সব ক্ষেত্রেই স্বৈরাচারী উপাদান বিলুপ্ত করা জরুরি

www.ajkerpatrika.com মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১১:৫৪

ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক। শিক্ষকতা এবং গবেষণার পাশাপাশি তিনি জাতীয় ইস্যুতেও সক্রিয় অ্যাকটিভিস্ট। তিনি শিক্ষক নেটওয়ার্কের একজন গুরুত্বপূর্ণ সংগঠকও। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কার নিয়ে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সঙ্গে।


অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী?


তানজীমউদ্দিন খান: কতটুকু আশাবাদী সেটা তো সংখ্যা দিয়ে পরিমাপ করার সুযোগ নেই। এই গণ-অভ্যুত্থানটা অবশ্যম্ভাবী ছিল। যেহেতু নতুন বাংলাদেশ গড়ার কথা উঠেছে, সেহেতু অন্তর্বর্তী সরকারের বিকল্প ভাবার আপাতত সুযোগ নেই। 



দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মূলত একধরনের স্বৈরাচারী ব্যবস্থায় চলে। এ ক্ষেত্রে কীভাবে সংস্কার করা যেতে পারে?


তানজীমউদ্দিন খান: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তিয়াত্তরের অধ্যাদেশের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই অধ্যাদেশে অনেক স্ববিরোধিতা রয়েছে। যদিও এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে এই অধ্যাদেশ আমাদের একাডেমিক ও চিন্তার স্বাধীনতার একমাত্র রক্ষাকবচ। এই অধ্যাদেশে এমন কিছু উপাদান আছে, যেখানে উপাচার্যকে স্বৈরাচারী হওয়ার সব ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন আছে।


এটার অবস্থা অনেকটা আমাদের সংবিধানের মতোই! সে জন্যই, বিশেষ করে সরকারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্কটা কী হবে, সেটা পুনর্নির্ধারণের মাধ্যমে অধ্যাদেশে লুকিয়ে থাকা স্বৈরাচারী উপাদানগুলো বিলুপ্ত করা খুব জরুরি। ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের সংস্কার বর্তমান বাস্তবতায় খুব জরুরি। শুধু অধ্যাদেশ নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু প্রচলিত অনুশীলন. যেমন শিক্ষক সমিতি এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সব ধরনের নির্বাচনে সরকারদলীয় শিক্ষকদের কারা কীভাবে মনোনয়ন পাবেন, সেটাও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উপাচার্য ঠিক করে দেন।


তাই এই স্বৈরাচারী কাঠামোয় এসব নির্বাচনের ফলাফল প্রভাবিত হয়। ২০০৮ সালের পরে আমরা দেখেছি, একজন চাকরিপ্রার্থীর যে ধরনের যোগ্যতা থাকার কথা, সেটাকে তোয়াক্কা না করে দলীয় পরিচয় এবং আনুগত্যের ওপর ভিত্তি করে অনেক বড়সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যদিও এটা কম-বেশি আগে থেকেই ছিল। তবে ২০০৮ সালের পর থেকে এ রকম অযোগ্যদের নিয়োগ কোনো রাখঢাক ছাড়া নির্লজ্জভাবে হয়েছে অনেক বড় আকারে। ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ৯০৬ জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন সেই সময়কার উপাচার্য। যত্রতত্র বা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বিভিন্ন বিভাগ খোলা হয়েছে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শুধু দলীয় ভোটারের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টায়। এগুলো দেখে মনে হচ্ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় বুঝি কোনো একটি সরকারদলীয় মালিকানার শিল্পপ্রতিষ্ঠান!



এটা করতে গিয়ে আসলে সংখ্যাগত আধিপত্যের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনী কাঠামোকে দলীয়ভাবে কুক্ষিগত করা হয়েছে। শিক্ষক সমিতিও এর ব্যতিক্রম নয়। শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে সরকারদলীয় যাঁরা অংশগ্রহণ করেন, তাঁদের একটা বড় অংশ আবার প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকেন। এটা কিন্তু ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’। প্রশাসনিক দায়িত্বে যিনি থাকেন, তিনি আবার কী করে, দর-কষাকষির এজেন্ট হিসেবে শিক্ষক সমিতিতে থাকেন?


কেউ যদি হলের প্রভোস্ট হন, তিনি নিশ্চিতভাবে তাঁর হলের হাউস টিউটরদের ভোট নিশ্চিতভাবে পান বা জুনিয়র শিক্ষকদের হাউস টিউটর করার লোভ দেখিয়ে তাঁর পক্ষে ভোট নিশ্চিত করেন। শুধু তা-ই নয়, প্রভোস্টের প্রার্থীকে হাউস টিউটর ভোট দিচ্ছেন কি না, সেটা নিশ্চিত করার জন্য জুনিয়র শিক্ষকেরা ভোট দেওয়ার পর ব্যালটের ছবি তুলে প্রভোস্ট বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক সবচেয়ে বড় কর্মকর্তাকে নিশ্চিত করেন, তাঁদের দলের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন। একইভাবে ডিন, সিন্ডিকেট ও সিনেট নির্বাচনেও কারা প্রার্থী হবেন, সেটাও উপাচার্য নির্ধারণ করে দিতেন। উপাচার্যের সম্মতি বা আশীর্বাদের বাইরে খুব কম ক্ষেত্রেই কেউ নির্বাচনে তাঁদের দলের প্রার্থী হতে পারতেন। এভাবে সব ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সব সময় একটা স্বৈরাচারী কাঠামো জারি রাখা হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও