‘হামরা চাউল-ডাউল চাই না, ঘরখান রক্ষা করি দেও’
‘বারে বারে ভাঙে। এই নিয়া পাঁচভাঙা দিলোং। স্বামীটা পঙ্গু; অচল হয়া পড়ি আছে। বেটিকোনা (মেয়েটা) স্কুলত পড়ে। জুয়ান বেটি নিয়া কট্টি (কোথায়) যামো বুঝবের পাবাইছং (পারছি) না।’ গতকাল রোববার কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন রাজারহাট উপজেলার কালিরহাট গ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙনের শিকার নমিতা রাণী।
তিস্তার ভাঙনে তাঁর মতোই বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব কালিরহাট গ্রামের আরেক নারী ভারতী রাণী। ছেলে-স্বামীকে রেখেছেন অন্যের বাড়িতে। শুধু বসতভিটার একটি ঘর তিস্তার পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে এখনও। সেটি কখন ভেঙে যায়– সেই আতঙ্কে দিন পার করছেন। উৎকণ্ঠিত ভারতী বলেন, ‘হামরা চাউল-ডাউল চাই না। ১০ কেজি চাউল নিয়া কী করমো? না খায়া থাকি, তাও নিজের বাড়িত থাকব। তিস্তার ভাঙনে হামার সাত শতক ভিটেমাটি, ঘর, মুরগি– সব ভেসে গেছে। হামার এই ঘরটা রক্ষা করি দেও।’
ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার আগ্রাসী ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে এভাবেই এখন জনে জনে আকুতি করছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর, রৌমারী ও সদর উপজেলার শত শত পরিবার। এরই মধ্যে ভাঙনে যাদের সব কিছু হারিয়ে গেছে, তাদের কান্না যেন বাঁধ মানছে না। ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা অনেকে আবার বাড়িঘর ভেঙে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করছে। কেউ কেউ বাড়ির গাছপালা কেটে কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছে।