জীবনের মাঝপথে যদি আয়ের পথ খুঁজতে হয়
নীলুফার বেগম। স্নাতকোত্তর শেষ করার পরপরই ঢাকার এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের ২০ বছরের মাথায় তিন মেয়ে, এক ছেলে রেখে হঠাৎ মারা যান তাঁর স্বামী। স্বামী চলে যাওয়ার শোকটাও ঠিকমতো করতে পারেননি নীলুফার—ওই অবস্থায়ই তাঁকে ভাবতে শুরু করতে হয়েছিল সংসার খরচ, সন্তানদের পড়াশোনা এবং একই সঙ্গে মা–বাবা দুজনের ভূমিকা পালন করার দায়িত্বের কথা। স্বামীর ব্যবসায়িক অংশীদার নীলুফারকে হিসাব দেখার দায়িত্বটা দিয়ে মাস গেলে ভালো অঙ্কের একটা টাকা পারিশ্রমিক হিসেবে দিতে শুরু করেন। সেই শুরু। ছেলে বড় হয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করার পরেই নীলুফার বেগমের দায়িত্বের বোঝাটা হালকা হয়েছিল।
হরিপদ দাস। ছেলেবেলায় স্বপ্ন দেখতেন একদিন তাঁর গ্রামের পরিমল ডাক্তারের মতো ডাক্তার হবেন। গ্রামের দুস্থ মানুষের চিকিৎসা করবেন। কিন্তু মুক্তিদ্ধের সময় সব স্বপ্ন এলামেলো হয়ে যায়। তিন ভাই ও চার বোনের পরিবার। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে কোনো রকমে বসতবাড়ি মেরামত করে, বাবাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে টুকটাক কাজ শুরু করেন হরিপদ। ১৯৭২ সালে মেট্রিকুলেশনের পর কলেজে না গিয়ে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা পড়তে শুরু করেন। কারণ, দ্রুত আয়রোজগার করা যায় এমন একটা কর্মসংস্থান প্রয়োজন। বাবার পাশে দাঁড়িয়ে ভাইবোনদের পড়াশোনায় সহযোগিতা করতে হবে। এরপর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কানাডা সরকারের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ঘুরে সরকারি চাকরি করে এখন একটি উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানে আছেন। নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে না পারলেও ভাইবোন ও তিন সন্তানকে প্রতিষ্ঠিত হতে সহযোগিতা করেছেন।