জীবনেও বেওয়ারিশ, মরণেও বেওয়ারিশ তাঁরা

প্রথম আলো সোহরাব হাসান প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৪৩

কাকরাইল থেকে পল্টনের দিকে যেতে হাতের ডান দিকে সুউচ্চ ভবনটি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের। আগে সেখানে একটি ছোট্ট বিল্ডিং ছিল। কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপের অংশীদারত্বে বর্তমান ভবনটি নির্মিত।


সুরাটি ব্যবসায়ী শেঠ ইব্রাহিম মুহাম্মদ ডুপ্লের উদ্যোগে ১৯০৫ সালে কলকাতায় আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়। এর অন্যতম লক্ষ্য ছিল মুসলমানদের বেওয়ারিশ লাশ সংগ্রহ ও দাফন করা। ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের সময় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বেড়ে যায় কলকাতার রাস্তায় হাজার হাজার বেওয়ারিশ লাশ পড়ে থাকার কারণে। দেশ ভাগের পর আঞ্জুমান মফিদুল ঢাকায় স্থানান্তরিত হয়। ঢাকার বাইরেও অনেক শহরে এর অফিস আছে।


পরাধীন দেশে কেউ বেওয়ারিশ থাকতে পারেন; কিন্তু স্বাধীন দেশে সেটি থাকার কথা নয়। যদি কোনো ব্যাধি, দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে কেউ স্বজন হারান, রাষ্ট্রকেই স্বজনের দায়িত্ব পালন করার কথা।



বাংলাদেশের সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে আছে, প্রজাতন্ত্রের সব ক্ষমতার মালিক জনগণ, রাষ্ট্রের মালিক যদি জনগণ হয়, তাহলে কারোরই বেওয়ারিশ হওয়ার কথা নয়। অথচ স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও আমরা বেওয়ারিশ মানুষ ও লাশ দেখতে পাচ্ছি।


অর্থনৈতিকভাবে দেশ অনেক উন্নত হয়েছে, ঢাকা শহরের চাকচিক্য বেড়েছে, কোটিপতির সংখ্যা কয়েক শ গুণ বেড়েছে। কিন্তু বেওয়ারিশ মানুষের সংখ্যা কমছে না।  জীবিত থাকতে যেমন, তেমনি মৃত্যুর পরও অনেকে বেওয়ারিশ হয়ে যান। এই বেওয়ারিশদের হেফাজতের জন্য আছে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম।


৮ জুলাই ভোরে নরসিংদীর রেলস্টেশন–সংলগ্ন কমলপুর এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে যে পাঁচজন মানুষ মারা যান, তাঁদের কারও পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। রেললাইন ধরে হাঁটতে থাকা কয়েক ব্যক্তি সকাল আটটায় পাঁচজনের লাশের টুকরা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন ও দুজনের শরীর দ্বিখণ্ডিত ছিল। চারজনের হাত-পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল।



পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা মরদেহের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করেও পরিচয় শনাক্ত করতে পারেননি। এই পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের বয়স ১৮ বছরের নিচে এবং দুজনের ১৮ বছরের ওপরে। শেষের দুজনের পরিচয়পত্র বা আইডি থাকার কথা। আর আইডি থাকলে পিবিআইয়ের নেওয়া আঙুলের ছাপের সঙ্গে মিলে যেত। না মেলা মানে তাঁদের পরিচয়পত্রই ছিল না। অভাবিত উন্নয়নের পথে ধাবমান এই রাষ্ট্র তাঁদের পরিচয় খুঁজে পায়নি।


ময়নাতদন্ত শেষে রেলওয়ে পুলিশ নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িসংলগ্ন কবরস্থানে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে তাঁদের দাফন করে। প্রশ্ন উঠেছে, তাঁরা কি ট্রেনে ভ্রমণ করছিলেন? তাঁরা কি ট্রেনের দরজায় ঝুলছিলেন? তাঁরা যদি এলাকার কেউ হতেন, তাহলে আত্মীয়স্বজনের খোঁজ নেওয়ার কথা। আর বাইরের কেউ হলে কোথা থেকে এসেছিলেন?


নরসিংদীর ঘটনাটি ছিল নিছক দুর্ঘটনা। পথঘাটে এ রকম বেওয়ারিশ হয়ে যাওয়া অনেক মানুষ আমরা দেখেছি। আবার আন্দোলনে গিয়েও অনেকে বেওয়ারিশ লাশ হয়ে যান।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও