মা-বাবার দাম্পত্য কলহ, মায়ের বিষণ্নতা ও সন্তানের স্বাস্থ্যঝুঁকি
গর্ভকালে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মা নিজের শরীরকে বদলে যেতে দেখেন। কখনো গর্ভকালীন ও গর্ভপরবর্তী সময়ে মা বিষণ্নতা শিকার হন। যেটা প্রিপার্টাম ও পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন বলে পরিচিত। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো না থাকলে, গর্ভবতী মা বিষণ্নতা বা অ্যাংজাইটিতে ভুগলে সন্তানও সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকবে না।
গর্ভকালীন বিষণ্নতা থাকলে সন্তানের কী সমস্যা হতে পারে?
গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় মায়ের বিষণ্নতা এবং উদ্বেগজনিত রোগ থাকলে প্রিম্যাচিওর বেবি অথবা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সন্তান ভূমিষ্ঠ হতে পারে। শিশুর জন্মকালীন ওজন কম হতে পারে, যার জন্য তাকে আইসিইউতে যেতে পারে। এ কারণে শিশুটি পরবর্তীকালে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। শুধু তা-ই নয়, সন্তান প্রসবের পর মায়ের বিষণ্নতা রোগ হলে মা ও শিশু উভয়ের জন্যই সেটা ক্ষতিকারক হয়ে উঠবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে মাতৃত্বজনিত বিষণ্নতা রোগের সঙ্গে মনোসামাজিক বিষয় সম্পৃক্ত। যেমন–অস্থিতিশীল দাম্পত্য সম্পর্ক, দাম্পত্য কলহ, মেয়েসন্তান জন্ম, পারিবারিক সহিংসতা , অর্থনৈতিক সংকট ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের বুঝতে হবে যে শুধু নবাগত সন্তানটিই নয়, মায়েরও শরীর ও মনের বিশেষ পরিচর্যা প্রয়োজন।
দাম্পত্য কলহ ও সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য
নিউরোসায়েন্স বলে, যে শিশু মা-বাবার সুস্থ সম্পর্ক দেখে বড় হয়। সে স্ট্রেসে পড়লেও নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে শেখে। মা-বাবার সুসম্পর্ক শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য, দ্রুত কথা বলা এবং আবেগীয় বিকাশকে ত্বরান্বিত করে। এই শিশু বড় হলে ইতিবাচক ও আত্মবিশ্বাসী হবে।
এখন অধিকাংশ নারীই কর্মজীবী। তবে কাজের ক্ষেত্রে কিছু ত্যাগ তো স্বীকার করতেই হয় সন্তান হওয়ার পরে। সন্তানের মা-বাবার মধ্য়ে যদি বন্ধুত্বের জায়গাটা না থাকে, তাহলে একজন পেশাজীবী মা অনেক রকম সাহায্য স্বামীর কাছ থেকে হয়ত পাবেন না সন্তানের হবার পরে। তাই সন্তান নেওয়ার আগে স্বামী-স্ত্রীর উচিত খোলাখুলি আলোচনা করা। নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্য়গুলোকে ভাগাভাগি করে নেওয়ার বিষয়ে কথা বলা।