শোক, আর না শোক

যুগান্তর পবিত্র সরকার প্রকাশিত: ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১০:৫৮

শোক, বিশেষ করে মৃত্যুশোক, প্রাণিজগতের অনুভব। মৃত্যুশোক ছাড়াও আরও অনেক শোক আছে, কিন্তু বাইশে শ্রাবণ বারবার আমাদের এ চরম শোকের ঘাটেই পৌঁছে দেয়। জড়ের, যতদূর অনুমান করি আর জানি, কোনো শোক নেই। শোক একটি অনুভব; অনুভূতি না থাকলে শোক হয় না। জড়ের কোনো অনুভূতি নেই, তাই শোকও নেই। প্রাণীগুলোর মধ্যেও যদি ধরি, উদ্ভিদের কি কোনো শোক আছে?


আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু আমাদের একভাবে হয়তো বুঝিয়েছিলেন যে আছে-শোক, আনন্দ দুই-ই আছে। এ নিয়ে মার্কিন দেশে আমি একটি বইও পেয়েছিলাম আর পড়েছিলাম, মার্কিন গবেষক-সাংবাদিক পিটার টমকিন্সের লেখা ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব প্ল্যান্টস’ নামে। তাতে জগদীশচন্দ্রের গবেষণার সশ্রদ্ধ উল্লেখ ছিল। গবেষকরা হয়তো উদ্ভিদজগতের শোকের চিহ্ন উদ্ধার করতে পারেন, কিন্তু আমাদের সাধারণ মানুষের চর্মচক্ষে সেটা ধরা পড়ে না।


মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীর শোক কেমন? আমি প্রাণিতত্ত্ববিদ নই, কিন্তু সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকে জানি, সব প্রাণীর শোক একরকম নয়। ‘মাছের মায়ের পুত্রশোক’ বলে একটা প্রবচন আছে বাংলায়। যার অজস্র সম্ভাব্য সন্তান, ডিম ফুটে মূর্ত হলেও তাদের সন্ধান রাখাও যার পক্ষে দুঃসাধ্য, তার শোকের প্রশ্নই ওঠে না। অন্যদের? ঘরের বিড়ালদের? কাক ও অন্যান্য পাখির? একটি কাকের মৃত্যু হলে অনেক কাক জড়ো হয় এমন দৃশ্য দেখা আছে, কিন্তু কতটা তার ঘনত্ব, বিস্তার আর স্থায়িত্ব, তা আমি জানি না। হয়তো অন্যরা জানেন। যারা যূথবদ্ধ প্রাণী, তাদের শোক এক, যারা অযূথবদ্ধ, তাদের শোকের চরিত্র হয়তো আলাদা। পুরুষ বাঘ বা বিড়াল তো তাদের সন্তানদের খেয়েই ফেলে বলে জানি। হাতিদের শোকের একটি তথ্যচিত্র আমি দেখেছিলাম, তা আমার ‘মৃত্যু, জীবনের প্রথম পাঠ’ বইয়ে আমি লিখেছি।


আফ্রিকার জঙ্গলে বৃদ্ধ সরদার হাতিরা মৃত্যু অনিবার্য ও আসন্ন তা টের পেলে কাছের নদীর ধারে একটি প্রশস্ত স্থানে গিয়ে শুয়ে পড়ে, মৃত্যুর প্রতীক্ষা করতে থাকে, একসময় মারাও যায়। সে জায়গাটা মৃত হাতিদের সাদা কংকালের স্তূপে ভরে ওঠে। আমরা দেখেছিলাম একটি বৃদ্ধ হাতি এভাবে মৃত্যুর জন্য ওই উপত্যকার দিকে মন্থরগতিতে হেঁটে আসছে। কিন্তু সে একা নয়। তার পেছনে তার গোটা দল, প্রায় চল্লিশ-পঞ্চাশটি হাতির এক মিছিল। শব্দহীন শান্ত পদক্ষেপে তার পেছন পেছন আসছে তাকে শেষ বিদায় জানাতে। সে দলে শিশুরাও আছে, তাদের মধ্যেও কোনো চপলতা নেই।


শেষ পাহাড়ের ওপারে সেই নদী-উপত্যকা, সেখানে এসে বৃদ্ধ হাতিটি থেমে গেল। গোটা দলও থেমে গেল। বৃদ্ধ হাতিটি শুঁড় দিয়ে কাছের দু-একটি হাতিকে স্পর্শ করল, যেন বলল, ‘এবার আমার একার যাওয়ার পালা। তোমরা ফিরে যাও।’ দল দাঁড়িয়ে রইল, হাতিটি একা একা এগিয়ে গিয়ে সেই সাদা কংকালগুলোর পাশে একটা জায়গা দেখে শুয়ে পড়ল। বাকি হাতিদের কয়েকটির চোখে আমি যেন জলও দেখলাম। মানবেতর প্রাণীর ক্ষেত্রে এই একটি শোকের বিশদ দৃশ্যই আমি দেখেছি, প্রাণ হাতে করে সে তথ্যচিত্র নির্মাতারা সেটি তুলেছিলেন বলে। হয়তো পাঠকদের কাছে অন্য প্রাণীদের শোকযাপনেরও খবর আছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও