পুঁজিবাদই সর্প হয়ে দংশন করে ওঝা হয়ে ঝাড়ছে

সমকাল সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২৪, ০৯:৪৬

ব্যাপারটা নতুন নয়, প্রকৃতির ওপর মানুষের হস্তক্ষেপ অত্যন্ত পুরাতন বটে, প্রকৃতিকে জয় করতে হবে– এ প্রতিজ্ঞা নিয়েই সভ্যতা এগিয়েছে। প্রকৃতিকে মানুষ ব্যবহার করছে, নিজের কাজে লাগিয়েছে এবং ধ্বংসও করেছে। ফলটা দাঁড়িয়েছে ভয়াবহ। সারাবিশ্বে প্রকৃতি আজ যতটা বিপন্ন, তেমনটা আগে কখনও ঘটেনি। কিন্তু বিপদ তো কেবল প্রকৃতির নয়; মানুষেরও। প্রকৃতির প্রতিশোধ বলে একটা ব্যাপার আছে। প্রকৃতি সেই প্রতিশোধটা নিচ্ছে। বিশ্বব্যাপী মানুষ আজ যতটা বিপন্ন, তেমনটা আগে কখনও দেখা যায়নি। 


দারিদ্র্য তো ছিলই। তা দূর করার নানান রকম চেষ্টা চলেছে, এখনও চলছে। খুব যে ফলপ্রসূ হয়েছে, তা নয়। বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষই দরিদ্র। তারা অপুষ্টিতে ভোগে, স্বাস্থ্যসেবা পায় না। তাদের জীবনে অভাব রয়েছে বাসস্থান, বস্ত্র ও শিক্ষার। কিন্তু যে ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি, তা এখন ঘটছে। বিশ্বজুড়ে সংকট দেখা দিয়েছে খাদ্যের। পর্যাপ্ত খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। যা পাওয়া যাচ্ছে তাও গরিব মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। বিশ্ব আজ আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় অধিক আলোকিত। সেই আলোর নিচে ভয়াবহ অন্ধকার ধরা পড়েছে। 


এটি প্রায় অবিশ্বাস্য সংবাদ। বিশ্ব এত এগিয়েছে, এত রকমের উদ্ভাবন ও আবিষ্কার ঘটেছে– চাঁদে গিয়ে বসবাসের কথা ভাবা হচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির দরুন বিশ্ব মানুষের হাতের মুঠোয় এসে গেছে। মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য উন্নত বিশ্ব ব্যাপক হারে মানুষ খুনেও দ্বিধা করছে না। এমনকি সেই আদিম বর্বরতার কালে খাদ্য সংগ্রহ নিয়ে যে দুর্ভাবনা মানুষকে কাতর করে রাখত, তা আবার দেখা দিয়েছে। কাকে বলব অগ্রগতির নিরিখ? বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতিকে, নাকি আদিম খাদ্যাভাবের প্রাদুর্ভাবকে? 


খাদ্যাভাবের সঙ্গে প্রকৃতির ওপর মানুষের হস্তক্ষেপ প্রত্যক্ষরূপে জড়িত। লোকসংখ্যা বেড়েছে, ফসলের জমি বাড়েনি। কোথাও কোথাও উৎপাদনের জমি খালি পড়ে থাকে; অন্যত্র এর ভীষণ অভাব। জ্বালানি পুড়িয়ে আবহাওয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা ও সংখ্যা বেড়েছে। প্রাণহানি ঘটছে মানুষের; নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফসল ও ফসলের মাঠ। বৃদ্ধি পাচ্ছে খাদ্য সংকট। 


বিজ্ঞানীরা অবশ্য অনেক আগে থেকেই বলে এসেছেন, প্রকৃতিকে উত্ত্যক্ত করতে নেই। করলে প্রকৃতি বিরূপ হবে, হয়তো প্রতিশোধ নেবে। বিবর্তনবাদের বৈজ্ঞানিক প্রবক্তা ডারউইনও ওই সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন; কিন্তু মানুষ সেসব কথা শোনেনি। একদিকে প্রকৃতির বন্দনা গান করা হয়েছে; তাকে নিয়ে শিল্প-সাহিত্য তৈরি করা হয়েছে; অন্যদিকে প্রকৃতিকে পরিণত করা হয়েছে পণ্যে। এর যা কিছু আছে সবই লুণ্ঠন করা হয়েছে। 
মানুষও আসলে প্রকৃতির অংশ। কিন্তু যতই সে উন্নত হয়েছে, ততই বিচ্ছিন্ন হয়েছে প্রকৃতি থেকে। ফলে একদিকে সে যেমন শিকার হয়েছে প্রকৃতির রুদ্ররোষের; অন্যদিকে নিজেও ভীষণ কৃত্রিম হয়ে পড়েছে। তার স্বভাবে দেখা দিয়েছে নিষ্ঠুরতা ও আত্মকেন্দ্রিকতা। 


পৃথিবীর তিন-চতুর্থাংশ জল, এক ভাগ স্থল– ভূগোলের বইয়ে এমনটিই পড়েছি। কিন্তু আজ পানীয় জলের ভীষণ অভাব দেখা দিয়েছে। পানি যে কেমনভাবে দূষিত হয়েছে, এর প্রমাণ আমাদের বুড়িগঙ্গা। এটি এখন পরিণত হয়েছে একটি বিষাক্ত নর্দমায়। অথচ ওই বুড়িগঙ্গাতেও লঞ্চডুবি হয়, মানুষ মারা যায়।  

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও