You have reached your daily news limit

Please log in to continue


সবকিছু উঠে যাবে

ছোটবেলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পোস্টমাস্টার গল্পটি পড়ে খুবই আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলাম। প্রথম কারণ, গল্পটি যে বেদনাবিধুর আবেগ তৈরি করে রতনের জন্য, সেই বয়সে তা রীতিমতো অশ্রু ঝরিয়ে দেয়। দ্বিতীয়ত, আমার বাবা ছিলেন পোস্টমাস্টার। গ্রাম, আধা শহর, শহর এবং শেষ পর্যন্ত জেলা শহরের প্রধান ডাকঘরের পোস্টমাস্টার হয়েছিলেন। বড় হয়ে আবারও রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর পড়ি। সেখানেও অমলের ডাকপিয়নের জন্য অপেক্ষাটিও খুবই দাগ কেটেছিল। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষার সাহিত্যে ডাকঘর এসেছে, এসেছে ডাকপিয়ন। চলচ্চিত্রেও ডাকপিয়ন একটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। যেদিন থেকে চিঠিপত্র এসেছে, সেদিন থেকেই ডাকঘর আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ভীষণ জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে।

খোদ যুক্তরাষ্ট্রে ডাকঘরে জাতীয় পতাকা ওড়ে। ইংল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, জাপান, চীন, ভারত যেখানেই গিয়েছি, ডাকঘর সসম্মানে বিরাজ করছে। আমার বাবা যেহেতু ডাকঘরে চাকরি করতেন, তাই আমার খুব গর্ব হতো। পোস্ট অফিসে গিয়ে একটি পোস্টকার্ড কিনে বাবাকে চিঠি লিখতাম। পোস্ট অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাবার পরিচয় দিয়ে কথা বলতাম। বাল্যকালের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, যাঁরা ডাকঘরে কাজ করেন, তাঁরা সমাজে খুবই সম্মানিত। এলাকায় মান্যগণ্য লোকেরা পোস্ট অফিসের বারান্দায় এসে দাঁড়িয়ে থাকতেন। কেউ কেউ ভেতরে আসার সৌভাগ্য অর্জন করতেন। ডাকঘরগুলোর গুরুত্ব বুঝে টেলিগ্রাফ থাকত কোথাও কোথাও। সেই টরেটক্কা শব্দকে আবিষ্কার করে ভাষা রূপান্তরিত হতো। সম্প্রতি এক সংবাদে দেখা গেল, পোস্ট অফিস যেহেতু লোকসানের বিষয়, তাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অতীতেও অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। কলকারখানার বড় একটা অংশ পানির দামে বিক্রি হয়ে গেছে। খবরটি যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটিও ইতিহাসের বিষয় হতে চলেছে। আজকের প্রজন্ম এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছুই জানতে পারল না।

জানা গেছে, বছরে ৭০০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হয় এই প্রতিষ্ঠানের জন্য। সরকারি মালিকানাধীন কোনো প্রতিষ্ঠান আছে কি, যেখানে লোকসান গুনতে হয় না? রেল, সড়ক, পরিবহন থেকে শুরু করে সবই তো লোকসানের কাতারে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশে জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠানে লোকসান একটি নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কিন্তু বিপুল পরিমাণ জনশক্তি এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত থাকে, তাদের কথা ভেবেও এসব বন্ধ করা হয় না। আদমজী জুট মিল হাজার কোটি টাকা লোকসান গুনতে হতো বলে বন্ধ করে দেওয়া হলো। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, এই প্রতিষ্ঠানের সুবিধাভোগী ছিল প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষ। এখন লোকসান কেন হয়? এ-ও আমরা জানি। ব্যবস্থাপনার অদক্ষতা, দুর্বল পরিকল্পনা এবং সর্বময় দুর্নীতি। এই দুর্নীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হয় রাজনৈতিক দল।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সংগত কারণেই রাষ্ট্রায়ত্ত করার একটা হিড়িক পড়ে যায়; যা সে সময় প্রয়োজনও ছিল। কিন্তু একেবারেই রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগগুলো হয়েছিল। যোগ্যতা দেখার অবকাশও ছিল না। এ সময় শ্রমিকশ্রেণিও তাদের দায়িত্ব যথাযথ পালন করেনি। পরে সেনাশাসনের সময় বিরাষ্ট্রীকরণ শুরু হয়। বড় বড় কলকারখানা পানির দামে বিক্রি হয়। রেলওয়ের বড় বড় ওয়ার্কশপের নাট-বল্টু বিক্রি হয়ে যায়। অবাক লাগে, মুক্তিযুদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠাকালে সিনেমা হল, হোটেল—এসবও লোকসানের মধ্যে পড়ে যায়। বড় বড় স্থাপনা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। শোনা গেছে, পোস্ট অফিসের মধ্যেও নাকি দুর্নীতি ঢুকে গিয়েছিল। অথচ পোস্ট অফিসের প্রতি আস্থা যেন মানুষের না হারায়, সে জন্য কর্মচারীদের লঘু পাপে গুরু দণ্ডও দেওয়া হতো।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন