গে পীড়িত হওয়ার কারণে এর সম্যক গুরুত্ব অনুধাবন অনেক সহজ হয়েছে। বর্তমানে তরুণ থেকে বৃদ্ধ–অনেকেই যে এই ব্যথাজনিত উপসর্গে আক্রান্ত, তা দেশে চিকিৎসা নেওয়া ব্যক্তিদের পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে।  


কভিড-পরবর্তী অভিঘাতে এ উপসর্গে বহু মানুষ ধুঁকছে, যাকে চিকিৎসকরা লং কভিডও বলছেন। কিন্তু পরিবেশগত বিপর্যয়ে বাসযোগ্যতা হারানো, খাদ্যে ভেজাল, লাইফস্টাইলে পরিবর্তন ইত্যাদি কারণে ব্যথাজনিত রোগের ব্যাপকতায় বিশেষজ্ঞরা কয়েক দশক ধরেই ফিজিওথেরাপির প্রাতিষ্ঠানিক কলেবর বৃদ্ধির প্রতি জোর দিয়ে আসছিলেন। বর্তমানে বিশ্বমানের সব বিশ্ববিদ্যালয় ফিজিওথেরাপি বিষয়ে পিএইচডি, মাস্টার্স, ব্যাচেলর ডিগ্রি প্রদান করলেও স্বাধীনতার ৫৩ বছরে ফিজিওথেরাপি শিক্ষার জন্য বাংলাদেশে একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান গড়ে না ওঠা লজ্জার। অনেক প্রতিবন্ধকতার মাঝেও যারা ফিজিওথেরাপি বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই দেশে সরকারি চাকরির সুযোগ পাচ্ছেন না। এর ফলে কেউ বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন, কেউবা আবার পেশা পরিবর্তনও করছেন। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও