পানি আগ্রাসন: ভালো নয় লক্ষণ

জাগো নিউজ ২৪ ড. মাহবুব হাসান প্রকাশিত: ২৫ আগস্ট ২০২৪, ১১:৫২

কথিত নিম্ন-উচ্চতার ড্যাম ডম্বুরু ৩১ বছর আগে একবার খুলে দিয়েছিলো ভারত। আর ঠিক এই বৃষ্টির দিনে ওই বাঁধ আবারো খুলে দিতে হলো কেন? এই প্রশ্নের উত্তর আমরা পাবো ভারতের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মার বক্তব্যে। তিনি আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বলেছেন যে অতিবৃষ্টির কারণে ড্যামের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় নিম্নের অঞ্চল বন্যার কবলে পড়েছে।


তাঁর এই কথা প্রাথমিক চিন্তায় সত্য বলেই মনে হতে পারে। কিন্তু ডম্বুরুতে যে বাঁধটি জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করছে ( সেই বিদ্যুত থেকে ৪০ মেগাওয়াট আমাদের দেশে সরবরাহ করে এবং তার দামও নেয়। তিনি যে প্রচ্ছন্ন একটি হুমকি দিয়েছেন আমরা তা বুঝতে পারি। এটা বন্ধুসুলভ আচরণ নয় বরং দাদাগিরির ভাষা।) নিম্ন-উচ্চতার ড্যাম বলা হলেও আসলেই কি তা সত্য। একটি ড্যাম নির্মাণের জায়গা ঠিক করা হয় সেখানকার টপোগ্রামির ভূসংস্থান বা স্থান বিবরণ বিবেচনা করে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও নদীর প্রবাহ ও তার গতিপ্রকৃতি, স্রোতের গতিবেগ, সারা বছরের পানিপ্রবাহের ইউনিফায়েড হিসাব এবং সেখান থেকে কি পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে বা হতে পারে, তার প্র্রাক্কলন ইত্যাদির যোগফলের পরেই ড্যাম নির্মাণের কাজে হাত দেয়া হয়।



ওই রকম একটি ড্যামের ওপর দিয়ে পানি ওভারফ্লো ( উপচে পড়া) হবার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। দ্বিতীয়ত উজানে ওই কয়দিন বারিপাতের পরিমাণ রেকর্ড চেক করলেই পাওয়া যাবে আসল সত্য। আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক নদীর পানির প্রবাহ ও তার প্রাকৃতিক বিষয়আশয় প্রতিদিনই মনিটরিং করে ভাটির দেশগুলোকে জানানো ভারতে ইতিকর্তব্য। উজানের বৃষ্টিপাতের খবর আমরা জানি কিন্তু তা যে প্রবল বেগে ড্যামের ওপর আছড়ে পড়ে ওভারফ্লো করছে, এসংবাদ তারা বাংলাদেশকে জানায়নি। সেই আশঙ্কার রেকর্ড যদি ড্যাম কর্তৃপক্ষ পানি উপচে পড়ার শঙ্কা আছে বা হচ্ছে তাহলে তারা নিয়ন্ত্রিতভাবে পানি ছাড়ার পদক্ষেপ নিতে পারতো।


সেই পদক্ষেপের প্রাথমিক কাজ হলো ড্যামের খিড়কিগুলো কম মাত্রায় খুলে দিয়ে ওভারফ্লো থামানো। কিন্তু আমরা ভিডিওতে দেখলাম ডম্বুরু ড্যামের সব দরোজাই একসাথে খুলে দিয়েছে তারা এবং পানি এমন উচ্চ গতিতে লাফ মেরে নিচে নামছে যে মনে হচ্ছে তারা হিমালয় থেকে লাফিয়ে ভাটিতে নামছে। কিংবা ড্যামের একটি দরোজা/গেট খুলে দিয়েও পরিস্থিতি সামাল দেয়া যেতো। সেটা করা হয়নি। তার মানে দাড়াচ্ছে প্রণয় ভার্মা যে প্রণয়ের বাণী শুনিয়েছেন, সেটাকে ফেক বলাই শ্রেয়। কিন্তু আমরা সেটা বলবো না। আমরা বলবো পানি আগ্রাসনকে শাক দিয়ে মাছ ঢেকে রাখা’র সামিল, তিনি সেটাই করেছেন। এতে করে তাদের ভেতরমহলের সত্যটা উঁকি দিচ্ছে। পলাতকা আশ্রিতার জন্য এইটুকু তারা করতে দ্বিধা করবেন না, তা আমরা জানি।



ভারতের এই জলাগ্রাসনের কারণ কী? বাহ্যিক কারণ এটাই প্রথমত মনে হবে। কিন্তু এর বাইরে, যাকে বলা উচিত পেছনেও আছে আরো রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বহুস্তরীয় অভিসন্ধি। এটা প্রণয় ভার্মা বেশ ভালোই জানেন। তাকে সে সব শেখানো/পড়ানো ওপ্রশিক্ষিত হয়েছে। বিজেপি সরকার কি চাইছে সেটা এই `ঝি’কে মেরে মাকে (মাকে মানে বাংলাদেশকে শিক্ষা দিয়ে) বোঝানোর চেষ্টা করছে। তারা আটা, রুটি এবং ছাতু খেয়ে যে পাকা বুদ্ধির তহফিলদার হয়েছেন, আমরা ভাটির ভেতো বাংলাদেশিরা ভাত খেয়ে কিন্তু এতোটা ভেজা ও নরমপ্রকৃতির হইনি।


আমাদের জল-হাওয়ার সঙ্গে সন্ধি নেই, আছে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার রাজনৈতিক ও সামাজিক সাংস্কৃতিক ইতিহাস। ১৯৭১ সালে সেটা কি আমরা পাকিস্তানি সামরিক সরকারের নেতাদের বোঝাই নি? আমরা কি ভারতের সন্ধি ও অভিসন্ধির রসালো প্রেমের ব্যাপারে সচেতন নই? ভারত বন্দনা ও প্রেমে রাজনৈতিক দলগুলো কেয়ারফুল আচরণ করলেও এখানকার মানুষ গত ৫৩ বছর ধরেই জেনে আসছে, দেখে শিখেছে যে প্রতিবেশি ভারত আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র নয়। বরং ভারতের আগ্রাসনই তারা দেখেছে, শিখেছে। প্রায় প্রতিদিনই যে সীমান্তে বাংলাদেশি মানুষ গুলি করে হত্যা করছে বিএসএফ, স্বোচারি হাসিনা তা চোখ বন্ধ করে রেখে সময় পার করেছে। কারণ তিনি ও তার সরকার রাজনৈতিক দখলদার সরকার সিকিমের লেন্দুন দর্জি হতে চান।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও