বামপন্থীদের জায়গা বুর্জোয়ারা নয়, দখল করেছে মৌলবাদীরা

প্রথম আলো হায়দার আকবর রনো প্রকাশিত: ১১ মে ২০২৪, ১৫:৫০

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম নেতা হায়দার আকবর খান রনোর জীবনাবসান হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির উপদেষ্টা ছিলেন। শতাব্দী পেরিয়ে, ফরাসি বিপ্লব থেকে অক্টোবর বিপ্লব, বাংলা সাহিত্যে প্রগতির ধারা, পলাশী থেকে মুক্তিযুদ্ধ রনোর উল্লেখযোগ্য বই। ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর হায়দার আকবর খান রনোর এই সাক্ষাৎকারটি প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছিল। বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিসরে বামপন্থী রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নিয়ে তিনি কথা বলেছিলেন। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সাক্ষাৎকারটি আবার প্রকাশিত হলো। 


বাংলাদেশে বামপন্থী তথা কমিউনিস্টদের বেহাল অবস্থা কেন?


হায়দার আকবর খান রনো: এটা একই সঙ্গে যেমন সাধারণ প্রশ্ন, আবার জটিল প্রশ্নও। এর উত্তর খুঁজতে হলে ইতিহাসে ফিরে যেতে হবে। প্রথমত, যখন ভারত ভাগ হয়, তখন সারা ভারতে যে কমিউনিস্ট পার্টি ছিল, নেতাপর্যায়ের একজনও এখানে আসেননি। কমরেড মোজাফফর আহমদের বাড়ি সন্দ্বীপ, তিনিও আসেননি। বাংলার প্রাদেশিক কমিটির যাঁরা নেতা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে কে এসেছেন? একমাত্র খোকা রায়। মণি সিংহও তখন কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন না। খুব সম্ভবত নেপাল নাগ ছিলেন। নেতৃত্বের একটা শূন্যতা ছিল। জেলাপর্যায়ের নেতাদের এনে শীর্ষ অবস্থানে বসানো হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, ১৯৫০ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা আরেকটি সমস্যা তৈরি করল। ওই দাঙ্গার পর ১৫ হাজার নেতা–কর্মী দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। পাকিস্তান আমলে কমিউনিস্টদের ওপর মুসলিম লীগ সরকারের বর্বরতা ও নিপীড়নের বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে। ইলা মিত্রের ঘটনা সবাই জানেন। আমি আরেকজনের কথা বলব। যাঁর নাম ইতিহাসে সেভাবে আসেনি। তাঁর নাম অপর্ণা পাল। নানকার বিদ্রোহের নেতা। তাঁর ওপরও অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল।


এর জন্য কি বি টি রণদীভের ‘ইয়া আজাদি ঝুটা হ্যায়’ নীতি অনেকাংশে দায়ী ছিল না?


হায়দার আকবর খান রনো: কিছুটা। কিন্তু পুরোপুরি নয়। প্রধানত মুসলিম লীগের চরিত্রের মধ্যেই এটা ছিল যে তারা বামপন্থীদের সহ্য করতে পারত না। আজকেও যারা মৌলবাদী, তাদের মূল জায়গাটা কিন্তু একই। আমার মতে, এখানকার মৌলবাদ চারটি স্তম্ভের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে—ভারতবিরোধিতা, হিন্দুবিরোধিতা, বাঙালি সংস্কৃতির বিরোধিতা এবং এখন নতুন করে যোগ হয়েছে নারীবিদ্বেষ।


বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনে আপনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন। কমিউনিস্ট পার্টিতে কীভাবে গেলেন?


হায়দার আকবর খান রনো: ১৯৬১ সালে আমি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হই। তখন প্রথম বর্ষে পড়ি। কমিউনিস্ট পার্টি তখন গোপন পার্টি। সে সময়ে পার্টি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করল। যিনি যোগাযোগ করিয়ে দিলেন তাঁর নাম মকবুলার রহমান। তিনি আমার হাতে শিখা পত্রিকা তুলে দিলেন। শিখা পত্রিকা তখন সাইক্লোস্টাইলে বের হতো। পার্টির নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ১৯৬২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে মার্শাল ল–বিরোধী স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে যাব। এর মধ্যে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গ্রেপ্তার হয়ে গেলেন।


তখন ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সংগঠন কীভাবে একত্র হলো?


হায়দার আকবর খান রনো: ছাত্র ইউনিয়ন তো আগে থেকেই প্রস্তুত হয়ে আছে। সোহরাওয়ার্দী গ্রেপ্তার হওয়ার পর ছাত্রলীগের মধ্যে সাংঘাতিক উত্তেজনা তৈরি হলো। তখন আমরা একত্রে বসলাম। ঘটনাক্রমে এনএসএফ ও ছাত্র শক্তিকেও ডাকা হলো। তারা আইয়ুব খানের লোক ছিল। রাতের বেলা মধুর ক্যানটিনে বসলাম। ওই সভায় ফরহাদ ভাইয়ের (মোহাম্মদ ফরহাদ) ভূমিকা ছিল উজ্জ্বল ও বুদ্ধিদীপ্ত। মনি ভাইও (শেখ ফজলুল হক মনি) ওই সভায় ছিলেন। ফরহাদ ভাই প্রস্তাব দিলেন পরদিন ধর্মঘট করা হোক। এনএসএফ ও ছাত্র শক্তি তো কিছুতেই রাজি না। তর্কবিতর্ক হতে হতে রাত ১২টা বেজে গেছে। এনএসএফ ও ছাত্র শক্তি চলে গেলে ফরহাদ ভাই বললেন, কালকে ধর্মঘট হবেই। রাত ১২টা বেজে গেছে। ওরা এখন আর আইবিকে (গোয়েন্দা পুলিশ) খবর দিতে পারবে না। সকালে সফল ও সর্বাত্মক ধর্মঘট হলো।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও