মৃত্যুর ‘কু’ ডেকে যাওয়া প্লাবিত প্রান্তরে
কিছু বুঝে ওঠার আগে জলোচ্ছ্বাসের মতো গোঁ গোঁ করে স্রোত এসে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেল, রাস্তাঘাটের কিনারা নেই, কে কোথাও আছে, বেঁচে আছে না মরে গেছে; তাও জানা নেই। চারদিক থই থই। যেন মৃত্যুর কুহু ডাক দিয়ে যাচ্ছে প্লাবিত প্রান্তরে। দিনরাত সাপ-ব্যাঙ, গরু-ছাগল আর মানুষ মিলে ‘সর্বপ্রাণ’ হয়ে মৃত্যুভয় জাগানিয়া ফেনীর বন্যার্ত জনপদের সন্তান হিসেবে শুধু পেশাগত দায়িত্ব পালনই তার কাছে যথেষ্ট মনে হয়নি।
হঠাৎ দানব হয়ে আসা হড়কা বানের দিনগুলোতে সাঁতার না জেনেও গলা পানি ভেঙে, ইট-পাথর, শামুক-ঝিনুক আর কাঁটায় ক্ষতবিক্ষত হওয়া পা টেনে টেনে কীভাবে যে আটকেপড়া মানুষের কাছে পৌঁছে গেছেন, কাঁধে-পিঠে করে তাদের উদ্ধার করেছেন, তা এখন ভাবলেই তার গা শিউরে ওঠে।
বিদ্যুৎ নেই, মোবাইল চলে না; চারটি রাতের সঙ্গে হাহাকার ও আর্তি মিলে দিনগুলোও যেন ঘোর বিপদের সংকেত বাজিয়ে গেছে তাদের জীবনে। তবু থেমে থাকা হয়নি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ফেনী প্রতিনিধি নাজমুল হক শামীমের। নিজের সেই অভিজ্ঞতার কথা পাঠককে জানাচ্ছেন তিনি।
‘এমন অবর্ণনীয় দুর্ভোগ যেন জীবনে না আসে’
বন্যার ফেনী, ভয়াল ফেনী। এ যেন এক অচেনা জেলা, অচেনা সময়, অচেনা ঘটনা। কিছু বুঝে উঠার আগেই সব যেন লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। বিচ্ছিন্ন হয় যোগাযোগ, রাত কাটে নির্ঘুম। দুর্গতদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠে চারপাশ।
২০ অগাস্ট, মঙ্গলবার রাতে আমার এক সহকর্মী নজির আহমদ রতন ফোনে বললেন, ‘শামীম, ফুলগাজীতে পানি তো বাড়ছে, কাল সকালে (২১ অগাস্ট) ফুলগাজী যাবে তুমি?’ আমি বললাম, ‘অবশ্যই যাবো।’
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- বন্যা দুর্গত