পারিবারিক চিকিৎসা পদ্ধতির গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও আজ (১৯ মে) উদযাপিত হচ্ছে বিশ্ব পারিবারিক চিকিৎসক দিবস। ২০১০ সাল থেকে সারা বিশ্বে প্রতিবছর বিশ্ব পারিবারিক চিকিৎসক দিবস পালিত হয়ে আসছে। বিশ্ব পারিবারিক চিকিৎসক সংস্থা (ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন অব ফ্যামিলি ডক্টরস) দিবসটি চালু করে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব জেনারেল ফিজিশিয়ানস বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পারিবারিক চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন, বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প, র্যালি ও আলোচনা সভা।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের উন্নত দেশগুলোতে পারিবারিক চিকিৎসক পদ্ধতি বা জিপি সিস্টেম প্রচলিত আছে। পারিবারিক চিকিৎসক এবং জেনারেল ফিজিশিয়ানস একই। যুক্তরাষ্ট্রে পারিবারিক চিকিৎসক এবং যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের দেশগুলোতে জেনারেল ফিজিশিয়ানস হিসেবে পরিচিত। এই সিস্টেমে প্রতিটি এলাকার জন্য একটি নিদিষ্ট জেনারেল ফিজিশিয়ানস বা জিপি সেন্টার থাকে। ওই এলাকার সকল মানুষ যে কোনো অসুস্থতায় ওই সেন্টারে যান। এই সেন্টারেই সকল ধরনের চিকিৎসা হয়।
উক্ত সেন্টারের জেনারেল ফিজিশিয়ানস বা পারিবারিক চিকিৎসক যদি রোগীকে রেফার করেন তবেই শুধুমাত্র রোগী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখাতে পারেন বা হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেন। হাসপাতালে বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিয়ে উক্ত রোগী আবারও তার জিপি সেন্টারে ফিরে আসেন এবং সেখানে বাকি চিকিৎসা ও ফলোআপ সম্পন্ন হয়। এটি খুবই সুন্দর একটি সিস্টেম, কারণ মানুষের যত প্রকার রোগ আছে তার শতকরা ৮০-৮৫ ভাগ একজন জিপি বা পারিবারিক চিকিৎসকের চিকিৎসায় সুস্থ হওয়া সম্ভব।
জিপি সিস্টেমে অধিকাংশ রোগীর চিকিৎসা জিপি সেন্টারে হওয়ায় হাসপাতাল এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে রোগীর ভিড় তেমন থাকে না। এসব হাসপাতাল পরিচালনায় ব্যয় অনেক কমে যায় এবং জটিল রোগীদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত সময় পান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। পারিবারিক চিকিৎসক একজন ব্যাক্তির ব্যক্তিগত সামগ্রিক এবং সকল সময় (যে কোনো দুর্যোগ, মহামারি) চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে থাকেন।
মূলত পারিবারিক চিকিৎসকদের উপর একটি দেশের জনগণের সুস্বাস্থ্য ও সুচিকিৎসা নির্ভর করে। পারিবারিক চিকিৎসকদের এই কর্মকান্ডের স্বীকৃতি প্রদানের জন্যই ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন অব ফ্যামিলি ডক্টরস ২০১০ সাল থেকে ১৯ মে বিশ্ব পারিবারিক চিকিৎসক হিসেবে পালন করা শুরু করে।
আমাদের দেশে সরকারিভাবে পারিবারিক চিকিৎসক বা জিপি সিস্টেম নেই। তাই যে কোনো অসুস্থতায় প্রথমেই ওষুধের দোকানদার বা নন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক বা সরাসরি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হোন রোগীরা। এতে করে রোগীদের যেমন অপচিকিৎসা বা ভুল চিকিৎসা হবার সম্ভাবনা বেশি হয় অপরদিকে সরাসরি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিকিৎসা নেয়ায় ছোট ছোট অসুস্থতার জন্যও অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় হয়।