
মুখস্থের ভয় দূর করতে মানতে পারেন এই নিয়মগুলো
ছোটবেলায় আমাদের কথা বলা শেখা, হাঁটতে শেখা, চারপাশের সব কিছুর নাম জানা থেকে শুরু করে সব স্টেপই খুব গতানুগতিকভাবেই হয়েছিল। এই বিষয়গুলো শেখার জন্য আমাদের কিন্তু সেভাবে কষ্টের প্রয়োজন হয়নি। তেমনভাবে মুখস্থ করারও দরকার হয়নি।
তবে পড়ালেখার ক্ষেত্রে এই গতানুগতিক নিয়মটা আর কাজে লাগাতে পারি না আমরা। তখনই আশ্রয় নিতে হয় মুখস্থ বিদ্যার। আর এখানেই আমাদের যত দুর্বলতা। অনেক শিক্ষার্থীই এ দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে না পেরে চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েন। পড়ালেখাটাই তখন অসহ্য হয়ে উঠে তাদের কাছে।
১. সম্পূর্ণ অনুচ্ছেদটি বারবার পড়ার ওপর জোর দেওয়া
আমাদের একটি বড্ড বাজে অভ্যাস রয়েছে, আমরা কী পড়লাম তার থেকে কতটুকু সময় পড়েছি তার ওপর বেশি জোর দিই। ধরা যাক— আজ সকালে উঠে আমি একটানা পাঁচ ঘণ্টা পড়েছি; কিন্তু আসলেই কি সম্ভব একটানা পাঁচ ঘণ্টা পড়া? টানা পাঁচ কেন দুই ঘণ্টাই মনোযোগ ধরে রাখা কিন্তু চাট্টিখানি কথা না! একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে পাঁচ ঘণ্টার মাঝে কতবার আমাদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটেছে। হয়তো পড়ার মাঝেই আমাদের ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক করছি, মেইল চেক করছি কিংবা ইউটিউবে ঢুকে বসে আছি। এভাবে ২-৩ ঘণ্টা পড়ার পর ভাবছি আজ না জানি কত বেশি পড়ে ফেললাম। অথচ এই সময়টুকুতে যতটুকু পড়া যেত তা কিন্তু হয়নি। কোনো টপিক শিখতে কত সময় পড়লাম সেটি কখনই মুখ্য বিষয় নয়, বরং টপিকটি আমি কয়বার ভালোভাবে বুঝে পড়েছি সেটাই মুখ্য বিষয়।
সুতরাং, পড়তে বসার সময় কোনো টপিক মুখস্থ করার জন্য কোনো নির্ধারিত সময় ফিক্সড না করে বরং টপিকটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত লাইন বাই লাইন কয়েকবার পড়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। একটা দাঁতভাঙা অনুচ্ছেদ প্রথমবার পুরোটা পড়লে যতটুকু কঠিন মনে হবে দ্বিতীয়বার পড়লে তুলনামূলক কম কঠিন মনে হবে। সুতরাং যতবার পুনরায় পড়া হবে, ততটাই সহজ মনে হবে।
২. অনুচ্ছেদটিকে ভেঙে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত করে পয়েন্ট আউট করে ফেলা
টপিকটি সম্পূর্ণ লাইন বাই লাইন পড়া হয়ে গেলে যেসব বাক্য দুর্বোধ্য, সেগুলো আন্ডারলাইন করে ফেলতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো বের করে নিয়ে আসতে হবে। একেকটি পয়েন্ট একটি শব্দ কিংবা একটি ছোট বাক্যের সমন্বয়ে তৈরি হতে পারে। পয়েন্ট আউট করাটা অবশ্যই বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে করতে হবে যেন একবার পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই টপিক একটি বিশেষ অংশ মাথায় খেলা শুরু করে। অতঃপর পরবর্তী ধাপে প্রবেশ করতে হবে।
৩. পয়েন্টগুলোর সমন্বয়ে একটি শেকল তৈরি করা
আমাদের কাছে এখন টপিকটির গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো রয়েছে। এখন খুব সহজেই প্রতিটি পয়েন্ট দেখেই বুঝে ফেলতে পারব কোনটি দিয়ে কী বোঝানো হচ্ছে, যদি অনুচ্ছেদটি ভালোভাবে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়া হয়ে থাকে।
প্রতিটি পয়েন্ট মাথায় গেঁথে ফেলতে হবে এবং সুন্দর করে পয়েন্টগুলো ধারাবাহিকভাবে খাতায় টুকে ফেলতে হবে অনেকটা শেকলের মতো। যেন দেখলেই বুঝতে সহজ হয় কোন পয়েন্টটা আগে আসবে আর কোন পয়েন্টটা তারপরে আসবে। এখন সব পয়েন্টের মাধ্যমে খুব সহজেই সম্পূর্ণ অনুচ্ছেদটিকে মাথায় গেঁথে নিতে পারব।