ঈদের ছুটিতে সন্তানদের জন্য গ্রাম হোক পাঠশালা

প্রথম আলো তুহিন ওয়াদুদ প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২৪, ২০:৫৭

বছর কুড়ি আগের কথা। ঢাকার মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, সে তুলসীগাছ দেখেছে কি না। উত্তরে বলেছিল, সিনেমায় দেখেছে। মরিচগাছ দেখতে কেমন, এমন প্রশ্নের উত্তরে সে জানিয়েছিল, মরিচগাছ দেখতে আমগাছের মতো বড়।


নীলফামারী জেলা শহরের অনেক তরুণকে জিজ্ঞাসা করেছি, নীলফামারী শহর কোন নদীর তীরে গড়ে উঠেছে? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর একজনও বলতে পারেনি। রংপুর শহরের ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ বলতে পারেন না, মাহিগঞ্জের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত নদীটি যে ইছামতী। অথচ এই ইছামতীর তীরেই ‘মাহিগঞ্জ’ গড়ে উঠেছিল। আমাদের দেশে যে পাখিগুলো সাধারণত চোখে পড়ে, এগুলো চেনেন খুব কমসংখ্যক মানুষ। আম-জামজাতীয় কিছু গাছ ছাড়া অন্যান্য গাছ চেনা মানুষের সংখ্যাও সীমিত।


আমাদের যেসব সন্তান গ্রামে বেড়ে উঠছে, তারা যদিও আগের মতো শৈশব পায় না, তবু তারা কিছু বিষয় শিখে বেড়ে উঠছে। সেই ‘শেখা’ও সন্তোষজনক নয়। আমাদের যে সন্তানেরা শহরে বেড়ে উঠছে, তারা অনেক কিছু না জেনেই বেড়ে উঠছে। আমাদের সন্তানদের স্কুল-কলেজের ছুটি হলেও ওই সময়ে তাদের বাবা–মায়েদের জন্য কোনো ছুটি রাখা হয় না। শীত কিংবা গ্রীষ্মকালীন ছুটি শিক্ষার্থীদের হলেও অভিভাবকদের এই ছুটি নেই। ফলে স্কুল-কলেজ ও অভিভাবকের ছুটি একসঙ্গে পেতে আমাদের প্রধানতম ভরসা দুটি ঈদ।


এ দুই ঈদে গ্রামের বাড়িতে গেলে আমাদের সন্তানদের আমরা প্রকৃতির সঙ্গে কিংবা গ্রামজীবনের লোকসংস্কৃতি-ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করাতে পারি। নদীমাতৃক বাংলাদেশে জালের মতো ছড়িয়ে আছে নদী। বাড়ি থেকে নিকট দূরত্বে যে নদী আছে, সেই নদীর পাশে আমরা আমাদের ছেলেমেয়েকে নিয়ে যেতে পারি, যদি নদীটিতে পানি না–ও থাকে। আমরা আমাদের শৈশবে নদীটি কেমন দেখেছি, আমাদের বাবার কাছে নদীটির কেমন গল্প শুনেছি, সেই গল্প শোনাতে পারি। আমরা সন্তানকে বোঝাতে পারি, নদীর সঙ্গে জীবনের সম্পর্ক কত গভীরের। নদীগুলো ছাড়া বাংলাদেশ যে অচল, এ ধারণা সন্তানদের মধ্যে দিতে পারি।


পাখি সম্পর্কেও আমরা সন্তানদের ধারণা দিতে পারি। বুলবুলি, ফিঙে, টিয়া, চড়ুই, বাবুইসহ যেসব পাখির নাম বইয়ে পড়েছে, সেগুলো বাস্তবে দেখাতে পারি। কোন পাখি কোথায় বাসা বাঁধে, কী খায়—এসব ধারণা বাস্তবে পেতে পারে আমাদের সন্তানেরা। পাখি কীভাবে তার সন্তানকে বড় করে তোলে, সে ধারণাও গুরুত্বপূর্ণ। সন্তানের প্রতি মা পাখির যে ভালোবাসা, সেটি নিঃসন্দেহে অনুকরণীয়। বাবুই পাখির বাসা সন্তানদের দেখানো খুব জরুরি। পাখিরাও যে কত নিখুঁত শিল্পী, সেটা বোঝানো যাবে।


আমরা যে মাছ খাই, সেগুলোর মধ্যে যেগুলো গ্রামের পুকুর, নদী ও খাল–বিলে পাওয়া যায়, সেগুলো সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া যেতে পারে। কোন মাছ পানির কোন স্তরে থাকে, কোন মাছ কাদার নিচে থাকে, কোন মাছ কোথায় থাকে—এগুলো সম্পর্কে বললে আমাদের সন্তানেরা আগ্রহ করে শুনবে, দেখবে।


‘কাটা হেরি ক্ষান্ত কেন কমল তুলিতে, দুঃখ বিনে সুখ লাভ হয় কি মহীতে?’ এই ভাবসম্প্রসারণ পড়েনি, এমন শিক্ষার্থী খুব কম পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবে কতজন এই কমল দেখেছে, তার পরিসংখ্যান খুঁজতে গেলে হতাশ হতে হয়। আমি অসংখ্য শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসা করে হতাশ হয়েছি। পদ্ম এ সময়ে ফুটেছে। পদ্মফুল দেখাতে পারেন সন্তানদের।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও