বিএনপি কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে?

যুগান্তর একেএম শাহনাওয়াজ প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০২৪, ১২:২১

আমাদের দুর্ভাগ্য এই যে, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও এদেশে দ্বিধাবিভক্তি দেখতে হচ্ছে। এ বিভক্তি ১৯৭৫-এর পর থেকেই স্পষ্ট হচ্ছিল। মুক্তিযুদ্ধস্নাত একটি দেশের জন্য যা ছিল একেবারে অভাবিত। যেখানে বাংলাদেশের মতো মুক্তিযুদ্ধের পথ পেরিয়ে জন্ম নেওয়া দেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা নিশ্চিহ্ন হয় বা নির্বাসিত হয়, সেখানে পরম আদরে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হলো জামায়াতে ইসলামী। এখন অনেকটা ডালপালা ছড়িয়েছে। অবশ্য এ দেশের সাধারণ মানুষের অন্তরে দৃঢ়মূল প্রথিত করতে পারেনি। স্বর্ণলতার মতো বন্ধুপ্রতিম গাছের ডাল জড়িয়ে বেড়ে উঠেছিল। আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা গাছের রস শুষে নিজ দেহ খোলতাই করেছে আর বন্ধুকে করে তুলেছে কৃশকায়।


জামায়াতে ইসলামী দলটি শুধু মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেনি, জঘন্য অপরাধের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়ে। মওদুদিবাদের বিতর্কিত আদর্শ ধারণ করে ধর্মের নাম ভাঙিয়ে হানাদার পাকিস্তানি বর্বর বাহিনীর স্থানীয় দালালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি নিয়ে বেঁচে থাকা এ দেশের অসংখ্য মানুষ বলতে পারবেন, একাত্তরে জামায়াতে ইসলামী কতটা আতঙ্ক আর ঘৃণার নাম ছিল। এ দলের নেতাকর্মীরা ধর্মের নাম ভাঙিয়ে-পবিত্র ইসলাম ধর্মকে কলুষিত করে হেন অপকর্ম নেই যে, একাত্তরে করেনি। দুর্ভাগ্য এই, আজকে সুবিধাবাদী নেতাদের মিথ্যা ব্যাখ্যায় আচ্ছন্ন ইতিহাসবিচ্ছিন্ন তরুণ জামায়াত-শিবির কর্মীরা এই অতীত না জেনে অপরাধীদের রক্ষায় ধর্মের সঙ্গে, মানবতার সঙ্গে শত্রুতা করছে। গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগকারী হানাদারদের সহযোগী এবং অংশগ্রহণকারীদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ না করে, তাদের রক্ষার জন্য এখনো দেশ ও জাতির বক্ষ বিদীর্ণ করছে। একইভাবে এদের রক্ষা করার পাপ কাঁধে তুলে নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের কাতারে নিজেদের যুক্ত করছে বিএনপির মতো একটি জনপ্রিয় দল। কিছু সংখ্যক নেতানেত্রীর রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত লোভের আগুনে পুড়ছে দলের প্রতি অসংখ্য নেতাকর্মীর ভালোবাসা।


অনেকে বলবেন, রাজনীতির মাঠে জামায়াত এখন অনেকটা নিষ্ক্রিয়। এটি তো সময়ের ফের। বর্তমান আওয়ামী লীগ শাসনের ধারাবাহিকতার শুরুতে মূল তরু বিএনপি কোণঠাসা হয়ে পড়ার সময় স্বর্ণলতা জামায়াত রসাস্বাদন করতে না পেরে নির্জীব তো হবেই। কিন্তু বসে নেই-রক্তবীজ তৈরি করছে নিজের ভেতর থেকে। এ দেশে সুবিধাবাদী রাজনীতি যতদিন সক্রিয় থাকবে, অন্ধকারের জীবদের প্রাণভোমরা ততদিন প্রত্যক্ষ না হলেও পরোক্ষভাবে ক্রিয়াশীল থাকবেই। নানা জাতের রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে এরা প্রশ্রয় পাবেই।


বিএনপির যেহেতু বড় ময়দানে একা হাঁটার সামর্থ্য কম, তাই জামায়াতকে সে ছাড়তে পারবে না। তা সে জামায়াতের নিবন্ধন থাক বা না থাক। বিএনপির দলীয় আদর্শে পাকিস্তানপন্থা তো জিয়াউর রহমান দলটির জন্মলগ্ন থেকেই নিশ্চিত করেছেন। জামায়াতকে পাশে নিয়েই তো রাজনীতির মাঠে হাঁটছিলেন তারেক রহমান। অনেককাল থেকেই রাজনীতির মাঠে বিপন্ন-বিধ্বস্ত এদেশের বাম দলগুলো মৌলিক আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে পায়ের নিচে মাটি ফিরে পেতে জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে। কোনো কোনো বাম ধারার আওয়ামী লীগে থাকা নেতা যথাযোগ্য সম্মান ও পদ-পদবি না পেয়ে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে আসন পেতে বসেছেন। জামায়াতের মতো স্বর্ণলতারা দ্রুতই এদের বন্ধু বানাতে পারবে।


১৯৭৫ সালের পর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের আশ্রয়ে এদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়। সেদিন চমকে উঠেছিল বাংলাদেশের সুস্থ ধারার মানুষ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যা-উত্তর সামরিক বাহিনীর ভেতর অভ্যুত্থান-পালটা অভ্যুত্থানের বাস্তবতায় যে গোলমেলে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, সে কারণে তেমনভাবে প্রতিবাদের শব্দ উচ্চারিত হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান তার রণাঙ্গনের পরিচয় পালটে ফেললেন। নিজের গড়া নতুন দলের শক্তি খুঁজতে চাইলেন মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের কাছ থেকে।


জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দুর্বলতার সুবিধায় বিএনপি নামের দলটি বেশ গুছিয়ে উঠিয়েছিল। কিন্তু সংকট তৈরি হয় জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর। খালেদা জিয়াকে নেতৃত্বে এনে আপাত সামাল দিলেও হীনম্মন্যতা থেকে বেরোতে পারেনি বিএনপি নেতৃত্ব।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও