মুখ খুললে আমার ভাইকে আয়নাঘরে নিয়ে যেত
খ্যাতিমান নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদের জন্মদিন আজ। ভাই খ্যাতিমান রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সাদি মহম্মদের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রয়াণের পর বিমর্ষ দিনযাপন করছিলেন তিনি। মায়ের মৃত্যুর ক্ষত না শুকাতেই ভাইয়ের মৃত্যু তাকে যেন চিরবিষণ্নতায় ডুবিয়ে রেখেছে। দুদিন আগে নিজের দিনযাপন, ভাইয়ের মৃত্যুর কারণ, রাষ্ট্রীয় দুর্নীতিসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন এই শিল্পী। রাসেল মাহমুদ ও শিবলী মোহাম্মদ-এর কথপোকথন তুলে ধরা হল সাক্ষাৎকার আকারে।
কেমন আছেন?
শিবলী মোহাম্মদ : আর থাকা! আছি।
কীভাবে দিন কাটাচ্ছেন?
শিবলী মোহাম্মদ : সকালে জিম করি, সপ্তাহে ৫ দিন মাস্টারি করি। দুদিন ছুটি।
জন্মদিনে কী পরিকল্পনা?
শিবলী মোহাম্মদ : (এক মুহূর্ত নিরবতা) … ভুলেই গিয়েছিলাম। গত তিনটা বছর এত মানুষকে হারিয়েছি … বাড়িতে কারও আর জন্মদিন উদযাপন করা হয় না। জীবন আসলে ফুরিয়ে গেছে। যারা গেছে, এখন তাদের মৃত্যুদিন সেলিব্রেট করতে হবে। জীবনটা উল্টো হয়ে গেছে।
আপনার মা বেঁচে থাকতে জন্মদিনে অনেক আনন্দ হতো, মনে পড়ে সেসব দিন?
শিবলী মোহাম্মদ : হ্যাঁ, আম্মাকে মাঝখানে বসিয়ে আমরা কেক কাটতাম সবাই মিলে। ভালো খাওয়া-দাওয়া হতো। বাচ্চারা (নাচের শিক্ষার্থীরা) কেক নিয়ে আসতো, বলতো, স্যার কেক কাটেন, সবাই মিলে খাই। এবার কোনো আনুষ্ঠানিকতা নেই। আর কখনও হবে কি না জানি না।
ভাইকে (সাদি মহম্মদ) স্মরণীয় করে রাখতে কিছু করার কথা ভেবেছেন?
শিবলী মোহাম্মদ : আমি ওসবে বিশ্বাসই করি না। আমরা, ওর ভক্তরা প্রতি মুহূর্তে ওকে স্মরণ করি। ওর ঘরের ভেতরটায় যাই, ওর ব্যবহৃত জিনিসপত্র ছুঁয়ে দেখি। একজন গুণী মানুষকে স্মরণ করতে কি বড় করে স্ট্যাচু বানাতে হবে? সে বাঙালির হৃদয়ে আছে। মানুষ তার গান শুনে চোখের পানি ফেলে, এটাই যথেষ্ট।
আপনারা কখনও মুখ খোলেননি কেন?
শিবলী মোহাম্মদ : আমাদের মনে শুধু কষ্টই না, ভয়ও ছিল। মুখ খুললে আমার ভাইকে আয়নাঘরে নিয়ে যেত। আমার ভাই তারিক সিদ্দিককে মুখের ওপর চোর বলেছিল। যমুনায় (রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন) তারিক সিদ্দিকের সঙ্গে এসব নিয়ে তর্ক করতে গিয়েই তো প্রথমবার শোয়েবের হার্ট অ্যাটাক হল। শোয়েব কতটা সৎ অফিসার, সেটা সবাই জানে।
- ট্যাগ:
- বিনোদন
- জন্মদিন
- শিবলী মোহাম্মদ