মুজিবনগর সরকার: ঐক্য বনাম অনৈক্য

www.ajkerpatrika.com বিভুরঞ্জন সরকার প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৫

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাঙালি জাতির রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। ওই দিন তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ করে। এর আগে ১০ এপ্রিল গঠন করা হয়েছিল স্বাধীন বাংলা সরকারের মন্ত্রিসভা।


তখন জাতীয় পরিষদের ১৬৭ সদস্যের মধ্যে ১৫০ জন এবং ২৯০ জন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যের মধ্যে দুই শতাধিকের সমর্থন ওই সরকারের প্রতি ছিল বলে জানা যায়। মন্ত্রিসভার শপথ গ্রহণের পর বাংলাদেশের এই প্রথম সরকারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ স্বতঃস্ফূর্ত থেকে সংগঠিত পর্যায়ে প্রবেশ করে। বৈদ্যনাথতলার নামকরণ করা হয় মুজিবনগর।


এটা সবার জানা যে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালি জাতির ওপর আক্রমণ শুরু করে এবং বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।


বঙ্গবন্ধু তাঁর সহকর্মীদের নিরাপদ স্থানে গিয়ে যুদ্ধ পরিচালনার নির্দেশনাও গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই দিয়েছিলেন। তাঁর পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী নেতারা ভিন্ন ভিন্ন পথে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যান। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম সীমান্ত অতিক্রমের পর বিএসএফের তৎকালীন প্রধান রুস্তমজীর সহযোগিতায় দিল্লিতে যোগাযোগ করলে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দপ্তর থেকে তাজউদ্দীন আহমদকে দিল্লি যাওয়ার কথা জানানো হয়। ব্যারিস্টার আমীর-উলকে সঙ্গে নিয়ে তাজউদ্দীন দিল্লি গিয়ে নানা রকম তৎপরতার পর ৪ এপ্রিল তাজউদ্দীন একা দেখা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে। এই সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়েই মূলত রচিত হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সহযোগিতার আনুষ্ঠানিক ভিত্তি।


ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ সরাসরি বৈঠকে মিলিত হওয়ার বিষয়টি ওই সময় ছিল একটি মোড় ঘোরানো ঘটনা। এর আগের দিনই ইন্দিরা গান্ধীর পরামর্শকেরা তাজউদ্দীনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার গঠিত হয়েছে কি না। তাই ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আলোচনার প্রথমেই উপস্থিত বুদ্ধি প্রয়োগ করে তাজউদ্দীন বলেন, বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই একটি সরকার গঠন করা হয়েছে। নিজেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপতিসহ মন্ত্রিসভার সদস্যদেরও নাম জানান তিনি। ইন্দিরা গান্ধী সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে পরবর্তী বৈঠকে তা সুনির্দিষ্ট করার কথা বলেন।


তাজউদ্দীনের এই উপস্থিত বুদ্ধি বিলম্ব না ঘটিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করতে ও দেশ-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি ছড়ানো বন্ধ করার ক্ষেত্রে নিষ্পত্তিমূলক ভূমিকা রাখে। নেতৃত্ব গ্রহণের বিষয়টি যদি ওইভাবে তাৎক্ষণিক সমাধান না হতো, তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিরা বসে তা সমাধান করতে পারতেন না বলেই পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ থেকে অনুমান করা যায়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যেও ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তা যে প্রভাবক ভূমিকা পালন করে তা অস্বীকার করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর মতো ক্যারিশমাটিক নেতা না হলেও তাজউদ্দীনের বুদ্ধির দীপ্তি যে ব্যতিক্রমী ছিল, মুজিবনগর সরকার গঠন ও পরবর্তী ঘটনাবলি তার প্রমাণ দেয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও